‘ভূমি কর্মকর্তাদের ওপরই নির্ভর করবে, জনগণ কতটা সন্তুষ্ট থাকছেন’
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:০০
‘ভূমি কর্মকর্তাদের ওপরই নির্ভর করবে, জনগণ কতটা সন্তুষ্ট থাকছেন’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেছেন, বাংলাদেশের সীমানাজুড়ে যে ভূমি ও সমুদ্র রয়েছে সেগুলো ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায়। প্রতিটি নাগরিক ও প্রাণী এর সঙ্গে জড়িত। কারণ সবাই আমরা ভূমিতে থাকি। তাই এ মন্ত্রণালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ মন্ত্রণায়লেয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নাগরিক জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে পারে। ভূমির মালিক এক সময় জমিদাররা ছিলেন। এখন জমিদারের পরিবর্তে ভূমির মালিক সরকার। মূলত এখন জনগণই মালিক। কারণ এখন স্থায়ী সত্ত্ব দেওয়া হয়েছে। আগে উৎখাত করা যেতো, এখন উৎখাত করা যায় না। প্রয়োজনে কিনে নেওয়া যায়, এর জন্য দাম দিতে হয়।


বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তিনগুণ দামও দিচ্ছেন। সত্ত্ব চলে গেছে জনগণের হাতে। দেশের জনগণই ভূমির মালিক। অতএব এর ব্যবস্থাপনা যদি সুষ্ঠু না হয়, তাহলে পুরো জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে আপনাদের (ভূমি কর্মকর্তা) দায়িত্ব পালনের ওপরই নির্ভর করবে, জনগণ কতটা সন্তুষ্ট থাকছেন।


২৩ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার সকালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ দায়িত্ব গ্রহণ করায় তাকে সংবর্ধনা দেয় বাংলাদেশ ভূমি অফিসার্স কল্যাণ সমিতি।


রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশে আয়োজিত সে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ভূমিমন্ত্রী।


অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, ভূমি কর্মকর্তাদের নিয়ে অতীতে যে কথাগুলো রয়েছে, সে কথাগুলো থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। আমরা স্বচ্ছতায় ফিরে যেতে চাই। অনেক পথ আমরা পার হয়েছি। অনেক পরিবর্তনও হয়েছে। নিজেদের ত্রুটির পাশাপাশি এখানে তৃতীয় পক্ষ (দালাল) রয়েছে। যারা মধ্যস্থতা করে অনেক কিছু করে।


নারায়ন চন্দ্র চন্দ আরও বলেন, আমি ৬ বার চেয়ারম্যান ছিলাম। ভূমি বিষয়ে কি কারচুপি তা পুঙ্খানুপুঙ্খ জানি। আমি জমি বন্দোবস্ত দিয়েছি গরিবদের। সেই গরিবদের ভুলিয়ে ১৫ বছর পর পুরো জমি একটি লোক নিয়ে গেছে। এখানে সহযোগিতা করেছে নায়েব। নায়েব সহযোগিতা না করলে এটা করতে পারতো না। আমাদের এই জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ভূমি ব্যবস্থাপনা দুর্নীতিমুক্ত হোক।


তিনি বলেন, তহশিল অফিসে বিল্ডিং করা হচ্ছে। যেগুলো হয়নি, সেগুলোও দ্রুত ছাড়ার ব্যবস্থা করবো। কিন্তু আপনাদের খাস জমি রক্ষা ও ব্যবস্থাপনা করতে হবে। খাস জমি যদি আগে থেকে রক্ষা করতে পারি, তাহলে ১০তলা বিল্ডিং ভাঙতে হবে না। আপনারা এগিয়ে আসুন।


তিনি আরও বলেন, তৃতীয় পক্ষ (দালাল) যেন ভূমি অফিসে না ঢুকে। আপনারা সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করবেন এবং বলবেন তারা যেন দালালের কাছে না যায়।


ই-নাম জারির বিষয়ে তিনি বলেন, এখানেও তৃতীয় পক্ষ হস্তক্ষেপ করছে। এখানেও দুর্নীতি চলছে। এখানে সমস্যা হয়েছে, আমাদের প্রতিটি নাগরিক কম্পিউটার অপারেট করতে পারে না। যার কারণে তারা তৃতীয় পক্ষের কাছে যাচ্ছে। নাগরিকরা যতদিন পর্যন্ত এটা অপারেট করতে পারবে না, ততদিন পর্যন্ত সঠিক সফলতা আসবে না। কিন্তু ১৬-১৭ কোটি নাগরিককে তো ট্রেনিং দেওয়া সম্ভব না। আমরা এজন্য মাঠ পর্যায়ে যাবো। গিয়ে সেখানে প্রচার করতে চাই, যিনি নিজে পারবেন না, তিনি যেন তহশিল অফিস বা ইউনিয়ন পরিষদ বা হাই স্কুলের কম্পিউটার অপারেটরদের সাহায্য নেন। তাহলে স্বচ্ছতা ফিরে আসবে।


অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খ ও গ তফসিলের মাধ্যমে ভূমির অনেক ঝামেলা নিরসন করেছেন। আমি ভূমিমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাতে চাই, ক তফসিলের ব্যাপারেও যদি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেন, তাহলে সমগ্র জাতি বেঁচে যাবে।


বাংলাদেশ ভূমি অফিসার্স কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. মোতাহার হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মো. আসাদুজ্জামানের স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সমিতির কার্যকরী সভাপতি আবুল হোসেন, প্রধান উপদেষ্টা মো. ফারুক খান, সহ-সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন, মো. নাসির উদ্দিন, মো. মৌদুদুর রহমান কল্লোল ও অর্থ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান।


অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে বাংলাদেশ ভূমি অফিসার্স কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com