জাতীয়
জ্যৈষ্ঠের খরতাপে পুড়ছে দেশ, তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩, ১৪:৫৮
জ্যৈষ্ঠের খরতাপে পুড়ছে দেশ, তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জ্যৈষ্ঠের খরতাপে পুড়ছে দেশ। রাজধানীতে তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থায় সবচেয়ে কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া মানুষ।


এদিকে, আবহাওয়া অফিস বলছে, সারাদেশে মৃদু থেকে মাঝারি তাপদাহ চলবে আরও কয়েক দিন। আর বিদ্যুত বিভাগ বলছে, গরমের তীব্রতা না কমলে লোডশেডিং পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।


সারাদেশে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলেও ভ্যাপসা গরম কিছুতে কমছে না। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং। ফলে নাজুক হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। দিনে যেমন রোদের প্রতাপ, রাতে তেমন গরম হাওয়া। বাইরে প্রচণ্ড গরম, আর ঘরে লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষ হাঁপিয়ে উঠছে।


সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষ। গরম উপেক্ষা করেই তাদের বাইরে বের হতে হচ্ছে। জীবিকার তাগিদে উপায়ন্তু না দেখে তীব্র রোদেই কাজে বের হতে হয় খেটে খাওয়া মানুষদের। দিন মজুর থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে অন্য সবার চেয়ে বেশি।


আর কর্মজীবী মানুষেরও যেন কষ্টের শেষ নেই। একদিকে তীব্র গরম, অপরদিকে গণপরিবহন সমস্যা। গরমে যানজট আর গণপরিবহনে ধাক্কাধাক্কি করে রীতিমতো যুদ্ধ করে অফিস যেতে হচ্ছে।


রাজধানী ঢাকায় এখন প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা করে লোডশেডিং চলছে। ঢাকার বাইরে পরিস্থিতি আরো খারাপ। গ্রামাঞ্চলে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে বলে গ্রাহকরা জানিয়েছে। গরম আর লোডশেডিং মিলিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের।মধ্যরাতেও দীর্ঘ সময় লোডশেডিং হওয়ায় মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।


বিদ্যুত্সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, গরমের তীব্রতা না কমলে লোডশেডিং পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।


এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারাদেশে মৃদু থেকে মাঝারি তাপদাহ চলবে আরও কয়েক দিন। রাজধানীতে আপাতত কয়েক দিন বৃষ্টির সম্ভাবনাও নেই বলেও জানায় আবহাওয়া অফিস। এ ছাড়া রাজশাহী, দিনাজপুর, নীলফামারী, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা ও বরিশাল বিভাগসহ রংপুর রাজশাহী, খুলনা বিভাগের অবশিষ্ঠাংশ এবং মায়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলা সমূহের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।


অপরদিকে সাগরে আরও দুইটি সাইক্লোন বিপর্যয় ও তেজ সৃষ্টি হতে চলছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশ্লেষকরা। ইউরোপীয় আবহাওয়ার পূর্বাভাসের বরাত দিয়ে আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তাফা কামাল পলাশ জানান, ৬ থেকে ৮ জুনের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি এবং ৭ থেকে ৯ জুনের মধ্যে আরব সাগরে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এর নাম যথাক্রমে বিপর্যয় ও তেজ।


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি ১১ থেকে ১২ জুনের মধ্যে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ও বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের উপকূল দিয়ে স্থলভাগে আঘাতের আশঙ্কা রয়েছে।


আমেরিকান গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেমের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, বঙ্গোপসাগরে ১১ থেকে ১২ জুন ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ সৃষ্টি হয়ে ১৩ থেকে ১৪ জুনের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে।


গত দুই দিনে স্বাভাবিকের তুলনায় ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি তাপদাহ রেকর্ড হয়েছে। ১১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে জুন মাসে ।


শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে, ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ডিমলায়, ২৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সিলেটে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


বিবার্তা/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com