শিরোনাম
দেশের গণমাধ্যম সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে: হানিফ
প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:৫৭
দেশের গণমাধ্যম সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে: হানিফ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ গণমাধ্যমের সবচেয়ে বেশি স্বাধীন এবং স্বাধীনতা ভোগ করছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, দেশের টিভি চ্যানেলগুলোতে টকশো, অনুষ্ঠানে আলোচকরা কোনো ধরনের সেন্সর ছাড়া সরকারের কর্মকাণ্ডের যথেচ্ছা সমালোচনা করেন। এ ধরনের স্বাধীন মতপ্রকাশে সরকার কখনো হস্তক্ষেপ করে না, কোনো ধরনের বাধার সৃষ্টি করে না।


বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে “পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গণমাধ্যম: ভূমিকা ও সংকট” শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে বিবার্তা২৪ডটনেট ও জাগরণ (আইপি) টিভি।


মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশে এখন যেকোনো নিউজ ছাপানো যায়। ভুল কিছু ছাপালে কেবল দুঃখপ্রকাশ করলে রেহাই পাওয়া যায়। বিদেশে ভুল সংবাদ করলে ডিক্লারেশন বাতিল হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এর নজির নেই। ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা হলো। রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় হাওয়া ভবনে বসে হামলার পরিকল্পনা হয়েছে। পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব পর্যন্ত করতে দেয়া হয়নি। বেগম খালেদা জিয়া সংসদে এ নিয়ে নিষ্ঠুর রসিকতাও করেছেন। কোনো সাংবাদিক বেগম খালেদা জিয়াকে প্রশ্ন করেনি। কোনো প্রশ্ন করলে হয়তো সেই সাংবাদিককে জেলে থাকতে হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেকে অযৌক্তিক প্রশ্ন করেন। দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে বলেই এটা সম্ভব হচ্ছে। এরপরও দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই বলা ঠিক হবে না।


তিনি বলেন, গণমাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের লক্ষ্য থাকে ব্যবসা করা। গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা তাদের নিজেদের কর্মস্থলে চাকরির অনিশ্চয়তায় ভোগেন। গণমাধ্যমের আয়ের উৎস বিজ্ঞাপন। দেশের বিজ্ঞাপনের বাজারের সাথে মিলিয়ে গণমাধ্যমের সংখ্যা থাকলে সংকট হতো না। লাইসেন্স দেয়া এবং নেয়ার ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনের বাজার হিসেব করে দেয়া হলে বেতন, কর্মচারী সংকট তৈরি হতো না। গণমাধ্যম নীতিমালা হওয়া জরুরি। ছোট দেশে ৩০টির বেশি টেলিভিশন, কয়েকশ দৈনিক পত্রিকা আছে। এসবের ধারণক্ষমতা আছে কি-না ভাববার বিষয়। গণমাধ্যমের করপোরেট কালচার ডেভেলপ করা দরকার।


আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম যেকোনো রাষ্ট্রের তুলনায় অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বাধা হিসেবে ডিজিটাল আইনের কথা বলা হয়। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। আইনের দোষ কোথায়? প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের নামে আইসিটি আইনে মামলা হয়েছিলো। উনি যথেষ্ট অভিজ্ঞ সাংবাদিক কিন্তু উনার নামে কেন মামলা হয়েছিলো? ছাত্রদের আন্দোলন নিয়ে বিদেশি মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়েছেন। তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব বলেছেন। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করলেন, ছাত্রসমাজের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করলেন। দেশে অরাজকতা তৈরি করলেন। এখানে মামলা হওয়া কি আইনের ব্যত্যয় হয়েছে?


তিনি বলেন, ২০০৭ সালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা আত্মসাতের কারণে বেগম খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মামলা হলো। ৬২ বার তারিখ পরিবর্তন করে মামলা চলেছে। বিএনপির বড় বড় আইনজীবীরা তার জন্য লড়েছেন। সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে দণ্ড দিয়েছেন। নৈতিক স্খলনের কারণে তার শাস্তি হয়েছে। এখানেও আইনের দোষ। বিএনপি নেতারা বলেন এ মামলা অযৌক্তিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী ক্ষমতাবলে তাকে বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছেন। দেশের মধ্যে যে কোনো জায়গায় স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারেন।


আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপি নেতারা বেগম জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে সকাল-বিকাল অযৌক্তিক দাবি তুলে যাচ্ছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিদেশে চিকিৎসা দেশের আইনের মধ্যে পড়ে না। দণ্ড স্থগিত অবস্থায় কেউ দেশের বাইরে যেতে পারে না। একমাত্র দণ্ড মওকুফ হলে তিনি বিদেশে যেতে পারেন। দোষ শিকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ আছে। রাষ্ট্রের অভিভাবক দয়ালু মানুষ। তিনি চাইলে ক্ষমা করে দিতে পারেন। সাংবাদিকদের অনেকেও অন্যায় এ দাবির প্রতি সমর্থন দিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন।


তিনি আরো বলেন, দেশের উন্নয়ন ,অগ্রগতি ধরে রাখতে হলে একজনই আছেন। এই মূহুর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প আর কেউ খুঁজে বের করতে পারবেন না। সমস্যাগুলো গঠনমূলকভাবে তুলে ধরুন। সরকারকে সহায়তা করুন। তবেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা একটা সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে পারবো।


অনুষ্ঠানে কী-নোট স্পীকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জিটিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। জাগরণ আইপি টিভি’র প্রধান সম্পাদক এফএম শাহীনের সঞ্চালনা ও বিবার্তা২৪ডটনেট সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি’র সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান, ডিবিসি নিউজ সম্পাদক প্রণব সাহা, ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, নিউজ টোয়েন্টিফোর টিভির যুগ্ম বার্তা সম্পাদক এবং ডব্লিউজেএনবির সমন্বয়ক আঙ্গুর নাহার মন্টি প্রমুখ।


বিবার্তা/সোহেল/রাসেল/গমেজ/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com