শিরোনাম
বনভূমিতে একাডেমি নির্মাণের বিরোধিতায় সংসদীয় কমিটির
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২:১৬
বনভূমিতে একাডেমি নির্মাণের বিরোধিতায় সংসদীয় কমিটির
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন বনবিভাগের জায়গাতে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের বিরোধিতা করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিরোধিতা করা হয়।


সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন- কমিটির সদস্য পরিবেশনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, তানভীর শাকিল জয়, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন ও মো. শাহীন চাকলাদার।


বন অধিদফতর বলেছে, বনভূমির মধ্যে প্রস্তাবিত প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পরিবেশ ও প্রতিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, প্রতিবেশগতভাবে সঙ্কটাপন্ন এ বনভূমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা নিষেধ।


বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কক্সবাজারে ওই বনাঞ্চলের ৭০০ একর জায়গায় জনপ্রশাসন একাডেমি নির্মাণের বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে পর্যালোচনা করার সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া ২০২১-২০২২ অর্থবছরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার সুপারিশ করেছে কমিটি।


সংসদীয় কমিটির সূত্র জানায়, আজকের বৈঠকে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় জানায়, বন্দোবস্ত দেয়া জায়গা বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন বনায়নকৃত পাহাড়ি এলাকা। পাহাড়ের উচ্চতা স্থানভেদে ২০ থেকে ২০০ ফুট। এখানে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন প্রকল্পের আওতায় সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে ১০০ একর সৃজিত বাগান রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো গর্জন, চাপালিশ, তেলসুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। ওই এলাকা হাতি, বানর, বন্য শূকর, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ও পাখির আবাসস্থল। ওই এলাকায় প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হলে পরিবেশ ও প্রতিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।


বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জায়গাটি বন্দোবস্ত দেয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্র না দিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে একমত। এখন যেখানে বেদখলে থাকা বনভূমি উদ্ধার করা হচ্ছে, সেখানে সরকারের আরেকটি সংস্থা যদি বনের জমি নিয়ে নেয়, সেটা ঠিক না।


তিনি বলেন, হয়তো ভূমির আকার ও প্রকৃতি বর্ণনা না করে শুধু জমির দাগ ও খতিয়ান দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে প্রকল্পটির অনুমোদন নেয়া হয়েছে। জনপ্রশাসনের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিকে আমরা সমর্থন করি। তবে ওই জায়গায় এটা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, আমাদের বিধি-নিয়ম, এমনকি এটা সংবিধান পরিপন্থী। এটা অন্য জায়গায় হোক।


সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এই জায়গা ১৯৩৫ সালে রক্ষিত বনভূমি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়, ১৯৮০ সালে এটিকে জাতীয় উদ্যান এবং ১৯৯৯ সালে ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া (প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা) ঘোষণা করা হয়। এখানে কোনো স্থাপনা না করার বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। এসব কারণে এখানে প্রশিক্ষণ একাডেমি করার সুযোগ নেই বলে মনে করে সংসদীয় কমিটি।


বিবার্তা/আবদাল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com