শিরোনাম
সারাদেশে ১৪ দিন শাটডাউনের সুপারিশ
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২১, ১৯:৩১
সারাদেশে ১৪ দিন শাটডাউনের সুপারিশ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

করোনার ডেলটা প্রজাতির ভাইরাসের সামাজিক সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে সর্বাত্মকভাবে ১৪ দিনের কঠোর শাটডাউনের সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।


বুধবার (২৩ জুন) রাত সাড়ে ৯টায় জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩৮তম সভায় আলোচনা শেষে এ সুপারিশ করা হয়।


বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।


সভায় বলা হয়, কোভিড-১৯ রোগের বিশেষ ডেলটা প্রজাতির সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে ও দেশে ইতোমধ্যেই তার প্রকোপ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে সারা দেশেই উচ্চ সংক্রমণ ও পঞ্চাশোর্ধ জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।


সভায় আরো বলা হয়, রোগ প্রতিরোধের জন্য খণ্ড খণ্ড ভাবে গৃহীত কর্মসূচির উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। অন্যান্য দেশ, বিশেষত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায় কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এ প্রজাতির বিস্তৃতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মতামত অনুযায়ী যে সব স্থানে পূর্ণ ‘শাটডাউন’করা হয়েছে সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ও জনগণের জীবনের ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সারা দেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ ‘শাটডাউন’দেয়ার সুপারিশ করছে।


সুপারিশে বলা হয়, শাটডাউন চলা অবস্থায় জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেনো, সংক্রমণ এভাবে বাড়তে থাকলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।


সভায় ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে এ রোগ থেকে পূর্ণ মুক্তির জন্য দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশের ঊর্ধ্বে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা প্রয়োজন বলেও কমিটি মতামত দিয়েছে। এ লক্ষ্যে বিদেশ থেকে টিকা সংগ্রহ, লাইসেন্সের মাধ্যমে দেশে টিকা উৎপাদন করা ও নিজস্ব টিকা তৈরির জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গবেষণা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার প্রতি কমিটি পূর্ণ সমর্থন জানায়।


কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ বলেন, আমাদের দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে। বিশেষ করে পঞ্চাশের অধিক জেলায় ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ অত্যন্ত বেড়ে গেছে। আর এ সংক্রমণ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।


তিনি বলেন, সংক্রমণের পাশাপাশি হাসপাতালে আক্রান্তদের ভর্তি হওয়া ও মৃত্যুর হারও বেড়ে গেছে।


অধ্যাপক সহিদুল্লাহ বলেন, আমরা যদি ভারতের সেই বিপর্যস্ত অবস্থার কথা চিন্তা করি, সেখান থেকে তারা কঠোর লকডাউনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। বিশেষ করে দিল্লি বা মুম্বাইয়ের কথা বলি, যেখানে প্রতিদিন ২৮ হাজারের উপরে মানুষ সংক্রামিত হয়েছে। হাজার হাজার মৃত্যু ঘটেছে। এরপর তারা যখন কঠোর লকডাউনের দিকে গেল বিশেষ করে দিল্লিতে, এখন সেখানে সংক্রমণের হার কোনো কোনো দিন একশর নিচে। কোনো কোনো দিন মৃত্যুও নেই।


এদিকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সারাদেশে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ চলছে। চলতি বছর করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢিলেঢালা লকডাউন হলেও সংক্রমণ আরো বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন ঘোষণা দেয় সরকার। পরে সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। তবে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ এবং ট্রেন চলাচল রোজার ঈদ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। পরে ২৪ মে থেকে গণপরিবহন চলার অনুমতি দেয়া হয়। একই সঙ্গে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো আসন সংখ্যার অর্ধেক বসিয়ে খোলা রাখার অনুমতি দেয়া হয়।


তবে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সারাদেশে বিধিনিষেধ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৬ জুন বিধিনিষেধ এক মাস বাড়িয়েছে সরকার, যা ১৫ জুলাই পর্যন্ত চলবে।


বিবার্তা/বিজ্ঞপ্তি/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com