দেশের প্রবীণ চিত্রশিল্পী, নাট্যব্যক্তিত্ব মুস্তাফা মনোয়ার গুরুতর অসুস্থ। গত বুধবার বিকেলে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ৯০ বছরের এ গুণী শিল্পীকে শনিবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানান মুস্তাফা মনোয়ারের ব্যক্তিগত সহকারী মো. রুবেল মিয়া।
তিনি বলেন, ‘স্যারের অবস্থা খুবই খারাপ। আপনারা সবাই দোয়া করেন তার জন্য। বাংলাদেশের পাপেটম্যান হিসেবে পরিচিত শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে নিউমোনিয়া ও প্রোস্টেট ক্যান্সারে ভুগছেন।’
রুবেল মিয়া বলেন, ‘কিছুদিন আগে চিকিৎসার জন্য মুস্তাফা মনোয়ার ভারতের দিল্লি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে প্রোস্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসা করানোর পর দেশে ফিরে সুস্থ ছিলেন। গত বুধবার বিকেলে তিনি বাসায় মাথা ঘুরে পড়ে গেলে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’
তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী মেরী মনোয়ার। দেশবাসীর কাছে দোয়াও চেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, সম্প্রতি শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে গত ৪ সেপ্টেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন ৮৯ বছর বয়সী মুস্তাফা মনোয়ার। শনিবার বিকেলে আরও অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
সব্যসাচী এই শিল্পী একাধারে চারুশিল্পী, নাট্যনির্দেশক ও শিল্প গবেষক। বাংলাদেশের পাপেট শিল্পকে নতুন মাত্রা দেওয়া মুস্তাফা মনোয়ার কবি গোলাম মোস্তফার ছেলে।
শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০০৪ সালে একুশে পদক পাওয়া মুস্তফা মনোয়ারের ৮৯তম জন্মদিন ছিল গত ১ সেপ্টেম্বর।
গুণী এ চিত্রশিল্পীর জন্ম ১৯৩৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর যশোরের মাগুরা মহকুমার (বর্তমান জেলা) শ্রীপুরে। তিনি নাকোল গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবা কবি গোলাম মোস্তফার পৈত্রিক নিবাস ছিল ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে। পাঁচ বছর বয়সে মা জমিলা খাতুন মারা যান। ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি।
নারায়ণগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে বিজ্ঞানে ভর্তি হন। সেখানে তিনি পড়াশোনা না করে কলকাতা চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে কলকাতা চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয় থেকে ফাইন আর্টসে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন।
১৯৬৫ সালে মেরী মনোয়ারের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক ছেলে সাদাত মনোয়ার ও এক মেয়ে নন্দিনী মনোয়ার।
কর্মজীবন শুরু করেন পূর্ব পাকিস্তান চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে। পরে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-মহাপরিচালক, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ টেলিভিশন ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ও এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।
এছাড়া জনবিভাগ উন্নয়ন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ও এডুকেশনাল পাপেট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]