
বাঙালির প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে বইমেলা’র অন্যতম একটি অংশ শিশুপ্রহর। বরাবরের মতো এবারও বইমেলায় থাকছে শিশুপ্রহরের আয়োজন। এবারের বইমেলায় শিশুপ্রহরের আয়োজন করেছে সিসিমপুর।
শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটায় শিশুপ্রহরের সিসিমপুর মঞ্চ উদ্বোধন করেন শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। উদ্বোধনের পরে একে একে মঞ্চে আসেন সিসিমপুরের টুকটুকি, হালুম, ইকরি, শিকু। এর আগে সকাল ১১ টায় শিশুপ্রহরের উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নূরুল হুদা।
প্রতি শুক্র ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর চালু থাকবে। আর শিশুপ্রহরের সিসিমপুরের মঞ্চ তিনটি পর্বে চালু থাকবে। সকাল সাড়ে ১১টা, বিকাল সাড়ে তিনটা আর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। এদিকে আজ শুক্রবার ছিল অমর একুশে বইমেলার প্রথম ছুটির দিন। সকাল ১১টা থেকে বইমেলার ফটক খুললেও দুপুরের পর থেকেই বইমেলায় বইপ্রেমীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার আগে মেলা প্রাঙ্গণ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
সিসিমপুরের মঞ্চে টুকটুকি, হালুম, ইকরি, শিকু মঞ্চে এসেই শিশুদের পছন্দের গানে নাচতে থাকেন। এবারের সিসিমপুরের নতুন পাপেট চরিত্র জুলিয়া। মেলায় সে না আসলেও থাকবে টিলিভিশনের পর্দায়। অনেক শিশুই নতুন এ চরিত্রকে খুঁজে ফিরেন।
শিশুপ্রহরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিশুদের মাঝে এসে গল্প পড়ে শোনান। শিশুদের সবাইকে তিনি বই পড়তে বলেন। অভিভাবকদেরকে শিশুদের খাওয়ানোর সময় এবং অন্য সময়ে মোবাইল হাতে না দিয়ে বই হাতে দিতে বলেন। তাদেরকে গল্প, কবিতা পাঠ করে শোনাতে বলেন। ছোটবেলা থেকে বইপড়ার অভ্যাস গড়ে উঠলে বড় হয়েও তারা বই পড়বেন।
ডা. এ কে এম মুজাহেদুল ইসলাম বলেন, মেলার আঙ্গিক সাজাতে সবার আগে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শিশুপ্রহরকে। মন্দিরের দিকে বড় পরিসরে জায়গা দেওয়া হয়েছে এ চত্বরকে।
এ সময় তিনি বলেন, শিশুপ্রহরের সিসিমপুরের চরিত্রগুলো প্রত্যেকটি শিক্ষার উপকরণ। হালুম মাছ খেতে পছন্দ করে। টুকটুকি বই পড়তে পছন্দ করে। তাদের মাধ্যমে সুষম খাবারের ও বই পড়ায় শিশুদের আগ্রহ বাড়বে।
সিসিমপুর স্টলের ইয়াসিন আরাফ বলেন, “শুক্র ও শনিবার আমাদের একটু বেশি বিক্রি হয়, সে হিসেবে আজ প্রথম ছুটির দিনে আমাদের বিক্রি ভালো হচ্ছে। আমাদের নতুন নয়টি বই এসেছে। এর মধ্যে ইকরির ইচ্ছেঘুরি, বার বার করি ব্যবহার এবং এসো রঙধনু বানাই এই তিনটি বই বেশি বিক্রি হচ্ছে।”
বইমেলায় শিশুচত্বরটি এবার বাংলা একাডেমির মন্দিরের পাশের গেইট দিয়ে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে। শিশু চত্বরে এবার ৭১টি প্রতিষ্ঠানকে ১১১টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, “প্রতি বছরের মত এবারও শিশুপ্রহর মেলায় আসা শিশুদের জন্য বিশেষ আয়োজন সাজিয়েছে। শিশু চত্বরটিও করা করা হয়েছে একটু বড় পরিসরে। সব মিলিয়ে শিশু চত্বরে এসে শিশু-কিশোরেরা তাদের প্রিয় বই কেনার পাশাপাশি আনন্দে মেতে উঠবে।”
তিনবছর পর ভাষার মাসের প্রথম দিনেই এবার পর্দা উঠেছে বইমেলার। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে শুরু হবে বইমেলা।
২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকাল ৮টায় খুলবে মেলার দুয়ার, খোলা থাকবে রাত ৯টা পর্যন্ত। এ ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে।
অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি ও সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকবে। এছাড়া নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইমেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]