গরমে অনেকেই প্রচুর ঘামছেন, কিন্তু বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে সেই ঘাম দেরিতে শুকাচ্ছে। ঘাম যদি আমাদের শরীরেই বারবার শুকায় আর ঘামে ভেজা জামাকাপড় বেশিক্ষণ গায়ে থাকে, তাহলেই ঠান্ডা তো লাগবেই। তাই প্রথমেই চেষ্টা করতে হবে যেন ঠান্ডা না লাগে। নিতান্তই প্রয়োজন না হলে সরাসরি রোদ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে ছাতা ব্যবহার করতে পারেন।
অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম পরিহার করুন। দুপুরবেলা গরম বেশি থাকে, তাই এ সময় শারীরিক পরিশ্রম একেবারে কমিয়ে ফেলা উচিত।
শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া পানি এবং লবণের ঘাটতি পূরণের জন্য বেশি বেশি পানি ও বিভিন্ন পানীয় পান করুন। নানা রকম শরবত এবং গোটা ফল বা ফলের রস পান করতে পারেন।
মোটা, আঁটসাঁট পোশাক না পরে ঢিলেঢালা পাতলা পোশাক পরুন।
ভারী খাবার (যেমন বিরিয়ানি, ভুনা মাংস ইত্যাদি) এড়িয়ে চলুন।
এ সময় মাথার চুল যতটা সম্ভব ছোট রাখতে পারেন। কারও চুল বড় হলে বেণি করে রাখুন। মাথা কম ঘামবে, ঘাম বসে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কাও কমে যাবে।
হাতের কাছে রুমাল বা তোয়ালে রাখুন। ঘামলে তাৎক্ষণিক মুছে নিলে শরীরে বসে ঠান্ডা লাগার হাত থেকে বাঁচা যাবে। বিশেষ করে অনেকের গলা বেশি ঘামে এবং সেখান থেকেও ঠান্ডা লাগতে পারে।
শারীরিক পরিশ্রম করে এসে বা প্রচণ্ড গরম থেকে ফিরেই গোসল না করে একটু জিরিয়ে গোসল করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন ঘাম শরীরে বসে না যায়।
তারপরও ঠান্ডা লেগে গেলে
‘ঠান্ডা লাগা’ জটিল কিছু না হলেও খুবই বিরক্তিকর, বিশেষ করে করোনার এই সময়ে। বারবার নাক মোছা, সবার সামনে হাঁচি-কাশি দেওয়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মনোসংযোগে ব্যাঘাত ইত্যাদি খুবই অস্বস্তিকর। ‘ঠান্ডা’ কত দিন থাকবে বা ঠান্ডার তীব্রতা কেমন হবে, সেটা নির্ভর করে প্রত্যেক মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতার ওপর। শিশুদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা আর পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষমতা এক নয়। সাধারণত শিশু, বয়স্ক এবং অসুস্থ ব্যক্তিরা ঝুঁকিতে থাকে বেশি। ঠান্ডা যদি লেগেই যায়, তবে দেখতে হবে যে এটি অ্যালার্জিজাতীয় সমস্যা, নাকি জীবাণুঘটিত (যেমন ভাইরাসজনিত)। ভাইরাজনিত বা সাধারণ ঠান্ডা কয়েক দিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়। আলার্জিজনিত সমস্যা থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শে খুব সহজেই ভালো থাকা যায়।
নাক বন্ধ থাকলে, একটা গামলায় গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা মেনথল দিয়ে মাথা তোয়ালে দিয়ে ঢেকে সেই গরম ভাপ নাক দিয়ে টেনে নিতে পারেন।
প্রচুর পানি পান করুন। এ সময় বারবার গলা শুকিয়ে যায়, দেখা দেয় পানিশূন্যতা। আদা দেওয়া লেবু–চা পান করলে আরাম পাবেন। শর্ষে, রসুন, গোলমরিচ ইত্যাদি মসলাযুক্ত খাবার এ সময় আরামদায়ক।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঠান্ডান সমস্যা অ্যালার্জি বা ভাইরাসজনিত। এতে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই। প্রদাহ বা ব্যথার অস্বস্তি দূর করতে প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধই যথেষ্ট। তবে জ্বর ১০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে বা ১০ দিনের মধ্যে ভালো না হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া ভালো।
মনে রাখবেন, আপনার শরীর জীবাণু বা অ্যালার্জির বিরুদ্ধে নিজেই যুদ্ধ করবে, তবে তাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, উপসর্গ অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র এবং কিছুটা সময় দিতে হবে।
বিবার্তা/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]