বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হলে বোঝার উপায় ও করণীয়
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৪, ১২:০৫
বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হলে বোঝার উপায় ও করণীয়
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রাকৃতিক গ্যাস আমাদের দৈনন্দিন চাহিদা। এই গ্যাস ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রণ না করলে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। তাই বাড়িতে গ্যাস লিকেজ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া অতি জরুরি।


এ ব্যাপারে আগে থেকে সতর্ক থাকলে এবং কিছু সাবধানতা মেনে চললে প্রাণ ও সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব।


যেসব লক্ষণ দেখলে বুঝবেন বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হয়েছে


আবদ্ধ জায়গায় গ্যাস লিকেজ হলে জমে থাকা গ্যাস থেকে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। তাই আগে চলুন জেনে নিই গ্যাস লিকেজের লক্ষণগুলো কী কী।


১. ঘরে পচা ডিমের মতো অস্বাভাবিক গন্ধ


প্রাকৃতিক গ্যাস মূলত কয়েক ধরনের হাইড্রোকার্বনের এক প্রকার মিশ্রণ। বাস্তবে এটি গন্ধহীন। কিন্তু মার্কেপ্টেন নামক একপ্রকার গান্ধব পদার্থ যুক্ত করে একে গন্ধযুক্ত করা হয়। ফলে কোথাও গ্যাস লিকেজ হলে এই গন্ধ নাকে আসে এবং তা থেকে সহজেই গ্যাস লিকেজ হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়।


২. তীক্ষ্ণ হিস হিস শব্দ


বাড়িতে ব্যবহৃত সিলিন্ডারে বা পাইপের মধ্যে উচ্চ চাপে গ্যাস আবদ্ধ করে রাখা হয়। গ্যাস লিকেজ হলে পাইপ বা সিলিন্ডারের উচ্চ চাপের স্থান থেকে গ্যাস বের হয়ে আসে। ফলে গ্যাস বের হওয়ার সময় তীক্ষ্ণ হিস হিস শব্দ শোনা যায়। তাই এ ধরনের তীক্ষ্ণ শব্দ শুনতে পেলে সতর্ক হোন।


৩. ঘরের ছোট গাছ মরে যাওয়া


গ্যাস লিকেজ হলে ঘরের কিংবা পাশের বাগানের ছোট গাছগুলো অক্সিজেনের অভাবে মরে যেতে পারে। তাই হুট করে ঘরের টবের ছোট গাছ বা বাগানের গাছগুলো মরে গেলে গ্যাস লিকেজ হয়েছে কি না দেখুন।


৪. নানা রকম শারীরিক উপসর্গ


গ্যাস লিকেজ হলে ঘরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যেতে পারে। ফলে শরীরে চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারে না। এ কারণে মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব এবং মাথাব্যথার মতো শারীরিক উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে।


গ্যাস লিকেজ শনাক্ত হলে যা যা করবেন


ওপরের লক্ষণগুলো দেখে, শুনে ও বুঝে যদি নিশ্চিত হন যে গ্যাস লিকেজ হয়েছে, তাহলে দ্রুত লিকেজ পরবর্তী পদক্ষেপ নিন—


১. দ্রুত স্থান ত্যাগ করুন


বাড়িতে যদি গ্যাস লিকেজ শনাক্ত হয়, তাহলে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে যান। ঘর থেকে বের হয়ে বেশ ফাঁকা এবং নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিন।


২. বৈদ্যুতিক যন্ত্র চালু কিংবা আগুন জ্বালানো থেকে বিরত থাকুন


আবদ্ধ ঘরে গ্যাস লিকেজ হলে জমে থাকা গ্যাস ছোট্ট একটি আগুনের ফুলকি বা শিখা থেকে মারাত্মক অগ্নিকাণ্ডে রূপ নিতে পারে। তাই লিকেজ শনাক্ত হলে কোনোভাবেই ঘরের কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্র চালু করবেন না এবং সুইচ চাপবেন না। দেশলাই বা লাইটার দিয়ে কোনো কিছু জ্বালবেন না।


৩. দরজা–জানালা খুলে দিন


আবদ্ধ ঘরে জমে থাকা গ্যাস দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। তাই সবার আগে আবদ্ধ অবস্থা থেকে গ্যাসকে মুক্ত করে দিন। ঘরের দরজা–জানালা খুলে দিয়ে বাইরের বাতাস ঘরে প্রবেশ করতে দিন। এতে বিপদের আশঙ্কা অনেকটাই কমে আসবে।


৪. গ্যাসের প্রধান সরবরাহ বন্ধ করা


সিলিন্ডার বা পাইপলাইন থেকে গ্যাস লিকেজ শনাক্ত হলে দ্রুত সিলিন্ডার বা পাইপলাইনের গ্যাসের যে প্রধান সরবরাহ থাকে, তা বন্ধ করুন।


৫. দ্রুত ফায়ার সার্ভিস ডাকুন


গ্যাস লিকেজ শনাক্ত হলে দেরি না করে দ্রুত নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিস বাহিনীকে ডাকুন। এতে যেকোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবিলা করা সম্ভব।


ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়



নিয়মিত গ্যাসলাইন রক্ষণাবেক্ষণ করুন।


প্রয়োজন ছাড়া গ্যাস লাইনের ব্যবহার বন্ধ রাখুন।


সম্ভব হলে বাড়িতে কার্বন মনোক্সাইড শনাক্তকারী যন্ত্র লাগান।


গ্যাসের প্রধান সরবরাহ লাইন বন্ধ রাখার সুইচ হাতের নাগালে রাখুন।


ঘরে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখুন।



সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com