শিরোনাম
সন্তান জন্মের পর কর্মজীবী মায়েরা কাজ ছাড়বেন কি না?
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২১, ১৮:০৯
সন্তান জন্মের পর কর্মজীবী মায়েরা কাজ ছাড়বেন কি না?
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রতিটি মেয়ের জীবনেই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো সন্তানের জন্ম দেয়া। এই সন্তান তার জীবনকে আমুল পরিবর্তন করে দেয়। একজন মা তার সন্তানের জন্য পৃথিবীর যেকোনো কাজ নির্দ্বিধায় করতে পারেন। সব সময় সন্তানের চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে মায়ের মনে। তাইতো সন্তানের জন্মের পর অধিকাংশ মা তাদের জীবনধারা বদলে ফেলতে বাধ্য হন। কর্মজীবী মা’রা তাদের কর্মক্ষেত্র ছেড়ে বাড়িতে সারাক্ষণ সন্তানের দেখভালের দায়িত্ব খুব যত্নে কাঁধে তুলে নেন।


আদরের ছোট্ট সোনামণিকে বাসায় রেখে কর্মক্ষেত্রে যেতে অনেক মায়েরই দুশ্চিন্তা হয়। কতোটা নিরাপদে বাচ্চা থাকবে, ঠিক মতো খাবে কিনা- এগুলো নিয়ে ভাবনার অন্ত থাকে না। মূলত এসব কারণেই কর্মজীবী মায়েরা তাদের ক্যারিয়ারে ইতি টানতে বাধ্য হন। দীর্ঘদিনের অফিস ছেড়ে চার দেয়ালের মাঝে সন্তানের আদরমাখা গন্ধে কর্মক্ষেত্রের পুরানো দিনগুলোর কথা মনে করেন তারা। এতে মানসিক চাপ বাড়ে সদ্য সন্তানের জন্ম দেয়া সেই নারীর ওপর।


মনোবিদরা মনে করেন, মায়ের জীনযাত্রার এই হঠাৎ পরিবর্তনে সাংসারিক ভারসাম্যে ছন্দ পতন ঘটাতে পারে। তাদের ধারণা কর্মজীবী মায়েদের কাজ পুরোপুরি ছেড়ে দেয়া ঠিক নয়। কেন নয়, চলুন জেনে নেয়া যাক।


অর্থনৈতিক টানাপোড়েন


স্বামী-স্ত্রী যখন চাকরি করতেন তখন সংসারের খরচ দুজনে মিলে বহন করতেন। কিন্তু সন্তান জন্ম দেয়ার পর মা চাকরি ছেড়ে দেন। অন্যদিকে শিশুর জন্মেরর পরে সংসারের সেই খরচ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। সে সময়টাতে যদি একজনের আয় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, তাতে স্বামী ও স্ত্রী দুজনেরই মানসিক অবস্থার ওপর চাপ বাড়ে। আর মায়ের মানসিক অবস্থা ঠিক না থাকলে তার প্রভাব পড়তে পারে সন্তানের ওপরেও।


একঘেয়েমি জীবনধারা


সন্তানের জন্মেরর পরে সংসারের দায়িত্ব বেড়ে যায়। এ সময়ে স্বামীকে এগিয়ে আসতে হবে। সারাক্ষণ শিশু ও তাকে ঘিরে থাকলে মায়ের মনে একঘেয়েমি তৈরি হতে পারে। অনাকাঙ্খিত হলেও সত্য, গবেষণায় দেখা গেছে অনেক মায়ের মনে হতেই পারে যে, সন্তানের জন্য তার জীবন আর আগের মতো থাকলো না। এতে করে মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে।


আত্মবিশ্বাসী মা


ঘরবন্দি জীবন ভাবনার পরিসরকে বড় করে না বরং ঘর থেকে বাইরে পা বাড়ালেই মনের জানালা খুলে যায়, ভাবনার পরিসর বড় হয়। নিজেকে নতুন করে দেখার-জানার সুযোগ তৈরি হয়। নিজের বাড়ির বাইরেও যে একজন মায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে পারে সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এই আত্মবিশ্বাসটা ধরে রাখাটা খুব জরুরি। সন্তানকে বড় করার ক্ষেত্রে মায়ের আত্মবিশ্বাস ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।


যৌথ পরিবারের আদরে-নিরাপত্তায় থাকুক সন্তান


সবশেষে মনোবিদরা বলেছেন, সন্তান জন্মের পর কোনো মা যেনো তার কর্মক্ষেত্রকে স্থায়ীভাবে ছেড়ে না দেন। মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে আবার কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসাটা গুরুত্বপূর্ণ। যদিও শহরে একক পরিবার বেশি। তাই সন্তানকে কার কাছে রেখে আসবেন, যাতে সঠিক যত্ন হয়, এ নিয়ে চিন্তা করেন মায়েরা। এর সমাধানও রয়েছে। সেই চিরচেনা প্রিয়কথা, যৌথ পরিবারই পারে মা ও শিশুর আদরমাখা যত্নের সবচেয়ে নির্ভরশীল প্রতিষ্ঠান হতে। কাজের লোকের কাছে নয়, সন্তানকে বড় করুন দাদা-দাদী, নানা-নানী, চাচা-মামা, ফুফু-খালাদের কাছে। কারণ পরিবারই সন্তানের প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেখানে তার শক্ত ভতি তৈরি হয়।


বিবার্তা/অনামিকা/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com