শিরোনাম
সাক্ষাতকার
‘৫০ বছরেও সাংগঠনিক ভিত্তি যাতে কেউ ভাঙতে না পারে’
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৫৯
‘৫০ বছরেও সাংগঠনিক ভিত্তি যাতে কেউ ভাঙতে না পারে’
সোহেল আহমদ
প্রিন্ট অ-অ+

২০১৯ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি করেছিলো ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। পরের বছর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত ৭৫টি ওয়ার্ড ও ২৫টি থানার একটিতেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি মহানগরের নেতারা।


এদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে দলের নেতাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা বলেছেন। আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ এ সাংগঠনিক ইউনিটটির সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে বিবার্তা২৪ ডটনেট কথা বলেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি’র সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিবার্তা প্রতিবেদক সোহেল আহমদ।


বিবার্তা: ২০১৯ সালে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ওয়ার্ড ও থানা কমিটিগুলো এখনো পুরাতন কমিটিতে চলছে।


আবু আহমেদ মান্নাফি: আমাদের একেকটি ওয়ার্ডে ৫ থেকে ৭টি ইউনিট, কোনোটাতে ১০ থেকে ১২টি ইউনিট রয়েছে। এখনো আমাদের অর্ধেক ওয়ার্ডের ইউনিট সম্মেলন শেষ করতে পারিনি। একটি ওয়ার্ডের ত্রি-বার্ষিক ইউনিট সম্মেলন করতে সময় লাগে। সম্মেলনে হাজার হাজার লোক উপস্থিত থাকেন, অতিথি হিসেবে আসেন দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দ। এলাকার মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে সবাইকে নিয়ে আমরা সম্মেলনগুলো করছি। সম্মেলনের মাধ্যমে ইউনিটগুলোর কমিটি গঠন করা হচ্ছে। ইউনিট সম্মেলন শেষ হলে ওয়ার্ড ও পরে থানার সম্মেলন শুরু হবে। আমরা ওয়ার্ড এবং থানাতেও সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করবো। একটা একটা করে শেষ করে যাচ্ছি, আরো সময় লাগবে। এটি চলমান সাংগঠনিক প্রক্রিয়া।


বিবার্তা: ইউনিট পর্যায়ে সম্মেলন করার কারণ কি?


আবু আহমেদ মান্নাফি: ইউনিট পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা তৃণমূলকে জাগিয়ে তুলছি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি, যারা আওয়ামী লীগ করতে গিয়ে নির্যাতিত হয়েছে, পোড় খাওয়া কর্মীদের বের করে আনা, তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে খুঁজে আনা, অবহেলিত ছিলো এমন দেশপ্রেমিক প্রকৃত আওয়ামী লীগারদের খুঁজে আনছি। আমরা এটা শুরু করেছি, যাতে আগামী ৫০ বছরে সাংগঠনিক ভিত্তি অন্তত কেউ ভাঙতে না পারে। এই সাংগঠনিক ভিত্তি যাতে বংশ পরম্পরা চলতে পারে। ইউনিট সম্মেলন শেষ হলে খারাপ মানুষের সংখ্যা সংগঠনে কমে যাবে। তারা আর দলে ঢুকতে পারবে না। নেতা-কর্মীদের কিছু কিছু কর্মকাণ্ডে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে যায়। তাদের আর সুযোগ দেয়া যাবে না। এটাকে বন্ধ করে দিতে কাজ করছি। যারা জনগণের সেবা দিবে, খেদমত করবে, খাদেম হিসেবে থাকবে। জনগণ যাদের দ্বারা হুমকির সম্মুখীন না হয় এমন নেতা-কর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
বিবার্তা: করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপট বাড়ছে। এ অবস্থায় সাংগঠনিক কার্যক্রম কিভাবে এগিয়ে নিবেন?


আবু আহমেদ মান্নাফি: মহামারি করোনার পর এখন আবার ওমিক্রন দেখা যাচ্ছে। সংগঠনের কাজ সংগঠন করবে। ওমিক্রনের কারণে হয়তো কাজে কিছুটা ভাটা পড়বে। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের মধ্যমে তৃণমূলকে সুসংগঠিত করার মধ্য দিয়েই মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সাংগঠনিক কার্যক্রম যদি ঝিমিয়ে যায় তাহলে সংগঠন ভালো থাকে না। আমরা চাই সবসময় আমাদের কাজ চলুক। আমরা চাচ্ছি যে, তৃণমূলকে যদি আমরা সংগঠিত করতে পারি। আমরা মানুষের মধ্যে আওয়ামী লীগের বাণী, জননেত্রী শেখ হাসিনার বাণী এবং যেভাবে উন্নয়ন হচ্ছে সেই উন্নয়নের ছোয়াটা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। আমরা করোনার মধ্যেও কাজ করেছি, মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। সংগঠনকে চাঙা রাখতে হলে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। আমরা সেভাবেই পরিকল্পনা করছি।


বিবার্তা: মহানগর দক্ষিণের ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের কমিটিতে হাইব্রিড-অনুপ্রবেশকারীদের দৌরাত্ন দেখা যায়। এসব রোধে আপনারা কি করছেন?


আবু আহমেদ মান্নাফি: আমাদের কাজই তো সংগঠন করা। দুর্নীতিবাজ, যারা খারাপ মানুষ সংগঠনে ঢুকে গেছে বা ঢুকতে চেষ্টা করছে তাদেরকে জায়গা দেয়া হচ্ছে না। ইউনিট সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিহত করা হচ্ছে। তাদেরকে সংগঠনে ঢুকতে দেয়া হবে না। ২০০৮ সালের পরে, আওয়ামী লীগে গণজোয়ারের মধ্যে সারা বাংলাদেশে কিছু হাইব্রিড ডুকে গেছে, যারা ভালো করে আওয়ামী লীগ শব্দটা বলতে পারে না। এরা দীর্ঘদিন পোড় খাওয়া কর্মীদের সরিয়ে দিয়েছে। সংগঠনকে ভালোভাবে সাজাতে গিয়ে প্রকৃত আওয়ামী লীগ, যাদের বংশে আগ থেকে আওয়ামী লীগের কর্মী আছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নির্যাতিত মানুষের সন্তানদের খুঁজে বের করে আনার কাজ চলছে। ভালো মানুষের সংগঠন তৈরি করলে দলে ভালো মানুষ আসবে। এটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া কিন্তু আমরা কাজ করছি।


বিবার্তা: আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলেছেন। আপনারা কি প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন?


আবু আহমেদ মান্নাফি: আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। ইউনিট সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে নির্বাচনের দাওয়াত পৌঁছে দিচ্ছি। জাতির জনক আমাদেরকে ভোটারদের সাথে সদালাপ, ভালো ব্যবহার করা শিখিয়ে দিয়ে গেছেন এবং তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা মানুষকে ভালোবাসতে বলেন। যার কথায় জনগণ ভোট দিবে, ভালো ও সামাজিক কাজ করছে। যারা মানুষের জন্য হুমকি হবে না তাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আগামীতে ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে আসে আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। তৃণমূলের কর্মীদেরকে সুসংগঠিত করছি। নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি সংগঠনকে সুসংগঠিত করার কাজও চলছে। আমরা নির্বাচনের ক্যানভাস শুরু করে দিয়েছি। সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আমাদের নির্বাচন প্রস্তুতির কার্যক্রম চলছে।


বিবার্তা: গুরুত্বপূর্ণ সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।


আবু আহমেদ মান্নাফি: আপনাকে এবং বিবার্তাকেও অনেক ধন্যবাদ।


বিবার্তা/সোহেল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com