লেবাননে তারবিহীন যোগাযোগের যন্ত্র পেজারের মাধ্যমে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এতে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন দুই হাজার ৮০০ জন। নিহতের মধ্যে আট বছরের এক শিশুও রয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আবিয়াদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশজুড়ে পেজার বিস্ফোরণে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ বলছে, দেশজুড়ে গোষ্ঠীটির সদস্যদের ব্যবহৃত যোগাযোগ ডিভাইস (পেজার) একযোগে বিস্ফোরণে এক মেয়ে ও তাদের দুই যোদ্ধা নিহত ও বহু লোক আহত হয়েছেন। গোষ্ঠীটি এ হামলার জন্য সরাসরি ইসরাইলকে দায়ী করেছে।
সরকারের এক মুখপাত্রও এ বিস্ফোরণের জন্য সরাসরি ইসরাইলকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, পেজার বিস্ফোরণের জন্য ইসরাইল দায়ী। এটি লেবাননের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।
রয়টার্সের তিমুর আজহারি জানান, লেবাননের তথ্যমন্ত্রীও ‘ইসরাইলি আগ্রাসনের’ নিন্দা জানিয়েছেন।
পেজার নামের এই ডিভাইসটি মোবাইল ফোনের চেয়েও ছোট। এছাড়া এটি ব্যবহারে লাগে না কোনও ইন্টারনেট সংযোগ।
পেজার হলো একটি তারবিহীন যোগাযোগের ডিভাইস। এটি দিয়ে বার্তা আদানপ্রদান করা যায়। এতে ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হয় না।
মোবাইল ফোন সহজলভ্য হওয়ার আগে পেজার ব্যবহারের চল ছিল। তখন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যখাতে এটির ব্যবহার দেখা যেত। পেজার দুই ধরনের হয়। একটির মাধ্যমে কেবল বার্তা পাওয়া যায়।
আরেকটির মাধ্যমে বার্তা পাওয়া এবং পাঠানো—উভয়ই করা যায়। ২০০০ সালের পর মোবাইল ফোনে বাজার সয়লাব হয়ে যাওয়ার পর পেজারের ব্যবহার একেবারেই নাই হয়ে যায়।
তবে চলতি বছরের শুরুতে হিজবুল্লাহ ব্যাপকভাবে পেজার ব্যবহার শুরু করে। কারণ মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে দখলদার ইসরায়েলিরা তাদের সহজেই ট্র্যাক করতে পারত। এ কারণে নেটবিহীন পেজার ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে তারা। মঙ্গলবার লেবাননে হামলার পর পেজারের ব্যবহারের বিষয়টি আবার নতুন করে সামনে চলে এসেছে।
সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ অ্যারাবিয়া জানিয়েছে, যেসব পেজার বিস্ফোরিত হয়েছে সেগুলো পাঁচ মাস আগে লেবাননে আসে। এই ডিভাইসগুলো কোনোভাবে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের নিয়ন্ত্রণে যায়। এরপর তারা এগুলোতে অতি-উচ্চ বিস্ফোরক স্থাপন করে। এরপর সেগুলো লেবাননে পাঠায়। তাদের পরিকল্পনা ছিল সুযোগ বুঝে এসব পেজারে বিস্ফোরণ ঘটানো।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার পেজারগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দখলদার ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা। পেজারের মাধ্যমে চালানো হামলায় লেবাননে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন অন্তত ৯ জন।
ভয়াবহ এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে হিজবুল্লাহ উপযুক্ত জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। তবে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে, সেই বিষয়ে কিছু জানায়নি লেবাননের সশস্ত্র এই গোষ্ঠী।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]