শিরোনাম
ওমিক্রনের ধাক্কায় চিন্তিত রাঙ্গাবালীর তরমুজ চাষিরা
প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:২১
ওমিক্রনের ধাক্কায় চিন্তিত রাঙ্গাবালীর তরমুজ চাষিরা
রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বাড়াতে প্রতি বছর আমন ধান উঠার সাথে সাথে তরমুজ চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তরমুজ রাজ্য খ্যাত পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার তরমুজ চাষিরা। এ অঞ্চলের চাষাবাদের তালিকায় ধান ও তরমুজ চাষ উল্লেখযোগ্য থাকলেও কৃষিখাতে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা সম্পূর্ণ নির্ভর করে তরমুজ চাষকে ঘিরে। তরমুজ ব্যবসায়ীদের মুখে শোনা যায়, দেশের বাজারে রাঙ্গাবালীর রাঙ্গা তরমুজের যেমন চাহিদা রয়েছে, তেমনি বিদেশের মাটিতেও বেশ কদর রয়েছে। দেশের কৃষি খাতের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাঙ্গাবালীর রাঙ্গা তরমুজের ভূমিকা তুঙ্গে।


উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় ৬ হাজার ৪৯৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বিগ ফ্যামিলি, ব্লাক জায়েন্ট, ড্রাগন, সুইট ড্রাগন বা ড্রাগন সুইটসহ বেশ কয়েকটি উন্নত জাতের তরমুজ রয়েছে। বিগ ফ্যামিলি জাতটাই বেশি, যা মোট আবাদি জমির ৭২% জমিতে চাষ হয়েছে। এবার রাঙ্গাবালী উপজেলা সবচেয়ে বেশি তরমুজ চাষ হয়েছে ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কাউখালীর চরে। উপজেলা কৃষি বিভাগ আশাবাদী এবারো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে রাঙ্গাবালীর রাঙ্গা তরমুজ।


কিন্তু চাষিরা জানান, তরমুজ চাষের উপযোগী মৌসুম অনুকূলে থাকলেও বর্তমানে করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে চিন্তিত তারা। গত বছর করোনা ভাইরাসের কারণে তরমুজ বাজারজাত করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে। যাতে অনেকেই আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং এখনো সেই ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে।


সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের পূর্ব বাহেরচর, আমলীবাড়ীয়া, যুগির হাওলা, গঙ্গিপাড়া, কাছিয়াবুনিয়া ও গন্ডাগুলা এবং ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কাউখালী, কোরালিয়া, বড়বাইশদিয়া, চরমোন্তাজ ও চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে তরমুজ চাষের মাদা প্রস্তুত। সার প্রয়োগ ও বীজ বপনে ব্যস্ত সময় পার করছে তরমুজ চাষিরা।



এসময় রাঙ্গাবালী উপজেলার শীর্ষ তরমুজ চাষি মো. টিপু মুন্সির সাথে দেখা হলে তিনি বলেন, ‘এবছর ৫ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। গতবছর ১০ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলাম। সে বছর কাঙ্ক্ষিত প্রফিট মিললেও করোনার কারণে মাল পরিবহনে ভোগান্তির শিকার হই, যার কারণে এই বছর তার অর্ধেক তরমুজ চাষ করেছি। উপযুক্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে চিন্তায় আছি, বিশেষ করে মাল বাজারজাত নিয়ে।’


গঙ্গিপাড়া গ্রামের তারমুজ চাষি মো. জহির পাটোয়ারি জানান, ‘শুনছি করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট সৃষ্টি হইছে, কেউ কেউ বলছে গতবছর মতো করোনার প্রকোপ ঠেকাতে এবারো লকডাউন দিতে পারে সরকার। যদি তাই হয়, তবে গতবছরের মতোই মাল পরিবহন করা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হবে আমাদের, পথের মধ্যেই নষ্ট হবে তরমুজ। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, তরমুজ কাঁটার পর যেনো কোনো লকডাউন দেয়া না হয়। লকডাউন দিলে আমরা বড় লোকসানের মুখে পড়বো।’


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম জানান, ‘ওমিক্রন কারণে যদি সরকারের কাছ থেকে লকডাউনের মতো কোনো নির্দেশনা আসে, তাহলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও উপজেলা কৃষি বিপণন অধিদফতর একযোগে তরমুজ চাষীদের পাশে দাঁড়াবে, যাতে তারা জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের (উপজেলা প্রশাসন) মাধ্যমে মাল বাজারজাত করার উপযুক্ত সার্বিক পরিস্থিতি গ্রহণ করতে পারে।’


বিবার্তা/সায়েম/আশিক

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com