শিরোনাম
বাংলাদেশী চিংড়ির চাহিদা কমছে বিশ্ব বাজা‌রে
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২১, ১০:১৪
বাংলাদেশী চিংড়ির চাহিদা কমছে বিশ্ব বাজা‌রে
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিশ্ব বাজা‌রে ধী‌রে ধী‌রে বাংলাদেশী চিংড়ির চাহিদা কমছে। মূলত ‘ভেন্নামি শ্রিম্প’ বা প্যাসিফিক হোয়াইট-লেগড শ্রিম্প (প্রশান্ত মহাসাগরীয় সাদা চিংড়ি) এর চাহিদা বাড়ার কারণে বাজার হারাচ্ছে বাংলাদেশ। এর ফলে ধারাবাহিকভাবে কমছে চিংড়ি রফতানি ও উৎপাদনের পরিমাণ। ফ‌লে সম্ভাবনাময় এই খাত এখন অনেকটাই নিস্তেজ।


সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্ববাজার অনেকটাই ভেন্নামি চিংড়ির দখলে। এ চিংড়ির দাম বাংলাদেশি চিংড়ির থেকে অনেক কম। ফলে অপেক্ষাকৃত বেশি দামে বাংলাদেশের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে না। উচ্চফলনশীল এ চিংড়ি চাষ করে ইতোমধ্যে ভারত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ডসহ বেশ কিছু দেশ সফলতা পেয়েছে।


মৎস্য অধিদফতর সূ‌ত্রে জানা গেছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে চিংড়ি উৎপাদনের পরিমাণ সর্বোচ্চ দুই লাখ ৫২ হাজার ৫২৩ মেট্রিক টনে পৌঁছায়। এরপর ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে উৎপাদনের পরিমাণ। সর্বশেষ গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উৎপাদন দুই লাখ ৩৯ হাজার ২১৩ মেট্রিক টনে ঠেকেছে।


সূত্র আরো জানায়, ২০০৬-০৭ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি চিংড়ি রফতানি হয়। এ সময়ে ৫৩ হাজার ৩৬১ মেট্রিক টন চিংড়ি রফতানি হয়, যার বাজারমূল্য ছিল দুই হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। এরপর ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে রফতানি। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রফতানির পরিমাণ ৩৩ হাজার ৩৬২.৫২ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য তিন হাজার ৮৮.৮৫ কোটি টাকা।


দেশে মোট উৎপাদিত চিংড়ির অধিকাংশই চাষ হয় দক্ষিণাঞ্চলে। খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে চিংড়ি ঘের গড়ে উঠেছে। এর বাইরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় লোনাপানি ধরে রেখে স্বল্প পরিমাণে বাগদা ও গলদা চিংড়ির চাষ হয়।


বিশেষ করে খুলনার পাইকগাছায় রয়েছে শত শত চিংড়ির ঘের। ঘেরগুলিকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলে এক সময়ে গড়ে উঠেছিল বহু মাছের আড়ত। তবে আস্তে আস্তে আড়তের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।


পাইকগাছার মৎস্য ঘের মালিক ইমদাদুল হক বলেন, ‘আগে ঘের থেকে আমরা মাছের আড়তে মাছ পাঠাতাম। সেখান থেকে কোম্পানির মাধ্যমে গলদা কিংবা বাগদা চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি হতো। তবে এখন বিদেশের তুলনায় দেশে বেশি চিংড়ি বিক্রি হয়।’


পাইকগাছার মৎস্য আড়ত ‘রুকু ফি‌স’ এর মা‌লিক ‌রোকনুজ্জামান জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশী মাছের চাহিদা কমে গেছে। ফলে আমাদের বেচা-বিক্রিও নেই বললেই চলে। আগে গলদা কিংবা বাগদা চিংড়ির বেশিরভাগই বিদেশে রফতানি হতো। এখন আমরা দেশের বাজারে উপর নির্ভরশীল।


বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও ওরিয়েন্টাল ফিশ প্রসেসিং অ্যান্ড কালচারাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মোহাম্মদ আব্দুর বাকী মনে করেন, বাংলাদেশি চিংড়ির চাহিদা বিশ্ববাজারের মত দেশের বাজারেও ব্যাপক। তবে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া আমাদের দেশে উৎপাদিত চিংড়ি চাষে খরচ বেশি হয় এবং লাভ কম হয়। সেজন্য যে চিংড়ি চাষে খরচ কম পড়বে, সেই চিংড়ি চাষের দিকে যেতে হবে।


এ প্রসঙ্গে মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ বলেন, ‘চিংড়ির উৎপাদন বাড়াতে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। আশা করছি, আগামীতে চিংড়ির উৎপাদন ও রপ্তানি দুই-ই বাড়বে। এরই মধ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে।’


বিবার্তা/এনকে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com