রাতে আমার প্রাণটাও চলে যেতে পারত: ঋতুপর্ণা
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:২৬
রাতে আমার প্রাণটাও চলে যেতে পারত: ঋতুপর্ণা
বিনোদন ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে বুধবার রাত দখলের কর্মসূচিতে নেমেছিল কলকাতাবাসী। আর সেই কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়েই হেনস্তার শিকার হয়েছেন টালিউড অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।


রাত দখল কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়েন এই অভিনেত্রী। ঋতুপর্ণা গাড়ি থেকে নামতেই শোনা যায় ‘গো ব্যাক…গো ব্যাক’ স্লোগান। তারপরও তিনি প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হন।


৪ সেপ্টেম্বর, বুধবার রাতের এ ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন ঋতুপর্ণা। কলম তুলে নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারে লিখেছেন, কেন এমন কিছুর সাক্ষী হতে হলো তাকে?


অভিনেত্রী লেখেন, আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিহত চিকিৎসকের জন্য সুবিচার চেয়ে ৪ সেপ্টেম্বর শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ের প্রতিবাদী জমায়েতে উপস্থিত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, এত মানুষের প্রতিবাদ বৃথা যাবে না। আমিও সুবিচারের আশায় রয়েছি। জমায়েতে যোগ দিয়ে মোমবাতি জ্বালাই। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই বদলে গেল ছবিটা। আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লাম। আমার উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে শুরু করেন অনেকে। চারপাশ থেকে উলুধ্বনি এবং শঙ্খ বাজিয়ে ব্যঙ্গ।


এতে কিছু মনে করেছি, এমন নয়। কিন্তু তারপর গাড়িতে জুতা ছোড়া হল। তখন আমি দরজা খুলে বলি আপনারা এমন করবেন না। আপনাদের সঙ্গে কথা বলতেই এসেছি, বসতে এসেছি। কিন্তু কেউ কোনও কথাই শুনলেন না। আসলে আমার মনে হয়, কিছু মানুষ প্রতিবাদের কথা মাথায় না রেখে, হুজুগে চলে গিয়েছিলেন জমায়েতে।


ঋতুপর্ণা আরও লেখেন, বুঝতে পারছি, সকলেই ক্ষুব্ধ। তবে কলকাতার প্রতিবাদী চেহারার মধ্যে এই চেহারাটা দেখে আমি লজ্জিত, আহত, কম্পিত। বুধবার রাতে আমার প্রাণটাও চলে যেতে পারত। আমি একজন অরাজনৈতিক, নিরপেক্ষ মানুষ হিসেবে, একজন মহিলা হিসেবে অন্য মহিলার পাশে দাঁড়াতে এসেছিলাম। কিন্তু বিরাট সংখ্যক কিছু মদ্যপ এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আচমকাই জনস্রোত ধাক্কা দিতে শুরু করল। এত চিৎকার হচ্ছিল যে, কারও কোনও কথা শুনতে পাচ্ছিলাম না।


অভিনেত্রীর কথায়, আমি তো কাল কোনও তারকা হিসেবে নয়, মানুষ হিসাবে গিয়েছিলাম। যেখানে ঘটনাটা ঘটল সেখানে নিহত চিকিৎসকের বাবা-মাও এসেছিলেন। ভেবেছিলাম একবার দেখা করব তাদের সঙ্গে। বলতাম, এই লড়াইয়ের সঙ্গে আমিও আছি। কিন্তু সেটা আর হলো কই? তবে এই ঘটনার পর আমি থেমে যাব, এমন নয়। আমার মনের মধ্যে প্রতিবাদ থাকবে। আমিও একইভাবে সুবিচার চাইব। সেটা থামবে না।


অবশেষে ঋতুপর্ণা লেখেন, আমি প্রশ্ন করতে চাই আমার সমবেদনা জানানো কি অন্যায়? একটি মেয়ের হয়ে তারা আন্দোলন করছেন আর অন্য একজন নারীকেই হেনস্থার শিকার হতে হলো! হয়তো এই মানসিকতাই আমাদের বর্বরতার দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে।


বিবার্তা/জেনি/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com