মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনার সঙ্গে কোনো আপস নয় : ড. মশিউর রহমান
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৪, ১৬:৩২
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনার সঙ্গে কোনো আপস নয় : ড. মশিউর রহমান
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনার সঙ্গে কোনো আপস নয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, এই দেশমাতৃকা সৃষ্টিতে যারা অকাতরে নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন তাদেরকে অবমাননা মেনে নেওয়া হবে না। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের যথাযথ সম্মান রক্ষা রাষ্ট্রের অবশ্য পালনীয় দায়িত্বও বটে।


১৬ জুলাই, মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘বিচারহীনতায় বাংলাদেশ: বেআইনি আইন ইনডেমনিটি ও কারারুদ্ধ জননেত্রী’ শীর্ষক সেমিনারে সম্মানিত আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।


শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, আমাদের দুঃখ হয়, বেদনা পাই, ক্ষুব্ধ হই যখন আমার তরুণ শিক্ষার্থী রাজপথে ভুল স্লোগানে নিজেকে সম্পৃক্ত করে। আত্মপরিচয়ে রাজাকার পরিচয়কে সংযুক্ত করে। তার মধ্য দিয়ে যারা এর অভিভাবকত্ব করেন তারা এই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাড়াচ্ছেন। এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আত্মপরিচয়ের সঙ্গে রাজাকার শব্দ জুড়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করার এই ধৃষ্টতার রাজনৈতিক পরিচয় থেকে সরে দাঁড়ান। অন্যথায় বাংলাদেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেবেন, সেটি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা এই সংঘাতের চরিত্রগুলো জানি। শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার সামনে গণতান্ত্রিক মানুষের চেতনা আর সেই কবিতা আবৃত্তি, নির্মলেন্দু গুণের দাঁড়িয়ে থাকা, আর কৃষক-শ্রমিকের প্রতিবাদের সামনে সেদিন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আত্মসমর্থন করতে হয়েছিল। যেমন আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনীকে।’


জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বলেন, ‘মূলত বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর পেছনে বাঙালির যে শক্তি, সাধারণ মানুষের যে অবস্থান, কৃষক-শ্রমিক-মজুরের যে দৃঢ়তা সেটিই বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দর্শনের শক্তি। সত্য এবং সুন্দরের এই পথে বাংলাদেশের মানুষের যে ইচ্ছে সেই পথ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন। আসুন, রাজপথে আজকে যে বিভ্রান্ত মিছিল চলছে তা থেকে আমাদের আত্মপোলব্ধি হোক- এই দেশে এখনো কিছু বিভ্রান্ত চেতনার মানুষ আছে, যারা পেছন থেকে টানতে চায়। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে রুদ্ধ করতে চায়। আমাদের আত্মবিকাশের পথকে রুদ্ধ করতে চায়। কেননা অল্প সংখ্যক সেই পরাজিত শক্তির মধ্যে বেদনা রয়ে গেছে। কেন সেদিন বঙ্গবন্ধুর দর্শনের সামনে তাদের আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে।’


ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এ অঞ্চলের মানুষের মুক্তি নিশ্চিতে যে পথে হেঁটেছেন, সেই অবিরাম হেঁটে চলায় সত্য ও সুন্দর ছিল তাঁর অনুপ্রেরণা। নিজে আত্মস্থ করেছেন বই পড়ে, কারাগারে থেকে বই পড়ার অভ্যাসের কারণে জেনেছেন বিশ্বব্যবস্থা। মুক্তির পথ কী সে বিষয়ে আধুনিক রাষ্ট্র তৈরির স্তম্ভ তিনি জানতেন। এ কারণেই সংবিধানে সন্বিবেশিত করেছেন চার মূলনীতি। সত্য ও সুন্দর প্রকাশের দীর্ঘপথে তিনি মানুষকে যুথবদ্ধ করেছেন, ঐক্যবদ্ধ করেছেন, অতঃপর ৭ই মার্চে তিনি ঘোষণা করতে পেরেছেন মুক্তির পথ। যা নির্দেশনা দিয়েছেন তাই হয়েছে। সেটি করেই বাঙালির কৃষক বাবারা গেরিলা যোদ্ধা হয়েছেন।’


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য তারানা হালিম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব ও কলামিস্ট হায়দার মোহাম্মদ জিতু প্রমুখ। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com