ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪৫ কোটি টাকার বাজেট
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৪, ১৯:১১
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪৫ কোটি টাকার বাজেট
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৯৪৫ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া সিনেট অধিবেশনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৯৭৩ কোটি ৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ।


২৬ জুন, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিকেল থেকে চলমান বাজেট অধিবেশনে নতুন অর্থ বছরের বাজেট ও গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি।


জাতীয় সঙ্গীত ও ধর্মীয় আচারের পর সিনেট চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং অধিবেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল অভিভাষণ প্রদান করেন।


সিনেট অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের বাজেট উপস্থাপন করেন। চতুর্থ বারের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি।


২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত ৯৪৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার বাজেটের মধ্যে বেতন, ভাতা ও পেনশন বাবদ ৬৩৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা রাখা হয়েছে যা মোট ব্যয়ের ৬৭ শতাংশ। এছাড়া পণ্য ও সেবা খাতে ২২০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে যা যথাক্রমে ২৩.৩৩ শতাংশ। অন্যদিকে গবেষণা মঞ্জুরী বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২০ কোটি ৫ লাখ টাকা। যা মোট ব্যয়ের মাত্র ২.১২ শতাংশ।


বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের মূল বাজেট ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৩১ কোটি ২৫ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে প্রাপ্ত বরাদ্দের পরিমাণ ৮০৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা, যা ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের মূল বরাদ্দের চাইতে ৩৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা বেশি।


২০২৩- ২০২৪ অর্থ বছরে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ১৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ৫ কোটি টাকা বেশি গবেষণা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।


সিনেট অধিবেশন বাজেট উপস্থাপনকালে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য আমরা যে চাহিদা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের (বিমক) নিকট প্রেরণ করি তা ছিল ১১৩১ কোটি ১৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা। বিমক আমাদেরকে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রয়োজনের তুলনায় ৩২৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা কম বরাদ্দ দিয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়কে কাল্পনিকভাবে বেশি করে ধরে দিয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষার্থী পূর্বের তুলনায় কম সংখ্যক ভর্তি করা হচ্ছে। ছাত্রদের টিউশন ফি বৃদ্ধি করা হয়নি।


বাজেটে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে পাওয়া যাবে ৮০৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এছাড়া নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৯০ কোটি টাকা এবং ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, যা প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৫.৩৭ শতাংশ।


২০২৩-২০২৪ সালের মূল বাজেট ছিল ৯১৩ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। সংশোধিত বাজেটে ৫৯ কোটি ১৫ লাখ ৯১ হাজার বৃদ্ধি করে সংশোধিত বাজেট দাঁড়ায় ৯৭৩ কোটি ৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। সংশোধিত বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে অনুদান ৭৭৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা এবং নিজস্ব আয় হিসেবে ৯০ কোটি টাকাসহ আয় ধরা হয়েছে ৮৯১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ফলে বিগত বছরের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮১ কোটি ৩৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা, যা মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৮.৩৬ শতাংশ।


ঘাটতি বাজেট নিয়ে কোষাধ্যক্ষ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কোন লাভজনক প্রতিষ্ঠান (Profitable entity) নয় বিধায় নিজস্ব তহবিল থেকে ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে না। প্রতি বছর এভাবে তহবিলের ঘাটতি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন কষ্টসাধ্য হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়ের নতুন নতুন খাত খুঁজে বের করতে হবে অথবা সরকারের নিকট হতে বিশেষ অনুদান চাওয়া যেতে পারে।'


গবেষণা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২০ কোটি ৫ লাখ টাকা যা মোট ব্যয়ের ২.১২%। ২০২৩-২৪ অর্থবছর হতে যা ৫ কোটি টাকার বেশি। উদ্দাবনের জন্য বাজেটে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।


লিখিত বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ বলেন, বর্তমান যুগে টিকে থাকতে হলে নতুন নতুন উদ্ভাবন প্রয়োজন। প্রচুর অর্থ ব্যয় ব্যতীত এ ব্যাপারে সাফল্যমন্ডিত হওয়া দিবাস্বপ্ন মাত্র।


তিনি আরো যুক্ত করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০০ এর বেশি শিক্ষক কর্মরত আছেন। প্রত্যেকের জন্য গড়ে গবেষণা বাবদ বরাদ্দ ১ লাখ টাকা। এই অর্থ দ্বারা বড় ধরনের মৌলিক গবেষণা আদৌ কি সম্ভব? আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং নিয়ে অনেক আলোচনা শুনতে পাই।


র‍্যাংকিং উন্নত করতে হলে প্রয়োজন গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা। এই খাতে বাজেট বরাদ্দ বহুলাংশে বৃদ্ধি করলে আমরা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাব বলে আমার বিশ্বাস।


উপাচার্যের অভিভাষণ এবং কোষাধ্যক্ষের উপস্থাপিত বাজেটের উপর সিনেট সদস্যবৃন্দ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com