
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ক্যাফেটেরিয়ার জন্য ভবন বরাদ্দ থাকলেও তার সুবিধা ভোগ করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। ক্লাসরুম সংকট আর টিএসসি না থাকার কারণ দেখিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার জন্য বানানো ভবনটিকে বিভিন্ন সময়ে ক্লাসরুম, বিভিন্ন সংগঠনের অফিসরুম, নতুন ছাত্রী হল ও বর্তমানে শিক্ষকদের মিলনায়তনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১২ বছর পরও ক্যাফেটেরিয়া চালু না থাকায় অসন্তোষ জানিয়েছে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা। এর ফলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর প্রথম পর্যায়ের উন্নয়ন প্রকল্পে (২০১৩-১৪) ক্যাফেটেরিয়ার জন্য আলাদা ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবন নির্মাণের পরে অল্প কিছুদিন ক্যাফেটেরিয়া চালু থাকলেও ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে অজ্ঞাত কারণ দেখিয়ে সাবেক উপাচার্য খন্দকার নাসির উদ্দিন অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ করে দেন। এরপর সেই ভবনে নতুন ছাত্রী হল সাইনবোর্ড টানিয়ে সেখানে ছাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করলেও সেখানে ছিল না হলের কোনো রকম ন্যূনতম সুযোগ সুবিধা। ২০১৯ সালে ভিসি বিরোধী আন্দোলনের পরপর ভবনটি খালি করা হলেও সেই ভবনটি বিভিন্ন সময়ে ক্লাসরুম, বিভিন্ন সংগঠনের অফিসরুম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় মেইন গেট নামক স্থান থেকে শুরু করে আশেপাশে এলাকায় মোট খাবার হোটেল গড়ে উঠেছে প্রায় ২০-২৫টি। হোটেলগুলোতে অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার রান্না ও পরিবেশন করা হয় প্রতিনিয়ত। আবার বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারণে সব খাবার হোটেলগুলোতে খাবারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। আবার এ দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির জের ধরে হলগুলোতেও ডাইনিং সিস্টেম অর্নিদিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ক্যাফেটেরিয়াটি চালুর দাবি জানিয়ে আসলেও আশ্বাস দিয়ে তাতে কোন সাড়া দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, একাডেমিক প্রয়োজনে দীর্ঘ সময় ক্যাম্পাসে অবস্থান করলেও খাবার গ্রহণের জন্য তাদের নির্ভর করতে হয় ক্যাম্পাসের বাইরের বিভিন্ন হোটেলের ওপর। তাদের অভিযোগ, এসব হোটেলে একদিকে যেমন খাবারের উচ্চমূল্য গ্রহণ করা হয়, অন্যদিকে খাবারের মান নিয়েও থাকে সংশয়।
ক্যাফেটেরিয়া না থাকায় দুর্ভোগের কথা জানিয়ে বশেমুরবিপ্রবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগ (১৭-১৮) সেশনের শিক্ষার্থী রাফিউজ্জামান ওয়াসিক জানান, ক্যাফেটেরিয়া থাকলে তা চালু হচ্ছে না, এতে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্লাসের ফাকে নুন্যতম কিছু খাওয়ার জন্যেও যেতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে, যা সবসময় স্বাস্থ্যকর হয় না, এ পরিস্থিতি ক্যাফেটেরিয়া চালু হওয়া জরুরী প্রয়োজন হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বশেমুরবিপ্রবি উপচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব বলেন, ক্যাফেটেরিয়া চালুর উদ্যোগ এর আগেও নেওয়া হয়েছিল কিন্তু কাজ হয় নি। আবার উদ্যোগ নিতে হবে, এক্ষেত্রে প্রভোস্ট, কর্মচারী, কর্মকর্তা ও বাবুর্চিদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ভর্তুকি স্বল্পতায় ও দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারণে স্বল্প মূল্যে খাবার সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
বিবার্তা/অহনা/এমএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]