বৃষ্টি হলেই ভাঙা ও মরিচা ধরা টিন থেকে দেয়াল ঘেঁষে পানি পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের মসজিদে। বৃষ্টির পানি ছাড়াও মসজিদটি নানা সমস্যা জর্জরিত।
জানা যায়, স্যার এ এফ রহমান হল মসজিদের ইমাম হাফেজ আমির হোসাইন ২০১৮ সালে স্ট্রোক করেন। পরে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হলেও এখন অনেকটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। এছাড়াও প্রতিদিন দুপুরে জোহর এবং আসর ২ ওয়াক্ত মসজিদে এসে হাজিরা দেন তবে দিনের অন্যান্য ওয়াক্তে হলের শিক্ষার্থীরা নামাজ পড়ান। ইমাম সাহেব অন্যের সাহায্যের ছাড়া মসজিদে আসতেও পারেন না।
মসজিদের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে হলের শিক্ষার্থী বুলবুল বলেন, মসজিদের এমন নাজুক পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কোনো হলে নেই। এসব বিষয়ে প্রশাসনের কোনো খেয়াল নেই বলে অভিযোগ এই শিক্ষার্থীর। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে, অল্পতেই মসজিদের মেঝেতে পানি জমে যার কারণে প্রায় সময় মসজিদের কার্পেটগুলো ভিজে যায়। আর জুমার নামাজের সময় মসজিদের মাইক্রোফোনের সমস্যা হয় দেখে মুকাব্বার দিয়ে নামাজ পড়াতে হয়।
মসজিদের ইমামের বিষয়ে এই শিক্ষার্থী বলেন, মসজিদের ইমাম বৃদ্ধ হওয়ায় এখন শারীরিক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন। প্রতিদিন নামায পড়াতে আসতে পারেন না, আসলেও দিনে শুধু দুপুর এবং আসরের সময় আসেন, মাঝে মাঝে কেরাতেও সমস্যা হয় যা খুবই কমন ব্যাপার। মসজিদে একজন পার্মানেন্ট ইমাম দরকার। এইদিকেও হল প্রশাসনের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই বলে আফসোস করেন এই শিক্ষার্থী।
হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সালেহ উদ্দিন আহমেদ সাজু বলেন, আমরা মসজিদের সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রাধ্যক্ষের নিকট গিয়েছি কিন্তু তিনি অবকাঠামো উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশাসনিক জটিলতা কথা বলে আসছেন। আমার প্রশ্ন সেখানে মসজিদকে দ্বিতল ভবনে রূপদান সম্ভব নয় সেখানে কথায় কথায় মসজিদের ক্ষেত্রে এতো অবকাঠামোগত উন্নয়ন এর কথা কেন আসে? প্রতিটা হলের নিজস্ব একটা হল উন্নয়ন ফান্ড থাকে সেখানে থেকেও কি এই মসজিদের সাউন্ড সিস্টেম আর ছাউনি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়?
প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান বিবার্তা২৪ ডটনেটকে বলেন, হলের মসজিদটি ঝুলন্ত একটা মসজিদ হয়ে গেছে। টিনে মরিচা ধরে বৃষ্টি হলে পানি পরে। মসজিদের সমস্যার কথা আমি প্রশাসনকে ২ মাস আগেই জানিয়েছি, বাজেট হচ্ছে, আশা করছি খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
ইমামের বিষয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, ইমামের নিজেরই নিয়ন্ত্রণ নেই। অনেকসময় ছাত্ররাই সেখানে নামাজ পড়ায়। একবার ইমাম দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলো এবং আমি সেটা ফরওয়ার্ড করেছিলাম। পরে আবার কীভাবে তার বেতন চালু হয়ে গিয়েছে তা আমি জানি না। আমি উপাচার্যকে ইমামের বিষয়টি অনেকবার জানিয়েছি। তবে হল প্রশাসনের হাতে ইমামের বিষয়টি নেই বলেও তিনি জানান।
বিবার্তা/সাইদুল/জনি/ফরিদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]