শিরোনাম
কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যু: ফের ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:২৮
কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যু: ফের ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
খুলনা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। পূর্বের তিন সদস্যর কমিটি বাতিল করা হয়েছে। কুয়েটের ৭৬তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।


শনিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও তথ্য শাখার রিপোর্টার কাম ক্যামেরাম্যান মো. মনিরুল ইসলাম সাগরের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬তম জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩ ডিসেম্বর বিকেল ৪টার মধ্যে আবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান ভূঁইয়া এ সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন।


অপরদিকে গত ২ ও ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬তম জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িত অপরাধীদের শনাক্তকরণসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি পর্যালোচনা করত: সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিতে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।


কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমাদ, সদস্য প্রফেসর ড. খন্দকার মাহবুব হাসান, সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মো. আলহাজ উদ্দীন, পুলিশ কমিশনার, কেএমপি, খুলনার মনোনিত একজন প্রতিনিধি (ন্যুনতম সহকারী কমিশনার পদমর্যাদা সম্পন্ন) এবং জেলা প্রশাসক, খুলনার মনোনিত একজন প্রতিনিধি (ন্যুনতম নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পদমর্যাদা সম্পন্ন)।


কমিটিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে উল্লিখিত বিষয়ে তদন্ত করত: সুপারিশসহ রিপোর্ট ভাইস-চ্যান্সেলর বরাবর দাখিল করতে অনুরোধ করা হয়েছে।


উল্লেখ্য, এ সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্বের স্মারক নং- খুপ্রবি/১৭৮৬/০৩ তাং ৩০ ডিসম্বর গঠিত তদন্ত কমিটি বাতিল করা হয়েছে।


এ‌দি‌কে কু‌য়েট বন্ধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা ই‌তিম‌ধ্যে হল ছে‌ড়ে‌ছেন। ক্যাম্পাসে পু‌লিশ মোতা‌য়েন র‌য়ে‌ছে।


অভিযোগ রয়েছে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়েছে। বর্তমান ছাত্রলীগ সভাপতি সরকারি চাকুরি পাওয়ার পর পরই নতুন কমিটি আসার প্রাকমুহুর্তে সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ভাগ হয়ে পড়েছে কয়েকটি উপদলে। এর ভেতর একটি প্রভাবশালী উপদল বর্তমান কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।


সম্প্রতি কুয়েটের লালন শাহ হলে ছাত্র আবাসিক হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য-ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে, সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান প্যানেলের বিরুদ্ধে নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রভাবিত করার প্রচেষ্টার অভিযোগ ওঠে।


ওই প্যানেলের সদস্যরা, হলের প্রভোষ্ট ড. সেলিম হোসেনকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে আসছিলেন, তাদের মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচন করার জন্য।


তারই ধারাবাহিকতায়, গত মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের একটি ক্যাডার গ্রুপ ক্যাম্পাসের রাস্তা হতে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা করা শুরু করে।


পরবর্তীতে তারা শিক্ষককে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষ (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) এ প্রবেশ করে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধাঘন্টা ওই শিক্ষকের সাথে রুদ্ধদার বৈঠক করে। এতে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন ও অসুস্থ হয়ে যান।


পরবর্তীতে, শিক্ষক ড. সেলিম হোসেন দুপুরে খাবারের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস নিকটস্থ বাসায় যাওয়ার পর ২ টা ৩০ মিনিটের এ তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না।


পরে, দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ড. সেলিম একজন অত্যন্ত সজ্জ্বন সৎ মেধাবী শিক্ষক। ছাত্রবান্ধব হিসেবে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে ৷ কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিলোনা। ব্যক্তিজীবনে অত্যন্ত অল্প বয়সে তিনি দেশের বাইরে থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে ২০২০ সালে অধ্যাপক পদোন্নতি পান।


পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে ড. সেলিম তৃতীয়। ২০০০ সালে স্থানীয় কুষ্টিয়া জেলার বাঁশগ্রাম ইউনাইডেট বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কুমারখালী উপজেলায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিলেন তিনি। ২০০২ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে স্টার নম্বর নিয়ে পাস করেন। এরপর কুয়েটে ভর্তি হন। পড়াশোনা শেষে সেখানেই শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এরপর বৃত্তি নিয়ে জাপানে এক বছর এবং পরে অস্ট্রেলিয়াতে চার বছর পড়াশোনা করেছেন।


ড. সেলিমের স্ত্রী সাবিনা খাতুন রিক্তা গণমাধ্যমকে জানান, ৩০ নভেম্বর সকালে তার স্বামী হাসি মনে কুয়েটে যান। আর দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটের দিকে বাসায় আসেন। তখন তাকে খুবই বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। অন্যদিন বাসায় এসেই মেয়েকে কোলে তুলে নিতেন। বাবা না এলে মেয়ে কখনো খেত না। কিন্তু ওইদিন বাসায় এসেই তিনি আমাকে ‘ছাত্ররা তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার কথা’ জানান। দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন বলেও জানিয়েই নিজের কক্ষে চলে যান। তখন তার চোখেমুখে ভয় ছিলো। এরপর তিনি গোসল করতে বাথরুমে ঢোকেন।


তিনি বলেন, ‘কুয়েট কর্তৃপক্ষ এ ঘটনা নিয়ে মামলা না করলে আমি নিজেই বাদী হয়ে মামলা করব। আমার স্বামী হত্যার বিচার চাইব। আমার মেয়েকে এতিম করা হয়েছে। জড়িতদের ফাঁসি চাই। ক্ষতিপূরণ চাই।


কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সেলিমের মৃত্যুর পর সাধারণ সভা করে আমরা এ ঘটনায় দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে জন্য কুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছি। পাশাপাশি শিক্ষক সেলিমের নিয়মিত পাওনার বাইরে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অতিরিক্ত এক কোটি টাকা পরিবারকে দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।


এদিকে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) শিক্ষক সমিতি প্রতিবাদ জানিয়েছে।


খুবি শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রচার সম্পাদক ড. প্রশান্ত কুমার দাসের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।


এতে উল্লেখ করা হয়- খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি স্তম্ভিত ও মর্মাহত। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একদল শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষক লাঞ্ছনার যে অভিযোগ উঠেছে তা তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণ করে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হোক।


এ ঘটনার প্রতিবাদে কুয়েটের সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যে প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে।


অপরদিকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে ছাত্রলীগ।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান বলেন, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ‘কুচক্রী মহল’ নোংরা রাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছে। ওই শিক্ষকের মৃত্যুকে রাজনৈতিকভাবে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে।


শিক্ষক সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার সঙ্গে জড়িত কারা, এমন প্রশ্নের জবাবে সাদমান নাহিয়ান বলেন, প্রথমত এখানে অনেকগুলো সংগঠনই তাদের মতো করে রাজনীতি করছে। শিক্ষকদের একটা অংশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের একটা অংশ ও শিক্ষার্থীদের একটা অংশ আছে। প্রত্যেকে ব্যক্তিগত কিছু স্বার্থের জায়গা থেকে এগুলো করছে। সামনে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন, কর্মকর্তাদের সংগঠনের নির্বাচন। এ জন্য তারা সবাই সবার জায়গা থেকে এটাকে ইস্যু বানিয়ে কথা বলছে। একই সঙ্গে আমাদের সংগঠনের অন্য অংশের কিছু নেতা-কর্মী এবং ভিন্ন মতাদর্শের কিছু শিক্ষার্থীও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।


তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস বিভাগের অধ্যাপক সেলিম হোসেনের অকালমৃত্যুতে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা গভীরভাবে শোকাহত। সেলিম হোসেন ১১ মাস আগে কুয়েট লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব পান। যখনই কোনো নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ পান, তখন ছাত্রকল্যাণ কমিটির পক্ষ থেকে প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে হলের ফাইনাল ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।


কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান ওই দিন অধ্যাপক সেলিম হোসেনের সঙ্গে দেখা করার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচিতি হওয়া এবং হলের নানা কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানানোর জন্য মঙ্গলবার দুপুর ১২টার সময় প্রাধ্যক্ষ নিজ কার্যালয়ে একটি মিটিং নির্ধারণ করেন। ক্লাস শেষ করে পূর্বনির্ধারিত মিটিংয়ে যোগ দিতে শিক্ষার্থীদের আনুমানিক ৪০ মিনিট বিলম্ব হয়। পরে পথে প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা হয় এবং তাকে বিলম্বের কারণ জানানো হয়। তখন তিনি আমাদের তার কার্যালয়ে আসতে বলেন। এরপর প্রাধ্যক্ষ তার কার্যালয়ে তালা খুললে শিক্ষার্থীরা তার অনুমতি সাপেক্ষে ভেতরে প্রবেশ করে।


সব শিক্ষার্থীর স্থান সংকুলান না হওয়ায় প্রাধ্যক্ষ সেলিম হোসেন সিনিয়রদের ভেতরে বসতে এবং জুনিয়রদের কিছুক্ষণ বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। সিনিয়রদের সঙ্গে তার শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর তিনি বাইরে অপেক্ষমাণ ছাত্রদের ডেকে ভেতরে আনেন। এ সময় তিনি তাদের বলেন, আমার তো আড়াইটায় ল্যাবে কাজ আছে। আমি সন্ধ্যায় হলে গিয়ে তোমাদের সঙ্গে পরিচিত হব। এরপর তিনি বিদায় নিয়ে বের হন।


সাদমান নাহিয়ান বলেন, আমরা জানি না শিক্ষক সোহেল হোসেনের মৃত্যুর সঠিক কারণ কী। তবে মৃত্যুসনদ অনুসারে জেনেছি, তিনি স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি হলের অভিভাবক। হলসংক্রান্ত কথাগুলোতে তার কাছে পেশ করার জন্যই তো আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। আমাদের এই দেখা করাটাকেই কেন্দ্র করে একটা পক্ষ আমাদের অপরাধী বানানোর চেষ্টা করছে। তারা শুধু অপরাধী বানানোর চেষ্টাই করছে না, বিবৃতি পর্যন্ত দিচ্ছে। উপাচার্য বরাবর দাবি জানাচ্ছি দেখা করার ফুটেজ দেখেই আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।


এদিকে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) সিন্ডিকেট সভা শুরু হওয়ার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। তাঁরা ছাত্ররাজনীতি বন্ধ না করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে।


এই দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং কুয়েটের শিক্ষকদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি করে যদি দোষী পাওয়া যায় তবে তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি কোনোভাবেই বন্ধ না করা, অধ্যাপক সেলিমের পরিবারকে আগামী এক মাসের মধ্যে এক কোটি টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া, তাঁর পরিবারের চাকরিযোগ্য অন্তত এক সদস্যকে যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী চাকরি দেয়া এবং শিক্ষক সমিতির ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার দাবি প্রত্যাহার করা।


বিবার্তা/তুরান/বাবর

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com