শিরোনাম
গ্রীষ্মকালেও ফলবে উচ্চ ফলনশীল টমেটো
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:৪৫
গ্রীষ্মকালেও ফলবে উচ্চ ফলনশীল টমেটো
শেকৃবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টমেটো শীতকালীন সবজি হলেও পুষ্টিগুণ ও নানাবিধ ব্যবহারের জন্য সারাবছরই এর কদর রয়েছে ৷ শীতকালে টমেটোর উচ্চ ফলন হলেও গ্রীষ্মকালে তেমনটা ফলে না। এজন্য গ্রীষ্মকালে এর মূল্য থাকে সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে ।


বিশেষজ্ঞদের মতে, ফলন কম হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ টমেটোর ঢলে পড়া রোগ । এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রায় শতভাগ গাছ মারা যায়।


তবে, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) একদল গবেষক দাবি করেছেন উচ্চ ফলনশীল জাত নয়, শুধুমাত্র মাটির জৈব শোধনের মাধ্যমে এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব । তারা মাটির জৈব শোধন করতে সরিষার খৈল ব্যবহার করেছেন। এতে শতভাগ সাফল্য পেয়েছেন। এ পদ্ধতিতে চাষ করলে কৃষক লাভবান হবে এবং মূল্যও সাধারণের নাগালের মধ্যে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।


বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের আর্থিক সহযোগিতায় উক্ত গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন ৷ এতে সহায়তা করেছেন স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মো. আরিফুল ইসলাম ।


গবেষকেরা জানান, অতি উষ্ণ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া ও উদ্ভিদ কৃৃমির জন্য আদর্শ পরিবেশ। গ্রীষ্মকালে মাটি অতি উষ্ণ ও আর্দ্র থাকে। ফলে টমেটো গাছ খুব সহজেই ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, প্ল্যান্ট নেমাটোডা বা উদ্ভিদ কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয় ।


গবেষক অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন বলেন, বেশিরভাগ গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ বেশি হয় দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে। কোন গাছ যদি ঢলে পড়া রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে শতভাগ মৃত্যু ঘটে। তাই গ্রীষ্মকালে টমেটোর ভাল দাম থাকলেও চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ফলে গ্রীষ্মকালে পাওয়া টমেটোর বেশিরভাগই সংরক্ষণ করা। এর দামও অনেক বেশি।


ঢলে পড়া রোগের লক্ষণ সম্পর্কে তিনি বলেন, গাছ বৃদ্ধির যে কোনো সময় এ রোগ হতে পারে এবং ব্যাপক ক্ষতি করে। আক্রান্ত গাছের বয়স্ক পাতাগুলো নিচের দিকে বেঁকে যায় ও ঢলে পড়ে। ধীরে ধীরে পুরো গাছই নেতিয়ে পড়ে ও মরে যায়। গাছের কাণ্ডে ও শিকড়ে বাদামি দাগ পড়ে।গাছে প্রথমে কাণ্ডের এক পাশের শাখার পাতাগুলো হলদে হয়ে আসে এবং পরে অন্যান্য অংশ হলুদ হয়ে যায়। রোগ বৃদ্ধি পেলে সব পাতাই হলুদ হয়ে যায় এবং অবশেষে সম্পূর্ণ শাখাটি মরে যায়। এভাবে পুরো গাছটাই ধীরে ধীরে মরে যায়।


প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে এই গবেষক বলেন, এ রোগ সাধারণত গ্রীষ্মেকালে হয় কারণ মাটির তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা উভয়ই বেশি থাকে। তাই যদি আমরা মাটির তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা কমাতে পারি, তাহলে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও উদ্ভিদ কৃমি অনুকূল পরিবেশ পাবেনা । এজন্য টমেটোর চারা লাগানোর সাত দিন আগে মাটির সাথে নির্দিষ্ট পরিমাণে সরিষার খৈল মিশিয়ে মাটি জৈব শোধন করতে হবে । শোধনকৃত মাটিতে টমেটোর চারা লাগালে আর ঢলে পড়া রোগ হবে না । মাটি জৈব শোধন করতে ১০ কেজি মাটির সাথে ৫০০ গ্রাম সরিষার খৈল ব্যবহার করা হয়। সরিষার খৈল মিশ্রিত মাটিকে ৭-১০ দিন শুকাতে হবে।


তিনি আরো বলেন, যদি আমরা কৃষকদের মধ্যে এই সহজ মাটি শোধন ব্যবস্থাপনাটি ছড়িয়ে দিতে পারি তাহলে কৃষকও লাভবান হবে। একই সাথে বাজারে টমেটোর দাম কমে আসবে। এবং টাটকা টমেটোও পাওয়া যাবে।


বিবার্তা/তানিম/ইমরান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com