গত ১৪ই এপ্রিল, বাংলাদেশ হাই কমিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে পহেলা বৈশাখের চিরায়ত সঙ্গীত এসো হে বৈশাখ এর তালে তালে অটোয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা বাংলা সন ১৪২৫ কে বরন করে নেয় অত্যন্ত উৎসবমুখর এবং আনন্দময় পরিবেশে।
এ উপলক্ষে রিশেলিউ ভানিয়ের কমিউনিটি সেন্টারে দিনব্যাপী বৈশাখী আয়োজনটি কয়েকটি পর্বে বিভক্ত ছিল :
বৈশাখী মেলা:
বৈশাখী আয়োজনের শুরু হয় সকালে বৈশাখী মেলার উদ্বোধনীর মধ্য দিয়ে। এ মেলার বিভিন্ন স্টলে দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক, হস্তশিল্প এবং মুখরোচক বাঙালি খাবারের পসরা সাজানো হয়। গতানুগতিক স্টলের পাশাপাশি, কানাডায় পরিচালিত বাংলাদেশীদের বিভিন্ন সংগঠনের সামাজিক কর্মকাণ্ডের সচেতনতামূলক স্টল বসে। প্রবাসীদের মাঝে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং এ সংক্রান্ত সাফল্য তুলে ধরার জন্য একটি স্টল রাখা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ হাইকমিশনের জন্য নির্ধারিত স্টল থেকে অভ্যাগত অতিথিদের রকমারি দেশীয় খাবার পরিবেশন করা হয়। এ মেলা পরিনত হয় কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশীদের মিলন মেলায়। পহেলা বৈশাখের এ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে অটোয়া, মণ্ট্রিল, টরেন্টো থেকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী অংশগ্রহণ করেন।
উন্নয়ন মেলা:
হাই কমিশনের কাউন্সেলর জনাব সাখওায়াত হোসেন এর সঞ্চালনায় উন্নয়ন মেলা উপলক্ষে বাংলাদেশের উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় যার সভাপতিত্ব করেন কানাডায় বাংলাদেশের মান্যবর হাই কমিশনার জনাব মিজানু্র রহমান। উক্ত আলোচনার মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন হাই কমিশনের বাণিজ্য বিষয়ক প্রথম সচিব জনাব শাকিল মাহমুদ। আলোচনা সভায় কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিজ নীপা ব্যার্নাজী স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অগ্রসরতা এবং সামাজিক উন্নয়নের যে উদাহরন স্থাপন করেছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। মান্যবর হাই কমিশনার তার সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে যেমন শিক্ষা , স্বাস্থ্য , যোগাযোগ, প্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্যর এক তুলনামূলক বিশ্লেষণ পেশ করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকা এবং তাদের গঠনমূলক ভূমিকার জন্য অভিনন্দন জানান এবং এ ক্ষেত্রে তাদের অব্যাহত অবদানে উৎসাহিত করেন। সবশেষে, বাংলাদেশের উন্নয়ন সংক্রান্ত পুথিপাঠ করে শোনান হাই কমিশনের কাউন্সেলর জনাব সাখওায়াত হোসেন।
পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান:
এরপর, গত ১৭ই মার্চ, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতা এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শিশু কিশোরদের মাঝে পুরস্কার এবং সনদ বিতরন করেন মান্যবর হাইকমিশনারের সহধর্মিণী মিজ নিশাত রহমান। এই পর্বটি সঞ্চালনা করেন জনাব শাকিল মাহমুদ। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে মারুফ হাসান সাকি, মৈত্রী ইলিয়াস, মর্ম ইলিয়াস, উমায়মা আহমেদ, যুবায়দা যারা, মানহা মহসীণ, মেহরাজ ফেরদৌস টোকী, সারাহ মাহমুদ, নাজিফ শাফি, নুসাইবা শাফি, লাবিবা তাবাসসুম এবং আরিব সাইফুদ্দীন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
সবশেষে, সন্ধ্যায়, হাই কমিশনের কাউন্সিলর রাজনৈতিক মিজ ফারহানা আহমেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় শুরু হয় হাই কমিশন আয়োজিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরুতে, স্বাগত বক্তব্যে মান্যবর হাই কমিশনার জনাব মিজানু্র রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নববর্ষ ১৪২৫ এর আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। তিনি বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং কৃষ্টি বিদেশের মাটিতে তুলে ধরার জন্য সকলকে আহ্বান জানান।
এরপর, পহেলা বৈশাখের আমেজে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে সকলে, আর গান, নাচ, কবিতা আবৃতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো প্রাঙ্গণ। শিশু কিশোরদের পর্বে সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইমানিয়া, রুহান, রাইহান, আব্রান, আনিয়া, আলিয়া, রোদোশি, মানহা, আরিসা, আরজিন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন ফারজানা মওলা, আফরোজা খান লিপি, সাখওয়াত হোসেন, শারমিন সিদ্দিক শামা, মাসুদুর রহমান, কারিনা দত্ত কর্মকার, প্রিয়া চান্দ্রান, মানেকা চিতিপ্রলু, ফারাহ নাজ, শিশির শাহনেওায়াজ, রোয়েনা খানম, ফারহানা আহমেদ চৌধুরী এবং ডালিয়া ইয়াসমিন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাইকমিশনের মিনিস্টার এবং টরেন্টোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল জনাব নাইম উদ্দীন আহমেদ সহ কানাডায় প্রবাসী সকল স্তরের বাংলাদেশিগন। অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন হাই কমিশনের হেড অব চ্যান্সারি জনাব আলাউদ্দিন ভুঁইয়া ।
বিবার্তা/ফারহানা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]