দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার বন্ধের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রী ও কূটনীতিকদের তৎপরতায় শ্রমবাজারটি পুনরায় খুললেও রিক্রুটিং এজেন্সির ষঢ়যন্ত্রে মালয়েশিয়ায় সরকারিভাবে কর্মী পাঠানোর বর্তমান পদ্ধতি জিটুজি (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) আবারো প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
জানা গেছে, পরিবারের মুখে হাসি ফোঁটাতে মালয়েশিয়ার মেলাক্কা শহরের জালান টেক, তামান আয়ের কেরাহ হাইট এলাকার মোহামেদ রেশা বেরাকাত এসডি এন বিএইচডিতে কাজের আশায় ৩৯ জন শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে আসে বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু মালিকপক্ষের অমানবকি আচরণে তাদের সে স্বপ্ন আজ দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, জনশক্তি রফতানিকারক আল ইসলামের হাতে জন প্রতি প্রায় সাড়ে ৪ লাখ করে টাকা তুলে দিয়ে মালয়েশিয়া এসেছেন তারা। থাকা-খাওয়া দূরে থাক ৫ মাস ধরে কোনো কাজই নেই, বাড়িতে তারা কোনো টাকা পাঠাতে পারে না। নেই কোনো বেতন ভাতা। দিনে এক বেলা খাবার দেয়ার কারণে তাদের শরীর হয়ে গেছে দুর্বল। যা ছিল এক ধরনের বন্দী জীবন। আর এই বন্দী জীবন থেকে মুক্তি পেতে ৩৯ জনের মধ্যে ২৮ জন ১২ এপ্রিল রাতের আধারে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে।
এরা হলেন, বি-বাড়িয়ার জসিম উদ্দিন, আমিনুল ইসলাম, বশির মিয়া, কুমিল্লার ফারুক, নাসু মিয়া, শামীম, সজীব, তোতা মিয়া, ফয়সল সুমন, ভোলার আজাদ, শরিফ, জাকির, আব্দুস সাওার, পাবনার আইনুল, যশোরের তবিকুর, ফারুক, চাঁদপুরের মমিন মিয়া, চুয়াডাঙ্গার আব্দুর রহিম, হাবিবুর সুহেল, নাসিম, বাগেরহাটের জাহাঙ্গীর, নোয়াখালীর নাসির চট্টগ্রামের হেফাজ উদ্দিন, কিশোরগঞ্জের শফিকুল ইসলাম।
জিটুজি প্লাস প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়ার সরকার-নির্ধারিত খরচ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলেও তাদের মালয়েশিয়াতে আসতে খরচ পড়েছে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। যা নির্ধারিত খরচের আট থেকে দশ গুণ বেশি।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, খরচের বিষয়ে তাদের মুখ খুলতে মানা করে দেয়া হয়েছে। মুখ খুললে তাকে আর মালয়েশিয়া পাঠানো হবে না। এমন কি জমাকৃত টাকাও ফরেত দেয়া হবে না। নানা কারণেই কর্মীরা ৪০ হাজার টাকার কথাই সব জায়গায় বলে বেড়ায়।
এদিকে বি-বাড়িয়ার জসিম উদ্দিনের বাবা আরু মিয়া ঢাকাস্থ জনশক্তি কর্মসংস্থান ব্যুরো অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে ১৩৬০ স্মারকে ১১/০৪/২০১৮ইং তারিখে কর্মসংস্থানের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) মুহাম্মদ আতাউর রহমান এই ৩৯ জন কর্মীর ৫ মাসের বেতন ভাতা না দেয়ার কারণ ও অসহায় কর্মীদের কাজের ব্যবস্থাসহ গৃহীত পদক্ষেপ নিতে দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলরের কাছে লিখিত নোটিশ পাঠিয়েছেন।
বিবার্তা/আরিফ/সোহান
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]