বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কানাডা কমান্ড কাউন্সিল, কুইবেক শাখা ও হেমায়েত বাহিনীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি ও গল্পকার রাজ্জাক হাওলাদারের উদ্যোগে সম্প্রতি মন্ট্রিয়লস্থ লাঁ ফিউশন ইন্ডিয়ান রেঁস্তোরায় বীর বিক্রম হেমায়েত উদ্দিন ও বীর প্রতীক মাহবুবুর রব সাদী স্মরণে শোক ও স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কানাডা কমান্ড কাউন্সিল সদস্য ও সমন্বয়কারী মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম খানের (সাবেক সংসদ সদস্য) সভাপতিত্বে স্মরণ ও শোকসভা শুরুতেই প্রয়াত দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল শহীদ স্মরণে উপস্থিত সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রম সম্পর্কে মুখ্য আলোচক হিসেবে হেমায়েত বাহিনীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাক হাওলাদার তাঁর (হেমায়েত উদ্দিন) জীবনালক্ষ্যের উপর আলোচনা করেন এবং তাঁকে স্মরণ করে স্বরচিত একটি নাতিদীর্ঘ কবিতা আবৃত্তি করেন। মাহবুবুর রব সাদী বীর প্রতীক সম্পর্কে মুখ্য আলোচক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও লেখক তাজুল মোহাম্মদ এবং মাহবুবুর রব সাদীর রণাঙ্গনের সহযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মুহিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধকালীন সাদীর সাহসী ভূমিকা নিয়ে আলোচনা ও স্মৃতিচারণ করেন।

রনজিৎ মজুমদারের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আলী আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডওয়ার্ড গমেজ, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব অপূর্ব কুমার বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজহারুল ইসলাম ভূঁইঞা, কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর মজিদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রিয়াল স্টেট ব্যবসায়ী আব্দুর রশীদ খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুম রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা স ম ইসমাইল হোসেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা বাবু সুনীল গোমেজ, কাজী আশরাফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক দিলীপ চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কামরুজ্জামান, সাংস্কৃতিক কর্মী জাহিদ হাসান কমল, অধ্যক্ষ বুলবুল নাহার, প্রজন্ম ৭১ এর নেত্রী বেগম সাজেদা হোসেন ও বেগম ফরিদা পারভিন প্রমুখ।

বক্তারা দুই বীর সন্তান হেমায়েত উদ্দিন ও মাহবুবুর রব সাদীর যুদ্ধকালীন রণাঙ্গনে তাঁদের বীরত্বগাঁথা ও সাহসিকতা নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন এবং বলেন, তাঁদের বীরত্বের দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা আমাদের সকলের জন্য অনুকরণীয়।

সভাপতি এই দুই বীরের বীরত্বকে স্মরণ করে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে দেশকে স্বাধীন করেছি এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা বিনির্মাণে ও দেশের উন্নয়নে দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত সকল মুক্তিযোদ্ধার অতন্দ্রপ্রহরীর মত পূর্বাপর কাজ করে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথভাবে সম্মানিত করেছেন, যা অতীতের কোন সরকার করেনি। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি প্রদান করার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসির নগরের হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি মন্দিরে অগ্নিসংযোগ ও মূর্তি ভাঙ্গার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ ও তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন এবং দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টাস্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

শোকসভার সঞ্চালক বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও মন্ট্রিয়লের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রঞ্জিত মজুমদার সভা পরিচালনা করেন।

বিবার্তা/সদেরা/জিয়া