শিরোনাম
বর্ণিল আয়োজনে অটোয়ায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালিত ​
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০১৭, ১০:৫০
বর্ণিল আয়োজনে অটোয়ায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালিত ​
কানাডা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বর্ণিল আয়োজন ও ​বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কানাডার রাজধানী অটোয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিন পালন করেছে বাংলাদেশ হাই কমিশন।​ ​অটোয়ার শিশুদের জন্য ​দিনটি​​​ ছি​ল​​ বিশেষ​ আনন্দঘন​। রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বিপুলসংখ্যক শিশু ও অভিভাবকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে ৩৫০ স্পর্ক্স স্ট্রিটে অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশন কার্যালয়।

 

অটোয়া ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন শহর থেকে আগত শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন ​করে বাংলাদেশ হাই কমিশন​। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল  ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, বাংলাদেশের খুশির দিন’ (‘ক’ গ্রুপ- ৪ হতে ৮ বছর বয়সী শিশু) এবং ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু’ (‘খ’ গ্রুপ- ৯ হতে ১৫ বছর বয়সী শিশু)। রচনা প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল- ‘মহান নেতা বঙ্গন্ধু’ (১৮ বছর পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত)।

 

​অটোয়া সেন্টারটাউন, অরলিন্স, বার হেভেন ও কানাটা থেকে ৩৫ জন শিশু এ​ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পর অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধুর জীবন, আদর্শ ও রাজনৈতিক সংগ্রামের ওপর বিস্তারিত আলোচনা। ​

 

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন কানাডা সফররত গণপ্রাজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, অনুষ্ঠানের সভাপতি ও কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর হাই কমিশনার মিজানুর রহমান এবং তার সহধর্মিনী নিশাত রহমান।

 

বাংলাদেশ হাই কমিশনের কূটনীতিকবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং হাইকমিশনের পরিবারের সকল সদস্য অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বিশেষ আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে যোগ দেন কানাডা আওয়ামী লীগ, অটোয়া আওয়ামী লীগ, কুইবেক আওয়ামী লীগ এবং অন্টারিও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকগণ, পেশাজিবী, শিক্ষক ও বিপুল সংখ্যাক অভিভাবক। ​

 

অনুষ্ঠান সমন্বয় করেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রথম সচিব অপর্ণা রাণী পাল​, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) দেওয়ান মাহমুদ, ও কাউন্সিলর মাকসুদ খান​।​ ব্যবস্থাপনায় প্রথম সচিব আলাউদ্দিন ভূঁইয়া। অঙ্কিত চিত্রকর্মের বিচারকার্য সম্পাদনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটির নেতৃত্ব দেন মিনিস্টার নাইম উদ্দিন আহমেদ।

 

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ‘ক’ গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকার করে সার্ভিনাজ সাইদী, দ্বিতীয় উমায়জা খন্দকার এবং তৃতীয় মানহা মোহসীন। ‘খ’ গ্রুপে ​​প্রথম হয় মারুফ সাকী, দ্বিতীয় উমায়মাহ খন্দকার এবং তৃতীয় জুবাইদা জারাহ।

 

পুরস্কার বিতরণীর পর কেক কেটে ও শিশুদের কেক খাইয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, হাই কমিশনার এবং উপস্থিত অতিথিবৃন্দ।

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। তিনিই বাঙালিকে দিয়েছেন আত্মপরিচয় এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। পৃথিবীর প্রতিটি শহরের যেখানে বাঙালি আছে, সর্বত্রই তার জন্মদিন পালিত হচ্ছে। আমাদের প্রবাসী প্রজন্ম জানছে- তাদের মাতৃভূমির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান, তাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে।

 

বাংলাদেশ হাই কমিশন আয়োজিত চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার প্রশংসা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রবাসের আজকের এ প্রজন্মই আগামী দিনে বিশ্বের বুকে বাংলাদশকে আরো উঁচুতে তুলে ধরবে। জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে সোনালি ভবিষ্যতের পানে এগিয়ে চলেছে। আমরা গর্বিত, আমরা বাঙালি। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। আমাদের নেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী নুর চৌধুরীকে কানাডা থেকে বাংলাদেশে ফেরত আনতে সরকার বদ্ধপরিকর এবং এ লক্ষ্যে সকল পদক্ষেপ নেয়া হবে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

 

তিনি আরো বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষার প্রসার, সকলের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা নিশ্চিত করাসহ ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং সামাজিক অগ্রগতিতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে রোল মডেল, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান। তার হাত ধরেই আমরা অর্জন করব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।

 

সভাপতির বক্তব্যে ​কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মিজানুর রহমান ​​বলেন, ‘​বঙ্গবন্ধু​ শুধু​ বাঙালি জাতির পিতা​ই নন, তিনিই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি​। সারা পৃথিবী বাংলাদেশকে তারই নামে চেনে। তার জন্ম না হলে বাংলাদেশেরই জন্ম হতো না। তার​ অবিসংবাদিত ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে​র কল্যাণেই​ ও তার নির্দেশিত সংগ্রামের ​পথ​ ধরেই​ ​স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। ​

 

তিনি বলেন,​ কানাডাতেই ​জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী​, খুনী নুর চৌধুরীর অবস্থান। জাতির পিতার ঘাতক নুর চৌধুরীর জন্য কানাডা​ বা পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রই ​আশ্রয়স্থল​ হতে পারে না। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে বিচারের রায় কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ এবং সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস কানাডায় কাজ করে চলেছে।​

 

সম্প্রতি সাস্কাচুয়ান প্রদেশে সফরকালে সেখানকার প্রিমিয়ার (মুখ্যমন্ত্রী) ব্রাড ওয়ালের সাথে এ বিষয়ে তার ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে জানিয়ে হাই কমিশনার বলেন, সাস্কাচুয়ানের প্রিমিয়ার ব্রাড ওয়াল নুর হোসেনকে বাংলাদেশে ফেরত দেয়ার বিষয়ে তার অনুরোধ কানাডার ফেডারেল সরকারের কাছে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরবেন বলে তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

 

তিনি বলেন, আপনারা ​অটোয়াসহ সমগ্র কানাডাপ্রবাসী হাজার হাজার ​বাংলাদেশী​ ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এ খুনির বিরূদ্ধে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ​ করুন এবং তাকে কানাডা থেকে বহিষ্কার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে আইনি সংশোধনের জন্য আপনাদের এমপিদের সমর্থন আদায়ের পদক্ষেপ অব্যাহত রাখুন।

 

​আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন কানাডা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান প্রিন্স এবং আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আব্দুল গাফফার, অধ্যাপক ওমর সেলিম শের, মুন্সী বশীর, গোলাম মুহিবুর রহমান, ইতরাত জুবেরী সেলিম, মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, তাজুল মোহাম্মাদ এবং এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহেল শাহরিয়ার।

 

বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও তার নেতৃত্বের বিকাশ নিয়ে শিশুদের আলোচনায় অংশ নেয়​ আরিব সাইফুদ্দিন এবং মাশকুরা তাবাসসুম। বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত কবি অজয় দাসের অনবদ্য কবিতা ‘বঙ্গবন্ধু: আদিগন্ত যে সূর্য’ - আবৃত্তি করেন দেওয়ান মাহমুদ।

 

​আলোচনা সভার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাগফিরাত কামনায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের সর্বাঙ্গীন কল্যাণ কামনা করে বিশেষ ফাতিহা পাঠ ও মোনাজাত করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শাহজাহান সিরাজ।

 

বিবার্তা/দেওয়ান/নিশি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com