জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৭ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে রবিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শতাধিক বাঙালি শিশু অংশ নেয়। এতে পুরো মিশন পরিণত হয় শিশুমেলায়।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের শুরুতে বেলা ১১টায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। রঙতুলি আর বর্ণিল সাজে আয়োজিত এ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন কিংস বোরো কমিউনিটি কলেজের আর্ট প্রফেসর চিত্রশিল্পী জেমী উইলকিনসন, ফাউন্ডেশন ফর আর্ট অ্যান্ড মেমরির পরিচালক চিত্রশিল্পী জ্যাক স্যাল এবং স্থানীয় চিত্রশিল্পী লেইন উইটকম।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শেষে জাতির পিতার ওপর একটি কুইজ অনুষ্ঠানে অংশ নেয় সমবেত শিশুরা। ‘ক’ গ্রুপে দ্বিতীয় গ্রেডের ছাত্রী তাসনিয়া নুর এবং ‘খ’ গ্রুপে সপ্তম গ্রেডের ছাত্রী নওশিন রহমান প্রথম স্থান অধিকার করে। অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মাঝে বঙ্গবন্ধু ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় স্থানীয় প্রবাসী বাঙালি ও মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৪৮ জন সন্তান অংশ নেয়।
মধ্যহ্ন বিরতি শেষে বেলা ২টায় শুরু হয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মূল পর্ব- আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ পর্বের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ তুলে ধরে একটি প্রামাণ্যচিত্র পরিবেশিত হয়। এতে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা অর্জন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের সাথে আন্তর্জাতিক ও কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকার বিভিন্ন দিক ফুটিয়ে তোলা হয়।
পরে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি।
প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের সন্তানদের আরো বেশি জাতির পিতার জীবন ও কর্মের বিষয়ে জানানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘যে দেশের সাথে নাড়ির বন্ধন, যে দেশে বাপ-দাদার ভিটা, সে দেশের প্রকৃত ইতিহাস প্রবাসের এই নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। বাঙালি বীরের জাতি। আমাদের রয়েছে বাহান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। এসকল ইতিহাস তুলে ধরে তাদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে হবে।’
এর আগে, দিবসটি উপলক্ষে আলোচনার সূত্রপাত করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে জাতির পিতাকে বছরের প্রতিটি দিনই স্মরণ করতে হবে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে তাই আজকের সকল আয়োজন শিশুদেরকে ঘিরেই করা হয়েছে।’
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি বলেন, ‘মার্চ মাস বঙ্গবন্ধুর জন্মমাস। সে কারণে এবং শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অগাধ ভালোবাসার স্বীকৃতিস্বরূপ তার জন্মদিনটিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন।’
পরে স্থানীয় ব্যান্ড দল ‘মাটি’, ম্যানহাটান বাংলা স্কুল ও বহ্নিশিখা সঙ্গীত নিকেতনের শিশু শিল্পীসহ স্থানীয় বাঙালি কমিউনিটি, বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানদের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান, দেশের গান, মুক্তিযুদ্ধের গান ও রবীন্দ্রসঙ্গীত, বঙ্গবন্ধুর জীবন-কর্ম নিয়ে কবিতা আবৃতি, সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করে।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী, নিউইয়র্কের বিশিষ্ট নাগরিক, মিডিয়া প্রতিনিধিসহ বিপুলসংখ্যক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা/খোকন/নিশি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]