শিরোনাম
কানাডায় বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০১৯, ১৬:৫৯
কানাডায় বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কানাডায় বাংলাদেশের শরণার্থীদের সংকট নিয়ে ‘বাঁচাও রোহিঙ্গা’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী তথ্য চিত্র প্রকাশ এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।


বাংলাদেশি ফটো সাংবাদিক ফোজিত শেখ বাবুর সমন্বয়ে কানাডা ন্যাশনাল অ্যাথনিক মিডিয়া, প্রেস কাউন্সিল, বেন-ক্যান যুব সংস্থা এবং আইইবি কানাডা ওভার সিয়েজ চাপটারের উদ্যোগে কানাডার স্ট্রিট টরন্টোর মেট্রো হলে এই অনুষ্ঠান হয়েছে।


স্থানীয় সময় সোমবার (১৯ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টায় আলোচনা সভা শেষে ফিতাকেটে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।


ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আব্দুল গাফফারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- প্রখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক আসাদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাকাউন্টেন্ট রুকনুজ্জামান, সঙ্গীত শিল্পী জাহিদ হোসেন, সাহিত্যিক অনুরুদ্ধ আলম, ফটো গ্রাফার নাদিম ইকবাল, ভিডিও বার্তায় যোগ দেন প্রধান আলোচক ওয়াশিম আহমেদ ব্যারিস্টার ও সলিসিটর, সি-প্রতিষ্ঠাতা ও অংশীদার এবং ওডাবু-এস আইন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মম কাজী।



সভায় বক্তারা জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে সহায়তা করতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছে কানাডা। এই বিষয়ে যত রকম সহযোগিতা প্রয়োজন তাই করবে কানাডা সরকার বলে জানান বক্তারা।


তারা আরো বলেন, এই ছবির মাধ্যমে ফুটে উঠেছে রোহিঙ্গাদের দুঃখ দুর্দশার চিত্র। এখনি যদি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান না করা হয় তবে ভবিষ্যতে এর খেসারত দিতে হবে পুরো বিশ্বকে।


সভায় ফোজিত শেখ বাবু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মমতাময়ী মায়ের মতো নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী । তিনি শুধু রোহিঙ্গাদেরই আশ্রয় দেননি, তিনি আশ্রয় দিয়েছে পুরো বিশ্বের বিবেককে। বর্তমানে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে সম্প্রীতির শান্তির দেশ এটাই তার প্রমাণ।



তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত গরীব অসহায় একজন মানুষ। একজন রিকশাওয়ালার ছেলে। রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা আমার হৃদয়ে যখন জেগে উঠল তখন ক্যামেরা নিয়ে ছুটে গেলাম সেই কক্সবাজার উখিয়া, রিফুজি ক্যাম্পে। নিজের ক্যামেরায় তাদের অসংখ্য ছবি তুললাম এবং আমাদের বাংলাদেশের কিছু সাংবাদিকের থেকে কিছু ছবি সংগ্রহ করে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছি। আজকে আমার ছবির মাধ্যমেই সব প্রমাণিত, তারপরও দু-চার কথা বলতে হয়- আজকে রোহিঙ্গারা যেমন দুঃখ-দুর্দশা কষ্ট ভোগ করছে আশির দশকে আমিও এই ধরনের দুঃখ-দুর্দশার কষ্ট ভোগ করেছি।


তিনি আরো বলেন, তবে আমি যখন দেশ-বিদেশে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ব জনমত সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বের হয়েছি তখনই স্থানীয় কিছু লোক যারা বাংলাদেশের মঙ্গল চায়না এবং রোহিঙ্গাদেরও মঙ্গল চায়না তারা আমার ফটো নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ দাঁড়করিয়েছে। তবে এতে আমি একটুও থমকে যায়নি। চাদের যেমন কলঙ্ক আছে আমারও না হয় একটু কলঙ্ক থাকলো। আমি এসেছি বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করার জন্য, আমি এসেছি পিতা-মাতাহীন শিশুদের নিজ জন্মভূমিতে ফিরিয়ে দিতে, আমি এসেছি গর্ভবতী শতশত অসহায় মা-বোনকে তাদের ভিটে-মাটি ফিরিয়ে দিতে। আমি এসেছি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে আপনাদের শিক্ষিত বিবেক কে জাগ্রত করতে।



বাবু বলেন, পরিশেষে আমি এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে একটাই দাবি জানাই, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সহকারে জাতিসংঘের সহযোগিতায় কঠোর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হোক। ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ যে আশ্রয় দিয়েছে এর অর্থ এই নয় যে তাদেরকে সারা জীবন রাখতে হবে।


তিনি বলেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক নেতাদের হস্তক্ষেপে রোহিঙ্গাদের দ্রুত নিজ দেশে পুনর্বাসিত করা হোক। একটি জাতিগোষ্ঠীর মাঝে ক্ষুদ্র কোন জাতিসত্তা বসবাস করলে সেই জাতির প্রতি মানবঅধিকার লঙ্ঘন হলে সেখান থেকে জন্ম নেয় বিভিন্ন উশৃঙ্খল গ্রুপ। তাই এই রোহিঙ্গারা শুধু বাংলাদেশের হুমকি নয়। হুমকি সারা বিশ্বের জন্য। আর এই ব্যাপারে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে একটি করে আলোকচিত্র প্রদর্শনী করার ইচ্ছে আছে সকলের সহযোগিতা পেলে।



এছাড়াও আমাকে ফটোগ্রাফি এবং অন্যান্য কাজে যারা সহযোগিতা করেছেন তারা হলো- দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ফটো সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন জয়, দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার ফটোসাংবাদিক হারুনুর রশিদ, ডেইলি নিউ এজ পত্রিকার ফটো সাংবাদিক সৌরভ, বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর অনলাইন পত্রিকার ফটো সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মোমিন, দৈনিক বণিক বার্তা পত্রিকার ফটো সাংবাদিক ফজলে এলাহী ওমর, দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ফটো সাংবাদিক রেহানা আক্তার, দৈনিক নবচেতনা পত্রিকার ফটো সাংবাদিক বাদল দাস, স্মৃতি কালার স্টুডিওর ভিডিও গ্রাফার আবুল হোসেন, স্মৃতি কালার স্টুডিওর ভিডিও গ্রাফার গোলাম কিবরিয়া সাইমন, অনুবাদক ওমর ফারুক জয়, অনুবাদক মোহাম্মদ তারেক, লেখক সওকত হোসেন জনী, লেখক মোহাম্মদ ফারুক হোসাইন এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনার শোহাগ হাসান।


বিবার্তা/বাবু/তাওহীদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com