ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে একই পরিবারের তিনজন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এটি ‘এনকে ফ্লাইটিস’ রোগও হতে পারে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন তারা। রোগা আক্রান্তরা হলেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশবাড়ি ইউনিয়নের বাদামবাড়ি উজিরপুর গ্রামের নাসিরুলের স্ত্রী দুলালী বেগম ও তার দুই শিশু সন্তান সিয়াম (৭) এবং মিতু (৫)।
চিকিৎসকরা আক্রান্তদের সাময়িক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দুলালী জানান, বুধবার রাতে তার শরীর দুর্বল হয়ে পড়লে বাড়িতে হাটা চলা করতে পারছিলেন না তিনি। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে ছোট মেয়ে মিতু বেশ কয়েক বার বমি করলে তার শরীরে জ্বর হয়। এছাড়াও বড় ছেলে সিয়ামের শরীরে জ্বর আসে এবং তার শরীরে ব্যথা অনুভব হলে তিনিও অনেক দুর্বল হয়ে পড়েন। এসময় উপায়ন্তর না পেয়ে তারা তিনজনই স্থানীয় বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঠাকুরগাঁওয়ে আসার পর তাদের সাময়িক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন চিকিৎসকরা।
ঠাকুরগাঁওয়ের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমার সেন বলেন, যেহেতু কিছুদিন পূর্বে বালিয়াডাঙ্গী এলাকায় নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছিলো। তাই ঝুঁকি ও উন্নত চিকিৎসার কথা বিবেচনা করে আক্রান্তদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এবিষয়ে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. আবু মো. খায়রুল কবির জানান, আক্রান্ত রোগীরা নিপাহ ভাইরাসের আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে তেমন অত্যাধুনিক মেশিন ও যন্ত্রপাতি নেই। তাই এবিষয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাথে পরামর্শ করে আক্রান্তদের রংপুরে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রক ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের চিকিৎসকদের সাথেও কথা বলা হয়েছে। তারা রোগটি সনাক্ত করার জন্য শুক্রবার রংপুরে আসবেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁওয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যুর পর কারণ অনুসন্ধানে ঢাকা ও রাজশাহীর থেকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রক ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের চিকিৎসকদের তদন্ত টিম আক্রান্ত এলাকায় তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে তারা ঢাকায় ফিরে গিয়ে ৩মার্চ সংশ্লিষ্ট বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে সর্ব শেষ মৃত ব্যক্তির শরীরে নিপাহ ভাইরাসের উপস্থিতি ও উপসর্গ পাওয়া যায় নিশ্চিত করেছিলেন তদন্ত টিম।
বিবার্তা/বিধান/আকবর
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]