শিরোনাম
সরকারি সাহায্যের আশায় ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসী
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০১৯, ১৫:৩২
সরকারি সাহায্যের আশায় ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসী
আকরাম হোসেন
প্রিন্ট অ-অ+

সরকারি সাহায্যের দিকে তাকিয়ে আছেন মিরপুর ১০ নম্বরের চলন্তিকা বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। রাজনৈতিক ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন অগ্নিকাণ্ডের পরপরই ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীর সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। এতে চিকিৎসা, খাদ্য, বস্ত্রসহ প্রাথমকি কিছু সাহায্য পাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। তবে তারা সরকারিভাবে এর স্থায়ী সমাধান চান।


ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা হলে তারা বিবার্তাকে জানান, আগুন আমাদের সর্বস্বান্ত করে গেছে। অবশিষ্ট কিছু নেই। সব শেষ হয়ে গেছে। এখন যারা আমাদের সাহায্য করছে তারা দুই-চার দিন পর থাকবে না। তখন আমাদের কী হবে। সরকার যেন আমাদের থাকার একটা ব্যবস্থা করে দেয়।


সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করছেন।



ঘটনার পর থেকেই ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ ক্ষতিগ্রস্তদের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। তাদের রাতযাপনের জন্য বঙ্গবন্ধু বিদ্যানিকেতন স্কুলসহ আশপাশের চার-পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। ফ্রি প্রাথমিক চিকিৎসা ওষুধ দিচ্ছে উত্তর সিটি করপোরেশন ও শক্তি ফাউন্ডেশন ডিসঅ্যাডভান্টেজড উইমেন।


কামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ২৬ বছর ধরে আমি এই বস্তিতে থাকি। আমার এক ছেলে ও মেয়ে আছে। মেয়ের বয়স ১৫-১৬ বছর। কয়েক বছর ধরে মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা জমাচ্ছিলাম। দেড় ভরি স্বর্ণও কিনে রেখেছিলাম। কিন্তু আগুনে সব পুড়ে গেল।


তিনি আরো বলেন, এখানে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু আমি তিন দিন ধরে কিচ্ছু খাইনি। আমার পেটে কিচ্ছু যাচ্ছে না। এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না আগুনে পুড়ে আমার সব শেষ হয়ে গেছে।


আমিন নামে একজন বলেন, ঈদের আগে ভোলায় দেশের (গ্রামের) বাড়িতে যাই। এসে দেখি এ অবস্থা। কিছুই নেই। সব পুড়ে গেছে। কী করব বুঝতে পারছি না। সরকার যেন আমাদের থাকার একটা ব্যবস্থা করে দেয়।


গত শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানী মিরপুর ৭ নম্বরের চলন্তিকা মোড়ের বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন লাগার প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।


আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট কাজ করে। র‍্যাব, পুলিশ, ওয়াসা ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। এ ঘটনায় চারজনের আহত হয়েছে বলে জানা যায়। আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- রফিক, কবির (৩৫) ও হাবীব (১৯)।



অগ্নিকাণ্ডের ফলের কয়েকজন আহত হলেও কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঈদের সময় অধিকাংশ বস্তিবাসী গ্রামের বাড়িতে গেছে। এখনো সবাই ঢাকা ফেরেনি। এ কারণে বস্তিতে মানুষজন কম ছিল। যার ফলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরও কোনো প্রাণহানি হয়নি।


অগ্নিকাণ্ডের ফলে ৫০০-এর অধিক ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে বস্তিতে বসবাস করা কয়েক হাজার মানুষ।


বিবার্তা/আকরাম/রবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com