রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে (৪০) নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে হৃদয় ওরফে ইব্রাহিম। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় নানির বাসা থেকে হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। হৃদয় জানায়, ন্যাড়া হয়ে ছদ্মবেশ ধারণের চেষ্টা করেছিল। সেইসঙ্গে রেনুকে হত্যার দিন পরা পোশাক পুড়িয়ে ফেলার জন্য সে তার নানিকে দিয়ে দেয়।
বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন। তিনি জানান, হৃদয় খুনের দায় স্বীকারের পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনের নামও বলেছে। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।
আব্দুল বাতেন বলেন, প্রথমে যে নারী ছেলেধরা গুজব সৃষ্টি করেছিল, সেই নারীকেও শনাক্তের চেষ্টা চলছে। হৃদয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ব্যক্তিগত কোনো আক্রোশ ছিল কিনা সে তথ্যও বেরিয়ে আসবে। এ ঘটনায় ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে হৃদয়কে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (২০ জুলাই) সকালে বাড্ডার ওই স্কুলে মেয়েকে ভর্তির জন্য তথ্য সংগ্রহ করেতে যান রেনু। এ সময় ছেলেধরা গুঞ্জন উঠলে তিন নারীকে আটক করে স্থানীয়রা। এর মধ্যে দুই নারী পালিয়ে গেলেও গণপিটুনির শিকার হন রেনু। স্থানীয়রা তাকে রড, কাঠ দিয়ে উপর্যুপরি পিটিয়ে হত্যা করে।
রেনুকে পিটিয়ে হত্যার যেসব ভিডিও প্রকাশ হয়েছে, সেখানে তিন-চার তরুণকে নির্মম এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে ছিল নীল টি-শার্ট পরা ছিল হৃদয়। হৃদয়ই রেনুকে পিটিয়ে হত্যার নেতৃত্ব দিয়েছিল। রেনু যখন বেধড়ক পিটুনি খেয়ে নিস্তেজ হয়ে স্কুল কম্পাউন্ডে পড়ে ছিল, তখনো থামেনি হৃদয়।
হৃদয় লাঠি দিয়ে রেনুর মুখে, বুকে, পেটে, হাতে ও পায়ে নির্মম ও নৃশংসভাবে আঘাত করছিল। আশপাশের লোকজনের অনেকে ‘থামো থামো, আর মের না, মরে গেছে’ এসব বলে হৃদয়কে থামানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু হৃদয় থামছিল না।
স্থানীয়রা জানান, হৃদয় উত্তর বাড্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ দোকানে সবজি বিক্রি করে।
বিবার্তা/রবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]