অবৈধভাবে যত্রতত্র পোস্টার লাগানো থেকে বিরত থাকতে জাতীয় পার্টির (জাপা) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাইফুদ্দিন মিলনকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) সংস্থাটির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আ ন ম তরিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই চিঠি অতীব জরুরি হিসেবে উল্লেখ করে তাকে দেওয়া হয়।
চিঠিতে সাইফুদ্দিনের উদ্দেশে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা উত্তর সিটির আওতাধীন এলাকায় অবৈধভাবে যত্রতত্র পোস্টার লাগিয়ে যাচ্ছেন। ফলে নগরীর সৌন্দর্য ব্যাহত হচ্ছে এবং নগরী অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। এ ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করতে অতিরিক্ত জনবল, অর্থ ও সময় নষ্ট হচ্ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘দেয়াললিখন ও পোস্টার লাগানো নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক দেয়াললিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১২ প্রকাশ করা হয়েছে। এ আইন অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়ে ইতিমধ্যে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এমতাবস্থায় ঢাকা উত্তর সিটির আওতাধীন এলাকায় যত্রতত্র পোস্টার লাগানো থেকে বিরত থাকতে এবং লাগানো পোস্টারগুলো অবিলম্বে নিজ খরচে অপসারণ করতে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় সিটি করপোরেশন ওই পোস্টারগুলো অপসারণ করলে এর ব্যয়ভার আপনাকে (সাইফুদ্দিন) বহন করতে হবে। এরপরও দেয়াললিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১২–এর বিধান লঙ্ঘন করলে আপনার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
চিঠির বিষয়ে সাইফুদ্দিন জানান, তিনি এখনো কোনো চিঠি হাতে পাননি। তবে অনেক সাংবাদিক এ নিয়ে মুঠোফোনে প্রশ্ন করছেন। এ ছাড়া তিনি ইতিমধ্যে অনেক জায়গা থেকে নিজের পোস্টার সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছেন বলেও দাবি করেন।
সাইফুদ্দিন বলেন, ‘মেট্রোরেলের স্থাপনায় যে পোস্টারগুলো আছে, গত রাতে তার কিছু তোলা হয়েছে। আজ রাতেও লোক যাবে পোস্টারগুলো তুলতে কিংবা সরকারি কোনো স্থাপনায় পোস্টার থাকলেও সেগুলো তোলা শুরু হয়ে গেছে। যদিও আমাকে এ নিয়ে কেউ কিছু বলেনি।’
বছরে মাত্র একবার পোস্টার লাগান দাবি করে সাইফুদ্দিন বলেন, ‘এই বছর ছয় হাজার পোস্টার লাগিয়েছি। অথচ প্রতিদিন সরকারি দল, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে শুরু করে সব রাজনৈতিক দল লাখ লাখ পোস্টার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনেও লাগায়। ওই পোস্টারগুলো নিচে লাগানো হয়, পরদিন অন্য একজনের পোস্টার ঢেকে দেয়। আর আমার পোস্টার যেহেতু একটু উঁচুতে লাগানো হয়, তাই দেখা যায়, বছরখানেক আগেরও অনেক পোস্টার থেকে যায়।’
পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রসঙ্গে সাইফুদ্দিন আরও বলেন, ‘পোস্টার লাগানো যদি সরকার নিষেধ করে দেয়, তাহলে কেউ পোস্টার লাগাবে না। আমরাও লাগাব না। শহর নষ্ট হোক কে চায়? সরকার বন্ধ করে দিলে কেউ লাগাবে না। অথচ সরকারি দলের অনেক নেতার প্রতি মাসে নতুন পোস্টার আসে। আর সরকারি স্থাপনা ও মেট্রোরেলে আমার লোকজনকে পোস্টার লাগাতে বারণ করেছিলাম। তারা ভুল করে লাগিয়েছে।’
মানুষ রাস্তায় বের হলেই তাঁর পোস্টার দেখতে পান জানিয়ে সাইফুদ্দিন বলেন, ‘সবাই তো আমাকে সহ্য করতে পারে না। সব মানুষ কি আমাকে ভালোবাসবে? কিছু লোক আছে, যাদের অন্যজনেরটা চোখে পড়বে না, কিন্তু আমারটা দেখবে। আর খারাপ লাগবে।’
বিবার্তা/এসএফ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]