রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) ইমারতের নকশা অনুমোদনে ৫০ হাজার থেকে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। এমন অভিযোগ করেছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্র্যান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক): সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক আয়োজিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। টিআইবির ফাতেমা আফরোজ ও ফারহানা রহমান গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন। দুর্নীতিরোধে বেশ কিছু সুপারিশও তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট খাতে গবেষণাটি পরিচালনা করেছে টিআইবি।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যক্তি পর্যায়ে নকশা অনুমোদনে ৫০ হাজার থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ২ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা টাকা পর্যন্ত রাজউক কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয়। আবার ১০ তলার বেশি ইমারতের নকশা অনুমোদনে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ফি-এর অতিরিক্ত ১৫ লাখ থেকে ৪০ লাখ টাকা এবং বিশেষ প্রকল্পের ক্ষেত্রে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ১৫ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ব্যক্তি পর্যায়ে রাস্তা প্রশ্বস্ত দেখাতে ২০-৩০ হাজার টাকা, ছাড়পত্র অনুমোদনে ১৫ থেকে ৮০ হাজার টাকা ও রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত রাজউক কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয়।
এছাড়া নকশা অনুমোদনে সময়ক্ষেপণ, সেবায় প্রতারণা ও হয়রানি, পরিদর্শনে অনিয়ম ও দুর্নীতি, নকশা বাস্তবায়নে আইন ও বিধির লঙ্ঘন, প্লট বরাদ্দ, প্লট হস্তান্তর, ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তরসহ একাধিক সেবায় ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। বলা হয়, নথি রক্ষকের কাছ থেকে মালিক নিজে বা দালাল কর্তৃক প্লটের ফাইল দেখানোর ক্ষেত্রে কোনো ফি না থাকলেও ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা, প্রকল্পের আবাসিক ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তরে ফি না থাকলেও ২ থেকে ৫ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় সেবাগ্রহীতাকে।
লিজ দলিলে ৩১ হাজার থেকে ৬০ হাজার পর্যন্ত নির্ধারিত ফি থাকলেও ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। নামজারি প্লট প্রতি নির্ধারিত ফি এর চেয়ে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা, হেবা ফ্ল্যাট প্রতি ৫০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা, বিক্রয় অনুমোদন ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ আদান-প্রদান করা হয়।
বিল উত্তোলনে ফি না থাকলেও কার্যাদেশ মূল্যের ২ শতাংশ ঘুষ দিতে হয়। এছাড়াও নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারসহ ব্যাপক ঘুষ আদায় করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে টিআইবি।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানসহ সংস্থাটির উর্ধ্বতনরা উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা/এনকে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]