উখিয়ার শরণার্থী ক্যাম্পে আগুনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে রোহিঙ্গাদের অনিশ্চিত জীবন। ১৯৯১ সালে রোহিঙ্গা আসার পর অস্থায়ীভাবে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল কাজ করলেও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়।
কিন্তু ১৯৯১ সালে আশ্রিত কুতুপালং রেজিষ্ট্রাট রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশ ঘেষে বনভূমির জায়গায় সম্প্রসারিত করা হয়েছে শরণার্থী শিবির। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও বান্দরবান সীমান্তে। গত বছরের ২৫ আগস্টের পর প্রায় সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে বাংলাদেশে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এখন আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১১ লাখ।
ক্যাম্পে ছোট ছোট ঝুঁপড়ি ঘরে বৃদ্ধ শিশুসহ অসংখ্য মানুষ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করছেন। শর্টসার্কিট কিংবা অসাবধানতাবসত যে কোনো সময় অগ্নিকাণ্ডের আশংকা রয়েছে এখানে।
ক্যাম্পের একজন আব্দুল মজিদ বলেন, কুতুপালং, লম্বাশিয়া, বালুখালী, থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যম্পসহ প্রায় প্রতিটি ক্যাম্পে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহার হচ্ছে। আর রোহিঙ্গাদের ছোট্ট ঘরে ১০/১২ জনের সংসারে থাকা ও রান্নার কাজে অসাবধানতাবশত বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। এতে একটি ঘরে আগুন লাগলে পুরো ক্যাম্পে মুহুর্তেই জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরেক স্থানীয় শ ম গফুর বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্যে এনজিওরা পাহাড় কেটে এখানকার পুরো পরিবেশ ধবংস করে ফেলেছে। গাছপালা না থাকায় অক্সিজেনের অভাবে প্রচণ্ড গরমে এখন থেকেই অস্থির সবাই। আল্লাহ না করুক, ক্যাম্পে আগুন লাগলে ধু ধু মরুভূমির মতো পানি না পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, অপরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের থাকার জন্যে পলিথিনের ত্রিপল দ্বারা নির্মিত ঘরে এতই করুণ অবস্থা যে, যে কোনো সময় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। অগ্নিকাণ্ড রোধে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রোহিঙ্গা নাগরিকদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
উখিয়ায় স্থায়ীভাবে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এবার রোহিঙ্গা আসার পর ক্যাম্পে আবারো কার্যক্রম চালু করেছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্প খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা সম্পর্কে সম্প্রতি মহড়া দেয়া হয়েছে। তাদের সচেতন করতে ফায়ার সার্ভিস প্রতিদিন কাজ করছে।
বিবার্তা/মানিক/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]