শিরোনাম
মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা, মামলা নিলো না পুলিশ
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২১, ১৩:১৩
মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা, মামলা নিলো না পুলিশ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী ইদ্রিস মিয়ার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় মামলা নেয়নি আশুগঞ্জ থানার ওসি জাবেদ মাহমুদ। এমনকি ওই মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে কটুক্তিও করেন ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম। মুক্তিযোদ্ধা হাজী ইদ্রিস মিয়া অভিযোগ করে বলেন, বিষয়টি মিমাংসার জন্য তাদের ক্রমাগত চাপ দেয়া হচ্ছে থানা থেকে।


জানা গেছে, গত ২২ জুলাই রাত ১১টায় ইদ্রিস মিয়ার বাড়িতে একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালায়। বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে তাদের মারপিট করে। এঘটনায় ইদ্রিস মিয়ার ছেলে ও নাতী আহত হয়েছে।


এ সময় হামলাকারীরা স্বর্ণালঙ্কার ও বিভিন্ন জিনিস লুট করে। প্রথমে হামলাকারীদের ডাকাত মনে করলেও পরবর্তীতে জানা যায়, তারা পাশের গ্রাম শরীফপুরের কান্দাপাড়ার আব্দুল হামিদের ছেলে মানিক মিয়া, মানিক মিয়ার ছেলে কাদির, মৃত আব্দু মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর, জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে সাজিদ ও আরাফাত, আব্দুল মিয়ার ছেলে শামীম, শাহিন ও আলমগীর এবং জারু মিয়ার ছেলে জামাল মিয়া।


মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মিজান মিয়া জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর এলাকার মাতব্বররা বিষয়টি সালিসের মাধ্যমে মিমাংসা করতে চাপ দেয়। কিন্তু গত ২৬ জুলাই সালিশে আমরা গেলেও ওই হামলাকারীরা আসেনি। থানার ওসি বলছেন আমরা যেন থানায় গিয়ে সালিশ করি। থানায় মামলার জন্য অভিযোগ করার পর থেকেই ওসি মামলা গ্রহণ না করে শুধু সালিশের কথা বলছেন। এদিকে আশুগঞ্জ থানার লালপুর বিটের এস আই জিয়াও থানায় গিয়ে সালিশের কথা বলছেন। তিনি এটাও বলেছেন যে, যদি আমরা থানায় গিয়ে সালিশ না করি তাহলে অপরপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে মামলা নেয়া হবে।


তিনি আরো জানান, থানায় মামলা করতে গেলে থানার মুন্সিকে দিয়ে একটি অভিযোগ লিখতে বলেছেন বড় কর্তারা। যে অভিযোগপত্রটি থানা থেকে লিখে দেয়া হয়েছে সেখানে অনেক তথ্য নেই এবং আবেদনের তারিখও লেখা হয় নাই। কাগজের একটি কপি থানায় জমা রাখা হয়েছে যা এখনো মামলা হিসেবে নথিভূক্ত হয়নি। এ বিষয়ে ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের কাছে মুক্তিযোদ্ধার কোন মূল্য নাই।


হামলার ঘটনা সত্য স্বীকার করে মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় আশুগঞ্জ থানার ওসি জাবেদ মাহমুদ জানান, তার সাথে কোনো পক্ষেরই কথা হয়নি। কথা হয়েছে ওসি তদন্তের সাথে। আপোষের কথা ওসি তদন্ত বলেনি, বাদীপক্ষ থেকে আপোষের কথা বলা হয়েছে। উভয় পক্ষই আপোষের জন্য রাজি, এখন সমস্যা কোন জায়গায় বসবে। বিবাদীগণ লালপুর যেতে ভয় পাচ্ছে যদি লালপুরবাসী হামলা করে। আর বাদীপক্ষ ভয় পাচ্ছে যদি বিবাদীগণের নির্বাচিত জায়গায় মিমাংসা হয় আর বিবাদীরা যদি আবার হামলা করে। তাই তারা উভয়পক্ষই দ্বিধায় আছে কোথায় বসবে? তারা সকলেই চায় নিরাপত্তাবেষ্টনিতে মিমাংসা হোক।


আর মুক্তিযোদ্ধাকে কটুক্তির বিষয়ে ওসি বলেন, থানা থেকে এ কথা কেউ বলেনি। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা বলেই আমি পুলিশের চাকরিটি পেয়েছি। কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে কটাক্ষ করে কথা বলার এখতিয়ার কারো নেই। ওসি তদন্ত যদি এমন মন্তব্য করে থাকেন তাহলে আমি তাকে জিজ্ঞেস করবো।


বিবার্তা/নিয়ামুল/অনামিকা/বিআর

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com