শিরোনাম
রাজশাহী সিটি কলেজের ছাত্র হত্যার দায় স্বীকার
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০১৯, ১৮:১৬
রাজশাহী সিটি কলেজের ছাত্র হত্যার দায় স্বীকার
রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রাজশাহী সিটি কলেজের ছাত্র ফারদিন ইসনা আশারিয়া রাব্বী (১৯) হত্যায় দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন আসামি মো. রনক (২৩)।


শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এর ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেলিম রেজার কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন তিনি। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।


প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রনক তার জবানবন্দীতে জানান, তিনি বিভিন্ন নেশায় আসক্ত। ঘটনার দিন একাই ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে পরিহিত টি-শার্টের ভেতরে দা নিয়ে ভোর ৫টা থেকে ঘটনাস্থলের পাশে আমরুর কনফেকশনারীর কাছে ওঁত পেতে ছিলেন। ওই সময় ভিকটিম রাব্বী তিতুমীর ট্রেন ধরার উদ্দেশ্যে ঘাড়ে ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে পায়ে হেঁটে বর্ণালীর মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় রনক ভিকটিম রাব্বীর পথরোধ করে দা বের করে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। তখন রাব্বী দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক সময় ভিকটিম আসামিকে ফেলে দেয় এবং চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। ওই সময় আসামি রনক রেগে গিয়ে পিছন থেকে ভিকটিম রাব্বী’র মাথায় দা দিয়ে সজোরে কোপ মারেন। তখন ভিকটিমের মাথা দিয়ে অনেক রক্ত বের হয়। ভিকটিম মাটিতে পড়ে যায়। তখন আসামি রনক অবস্থা বেগতিক দেখে, আশেপাশের লোকজন ও মসজিদের লোকজন দ্বারা ধৃত হওয়ার আশঙ্কায় টাকা, মানিব্যাগ, মোবাইল, ব্যাগ না নিয়েই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।


রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, আসামি হেরোইন এর টাকা সংগ্রহের জন্য একাকি দা হাতে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করার সময় ভিকটিমের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সজোরে ভিকটিমের মাথায় ধারালো দা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেন।


আসামি জানান, তিনি ভিকটিমকে পূর্বে চিনতেন না। ঘটনা ঘটার পর বিভিন্ন লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন ভিকটিম সিটি কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং মেসে বসবাস করতেন।


গত ৬ আগস্ট ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে হেতেম খাঁ ছোট মসজিদ সংলগ্ন পুরাতন পাঁচতলা বিল্ডিংয়ের সামনে পাকা রাস্তার উপর মাথায় ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে হত্যা করা হয় ফারদিন ইসনা আষাড়িয়া রাব্বীকে (১৯)। তিনি রাজশাহী সিটি কলেজের বিজ্ঞান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ির দিনাজপুরের পার্বতীপুরের মোমিনপুর গ্রামে। তার বাবার নাম মোজাফফর হোসেন। তিনি নগরীর হেতেম খাঁ এলাকায় মেস ভাড়া করে থাকতেন। ঘটনার দিন ভোরে তিনি ঈদের ছুটিতে কাটাতে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য হেতেম খাঁর মেস থেকে বের হন। তার ট্রেন ছিল ৬টা ২০ মিনিটে। কিন্তু সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি নিহত হন।


এর এক দিন পর আসামি মো. রনককে হেতেম খাঁ থেকে ৭.২ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করা হয়। তার বাড়িও নগরীর একই এলাকায়। বাবার নাম মৃত কুদরত আলী।


আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণ ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, আসামি মো. রনক (২৩) ভিকটিম ফারদিন ইসনা আষাড়িয়া রাব্বী (১৯) হত্যা মামলার ঘটনার সহিত সরাসরি সম্পৃক্ত। এমতাবস্থায় তাকে আটকের পরের দিন হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশি রিমান্ডের আবেদন করা হয়। গত ১৪ আগস্ট তাকে পুলিশ রিমান্ডে নেয়া হয়। ব্যাপক ও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে রনক ওই হত্যা মামলার ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। আসামির দেয়া তথ্য ও সনাক্ত মতে তার বাসার শয়ন কক্ষ হতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ১৫ ইঞ্চি ধারালো দা আলামত হিসেবে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়া হয়েছে।


বিবার্তা/তারেক মাহমুদ/জাই


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com