বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে আইনি সহায়তা দিতে ঢাকার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের একটি টিম বরগুনায় অবস্থান করছে।

রবিবার (২১ জুলাই) বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলামসহ মিন্নির জামিনের জন্য আদালতে দাঁড়াবেন তারা।

মিন্নিকে আইনি সহযোগিতা দেয়ার জন্য আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে আসা টিমের সদস্যরা হলেন- আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সিনিয়র স্টাফ অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদ, কেন্দ্রের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবীর, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান ও কেন্দ্রের তদন্ত কর্মকর্তা হাসিবুর রহমান।

শনিবার (২০ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে চার সদস্যবিশিষ্ট মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) আইনজীবীরা বরগুনায় পৌঁছান। সেখানে পৌঁছে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের বাড়ি যান। তার সঙ্গে কথা বলেন।

মিন্নিদের বাড়ি থেকে বের হয়ে বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলামের সঙ্গে দেখা করেন আইজীবীরা।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সিনিয়র স্টাফ অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদ জানান, মিন্নিকে আইনি সহায়তা দেয়ার জন্যই তারা এসেছেন। মোজাম্মেল হোসেন কিশোর ও অ্যাডভোকেট আসলামের সঙ্গেও তারা কথা বলেছেন। রবিবার তিনিসহ আদালতে অন্যরা মিন্নির জামিনের জন্য দাঁড়াবেন।

অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম জানান, আদালতে তারা মিন্নির জামিনের জন্য দাঁড়াবেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের টিমের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তাকে সম্পূর্ণ হযোগিতা করবেন আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে আসা টিমের সদস্যরা। মামলার শুনানিতেও তারা অংশ নেবেন।

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) ও নিজেরা করি'র আইনজীবীরাও এ সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ব্লাস্টের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জেডআই খান পান্না এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘বরগুনা আইনজীবী সমিতির নেতারা আমাকে জানিয়েছেন, তারাও মিন্নিকে আইনি সহায়তা দেবেন।’ জেড আই খান পান্না জানান, ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন স্থানের আইনজীবীরাও মিন্নির পক্ষে লড়তে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

তিনি বলেন, ‘আইনজীবীরা কারাগারে মিন্নির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ওকালতনামায় স্বাক্ষর নেবেন। এরপরই বরগুনা আদালতে মিন্নির জামিনের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবেন। শতাধিক আইনজীবী মিন্নির পক্ষে বরগুনার আদালতে আইনি লড়াই করবেন। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টেও আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি।’

বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর সাক্ষী ছিলেন তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে পর্যবেক্ষণ এবং জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় মিন্নির জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় গেছে জানিয়ে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এর আগে রিমান্ড শুনানিতে বরগুনার আদালতে মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী না দাঁড়ানোয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

২৬ জুন প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার সময় স্বামীকে বাঁচাতে মিন্নির চেষ্টার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি আলোড়ন সৃষ্টি করে। পরদিন শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তাতে মিন্নিকেই প্রধান সাক্ষী করা হয়।

এরপর (১৩ জুলাই) শনিবার মিন্নির শ্বশুর তার ছেলে রিফাত হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত বলে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি মিন্নিকে গ্রেফতারের দাবি করেন। এর থেকেই রিফাত হত্যা মামলাটি নতুন মোড় নেয়।

বিবার্তা/রবি