শিরোনাম
ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে লামা
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০১৯, ১৪:০৮
ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে লামা
লামা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মাতামুহুরী নদীর অব্যাহত ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে বান্দরবানের লামা শহর। এছাড়া উপজেলার দুই খালের ভাঙনেও রুপসীপাড়া ইউনিয়ন সদর বাজার, দরদরী ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি এলাকার ঘরবাড়ি, বাজার, মসজিদ, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজসহ বিস্তীর্ণ এলাকা নদীতে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।


গত কয়েক বছরে শহর ও দুই ইউনিয়নের কয়েকশ ঘরবাড়ি, কয়েকশ একর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে শত কোটি টাকার স্থাপনা ও ফসলি জমি ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। চলতি বর্ষায় উজান থেকে নেমে আসা দুই দফা পাহাড়ি ঢলের কারণে স্রোতের টানে ভাঙন চরম আকার ধারণ করেছে।


এদিকে ত্রাণ নয়, ভাঙন থেকে রক্ষায় নদী সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়কমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের কাছে জোর দাবি জানান লামা উপজেলাবাসী।


জানা যায়, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে খরস্রোতা মাতামুহুরী ও খালের করাল গ্রাসে দুই কূল ভেঙে অধিবাসীদের সর্বস্বান্ত করে দেয়। পাশাপাশি পাহাড়ি ঢলে নিমজ্জিত করে লামা শহরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় কোটি টাকারও বেশি।


২০০২ সালে ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণ ও লামা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড মাতামুহুরী নদীর ভাঙন রোধ, বন্যার কবল থেকে লামা শহরকে রক্ষার জন্য একাধিকবার প্রকল্প গ্রহণ করে প্রাক্কলন তৈরি করে। তবে লবিং না থাকায় প্রাক্কলনটি আজো বাস্তবায়িত হয়নি। এতে প্রতি বছর নদী ভাঙনে ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই চলেছে।


শহরের বাজারপাড়া, ছোটনুনারবিল শশ্মান, শীলেরতুয়া মার্মাপাড়া, লাইনঝিরি ফকিরপাড়া, হাজ্বী পাড়া, কুড়ালিয়ারটেক, সমিল পাড়া, লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা, মিশনঘাট এলাকাসহ বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়া ও মাইজপাড়াসহ বিস্তীর্ণ এলাকা ইতোমধ্যে গ্রাস করে নিয়েছে প্রমত্তা মাতামুহুরী।


পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ হোসেন বাদশা, স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ভাঙন রোধ করা না গেলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে শুধু শহর এলাকা নয়, লামা সদর, রুপসীপাড়া ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের মানচিত্র পাল্টে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


একইভাবে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি খালের অব্যাহত ভাঙনেও গত বছর বগাইছড়ি-ডুলহাজার সড়কের কিছু অংশ একটি ব্রিজসহ বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানেও বগাইছড়ি এলাকার বেশ কয়েকটি বসতঘর ভাঙনের মুখে রয়েছে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদার।


ভুক্তভোগীরা বলছেন, লামা উপজেলায় পাথরে ভরপুর। এ উপজেলার বোল্ডার পাথর দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন ঠেকানোর কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। অথচ লামায় ব্যবহার হচ্ছে না।


লামা পৗরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বর্ষা মৌসুমেই মাতামুহুরী নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। বন্যার পানির স্রোতের টানে এ ভাঙন আরো তীব্র আকার ধরণ করে। ভাঙন রোধ করা না হলে অচিরেই লামা পৌরশহর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।


ইতোমধ্যে সাবেক বিলছড়ি, লামা বাজার ঘাট ও শীলেরতুয়া এলাকার কিছু কিছু স্থানে ভাঙন রোধে ব্লক স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব পৌরসভা এলাকা পরির্দশন করে বন্যামুক্ত ও নদী ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।


বিবার্তা/আরমান/রবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com