শিরোনাম
ঠাকুরগাঁওয়ে ১১ বছর ধরে শিকল বন্দি কিশোর মুন্নার জীবন
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০১৯, ১৫:৫৮
ঠাকুরগাঁওয়ে ১১ বছর ধরে শিকল বন্দি কিশোর মুন্নার জীবন
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মনোয়ারুল ইসলাম মুন্না সাত বছর বয়সে হঠাৎ করেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এরপর প্রাথমিক চিকিৎসা করা হলে কিছুদিন সুস্থ থাকার পর আবার অসুস্থ হয় পড়ে।


পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে আর চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি মুন্নার। তার বয়স বর্তমানে ১৮ বছর। ১১ বছর ধরে পায়ে শিকল দিয়ে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে তার ঘরের বারান্দার খুঁটির সাথে। সেখানেই ১১ বছর ধরে শিকল বন্দী জীবন পার করছেন মুন্না। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট গ্রামের মুনসুর আলীরছেলে মুন্না।


তার মা মনোয়ারা বেগম জানান, অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারেনি। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় গত কয়েক বছর থেকে সে এলাকাবাসীর বিভিন্নভাবে ক্ষতি করে। কারো গরু ছাগল মারধর, মানুষ মারধর, অনেকের সবজি-ক্ষেত নষ্ট করে। মেয়ে মানুষ দেখলে ঝাপটে ধরার চেষ্টা করে এমনকি নিজের পরিবারের লোকজনদের কাছে পেলেও আঘাত করার চেষ্টা করে। এজন্যই পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে তাকে। তার বাবা মুনসুর আলী (৫৫) একজন সামান্য গরু ব্যবসায়ী।


মঙ্গলবার সকাল মুন্নার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনের চালার একটি ঘরের বারান্দায় শিকল পায়ে মাটিতে বসে আছে মুন্না। তিন বোনের মধ্যে মুন্না সবচেয়ে বড়।


বর্তমানে পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তার বাবা মুনসুর আলী । মুনসুর বলেন, সামান্য একজন গরুর দালালির (ব্যবসায়ী) কাজ করি আমি। কাজ না থাকলে আমি দিনমজুরের কাজ করি। দৈনিক ৩০০-৩৫০টাকা দিয়ে সংসার চালাবো না মুন্নার চিকিৎসা করবো ভেবে পাচ্ছিনা। তারপরেও সে টাকা দিয়ে বিভিন্ন ভাবে তার চিকিৎসা করছি। দৈনিক ১০০ টাকার ওষুধ লাগে মুন্নার । অবশিষ্ট টাকায় সংসারের খরচ চালাই। এভাবেই কষ্টের মধ্যে চলছে আমাদের জীবন। অর্থের অভাবে পুরোপুরি ভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে না পেরে ছেলেকে শিকলে বেঁধে রাখতে হচ্ছে। আমি বাবা হয়ে আর ছেলের কষ্ট সইতে পারিনা।


তিনি বলেন, ছোট খাটো নানা সমস্যার মধ্যে দিন পার করছি। সরকারিভাবে আমাদের কোন ভাতাও দেয়া হচ্ছে না। যদি কিছু সহযোগিতা পেতাম তাহলে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ পরিবারের খরচ চালাতে পারতাম।


এ ব্যাপারে ১০নং জাবরহাট ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, তার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। মুন্নাকে চিকিৎসার জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতালে নেয়ার জন্য তার বাবাকে সহযোগিতা করবো। সেখানে গেলে হয়তো সে ভালো হতে পারে।


বিবার্তা/বিধান/তাওহীদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com