শিরোনাম
মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতে দুদকের দ্বারস্থ মসলার ফেরিওয়ালা
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০১৯, ১৮:৫২
মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতে দুদকের দ্বারস্থ মসলার ফেরিওয়ালা
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও ভাতা পেতে এবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দ্বারস্থ হলেন ভাতা বঞ্চিত সেই মসলার ফেরিওয়ালা মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপ চন্দ্র রায়।


লালমনিরহাট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে মঙ্গলবার দুদকের গণশুনানীতে নিজেকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি করেন প্রতাপ চন্দ্র রায়। পরে দুদকের গণশুনানীর প্রধান অতিথি দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম তদন্ত কমিটি করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিতে সদর উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।


মসলার ফেরিওয়ালা মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপ চন্দ্র রায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের কাজিচওড়া গ্রামের মৃত তারিণী চন্দ্রের ছেলে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের লাল মুক্তিবার্তার ৩১৪০১০৪৩৬ নম্বর ক্রমিক এবং ২০০৫ সালের ৩০ মে প্রকাশিত বেসামরিক গেজেটের ৫১৪৫ নম্বর পৃষ্ঠার ৪৯৭ নম্বরের মুক্তিযোদ্ধা। তিনি লালমনিরহাট মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ৩৩৪ নম্বরের একজন ভোটার।


জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপ চন্দ্র রায় দীর্ঘ দিন ধরে সম্মানী ভাতার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সমাজসেবা অফিসসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে নিস্ফল ঘুরে বেরাচ্ছেন। কিন্তু কোনো সুফল মেলেনি তার। জীবিকার তাগিদের গ্রামে গ্রামে ঘুরে মসলা বিক্রি করেন প্রতাপ চন্দ্র রায়। বিষয়টি নিয়ে ২০১৮ সালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মসলার ফেরিওয়ালা মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তাকে পুনর্বাসনের নির্দেশ দেন তৎকালীন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) শফিউল আরিফ।


যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিলে সদর উপজেলা প্রশাসন জনতে পারেন একই গেজেট ব্যবহার করে রংপুরের গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের উত্তর ধামুর গ্রামের তারিণী কান্তের ছেলে রংপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (অবসর) প্রতাপ চন্দ্র রায় ভাতা ভোগ করে আসছেন। এই সনদধারীর ছেলে এ কোটা ব্যবহার করে পুলিশের পরিদর্শক পদে কর্মরত। ফলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মসলার ফেরিওয়ালাকে পুনর্বাসনের যাবতীয কার্যক্রম ও গতি কমে যায় স্থানীয় প্রশাসনের। যার ফলে নতুন করে তদন্তে নামে জেলা প্রশাসন। কিন্তু সেই তদন্ত প্রতিবেদন আজ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।


পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন দফতরে ঘুরতে থাকেন মসলার ফেরিওয়ালা প্রতাপ চন্দ্র রায়। নিরাশ না করলেও জেলা এবং উপজেলা প্রশাসন পুনর্বাসনে আশ্বস্থ করেন প্রতাপ চন্দ্রকে। কিন্তু তাকে পুনর্বাসনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অবশেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গণশুনানীতে লিখিত আবেদন করেন মসলার ফেরিওয়ালা প্রতাপ চন্দ্র রায়।


মঙ্গলবার গণশুনানীতে তার সকল কাগজপত্র নিরীক্ষন করে দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম তদন্ত কমিটি করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিতে সদর উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা প্রদান করেন।


লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফরের সভাপতিত্বে গণশুনানী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, দুদক পরিচালক নাসিম আনোয়ার, মনিরুজ্জামান খান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদ সোহরাওয়ার্দী। গণশুনানীতে ৩৮টি অভিযোগের শুনানি করা হয়।


বিবার্তা/জিন্না/জাহিদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com