শিরোনাম
কৃষকের নামে ধনীর ধান গোডাউনে
প্রকাশ : ২২ মে ২০১৯, ২০:৫৮
কৃষকের নামে ধনীর ধান গোডাউনে
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

লালমনিরহাটে সরকারিভাবে ধান কেনার নামে চলছে নানান নাটকীয়তা। কৃষকের নামে সরকারি গোডাউনে ধান দিচ্ছে ধনী ব্যক্তিরা।


কৃষকের ধান কেনা নিয়ে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলছে দুর্নীতির মহোউৎসব।


কৃষকরা জানেই না যে সরকার কৃষকের ধান কিনছে। এই সুযোগককে কাজে লাগিয়ে টাকা দিয়ে ভাড়াটে কৃষক বানিয়ে তাদের মাধ্যমে ধান কিনছে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। এভাবে অবৈধভাবে ভাড়াটে কৃষক দিয়ে ধান কেনায় ক্ষুধ প্রান্তিক কৃষকরা।


জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলায় সরকারিভাবে চলতি বছর ২৬ টাকা কেজি দরে ১ হাজার ৪৯৩ মেট্রিক টন ধান, ৩৬ টাকা কেজি দরে ১০ হাজার ৭৩১ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৩৫ টাকা কেজি দরে ৩৪৫ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে।


কিন্তু কৃষকের গাম ঝরানো এই ধান কেনার নামে চলছে খাদ্য বিভাগের সীমাহীন দুর্নীতি। কৃষি কার্ডের মাধ্যমে ধান কেনার করার কথা থাকলেও লালমনিরহাট জেলায় এর ভিন্ন চিত্র দেখা যায়।


সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের কৃষক আবু জাফর বলেন, সরকার সরাসরি কৃষকের নিকট থেকে ধান কেনার কথা বললেও এই দুর্নীতির সাথে খাদ্য বিভাগের উপজেলা কর্মকর্তা আইয়ুব আলী, অফিস সহকারী নূর আলম সিদ্দিকসহ আরো কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন।


এছাড়াও জেলা নিয়ন্ত্রণ অফিসের প্রধান অফিস সহকারী ফকরুলের বিরুদ্ধেও এই দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার কথা আরো কয়েকজন জানান। তবে প্রধান অফিস সহকারী ফকরুল তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন।


অভিযোগ উঠেছে জেলা খাদ্য অফিসের কর্মকর্তারা গোপনে টাকার বিনিময়ে কিছু কিছু প্রভাবশালীর ধান কেনার সুবিধার জন্য কৃষকের নাম মাত্র কাগজ ব্যাবহার করছে। এর সাথে সদর ওসি এলএসডি তরিকুল ইসলামও জড়িত রয়েছে।



সদর উপজেলার কুলাঘাট এলাকার কৃষক তমিজ উদ্দিন জানান, সরকার ধান কিনবে কৃষকের কাছ থেকে অথচ কৃষকরাই সে কথা জানে না। খাদ্য বিভাগের লোকজন ধনীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গোপনে ধান দেয়ার পায়তারা চালাচ্ছে।


মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের কৃষক সালামত জানান, সরকার সরাসরি কৃষকের নিকট থেকে ধান কিনবে তা না করে বাস্তবে ধান দেয়ার সময় ধনীরা কৃষক হয়ে যায়।


এদিকে ১৬ জন মিল মালিককে লাইসেন্স দেয়ার ঘটনায় লালমনিরহাটের মিল মালিকরাও আন্দোলন করে। এ কারণে ওই মিলাররা খাদ্য অফিস ঘেরাও করে।


পরে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসকের আহবানে বৈঠক করে সমঝোতা হওয়ায় জেলা প্রশাসক তাদের আশ্বাস দেয়ায় মিল মালিকরা তাদের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে তারা বুধবার থেকে গোডাউনে চাল দেয়া শুরু করেছে।


নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক মিল মালিক জানান, খাদ্য বিভাগের কিছু কর্মকর্তার সাথে সম্পর্ক থাকায় টাকার বিনিময়ে অসাধু মিলাররা অবৈধ সুযোগ নিচ্ছেন।


জেলা মিল মালিক সমিতির সভাপতি শেখ আব্দুল হামিদ বাবু জানান, এ অভিযোগ সত্য নয়, তবে কেউ অনিয়ম করলে মিল সমিতি ব্যবস্থা নিবে।


লালমনিরহাট জেলা খাদ্য কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন জানান, কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জানান, ধান কেনায় দুর্নীতি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বিবার্তা/জিন্না/তাওহীদ/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com