শিরোনাম
জনবল সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
প্রকাশ : ২১ মে ২০১৯, ১৬:৫০
জনবল সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি জনবল সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত।


কমপ্লেক্সটিতে দু’টি ভবন নিয়ে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখানে নেই কোনো এক্সরে মেশিন, ইসিজিসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে রোগীদের।


একাধিক রোগী অভিযোগ করে বলেন, এসব কারণে ঝামেলা এড়াতে চিকিৎসকরা চ্যালেঞ্জ না নিয়ে রোগীদের পাঠিয়ে দেন কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ১৫ জন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের বিপরীতে বর্তমান আছেন মাত্র তিন জন এবং ১৭ জন সাধারণ চিকিৎসকের বিপরীতে আছেন চার জন। অত্র হাসপাতালে অভিজ্ঞ ও সাধারণ মিলে ২৭ জন চিকিৎসকের স্থলে বর্তমান মাত্র সাত জন চিকিৎসক রয়েছেন।


হাসপাতালটিতে ২০০৫ সালে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার অত্যাধুনিক মানের একটি এক্সরে মেশিন বরাদ্দ দেন। মেশিনটি আসার পর থেকে কয়েকদিনের মধ্যে যান্ত্রিক ক্রুটি দেখা দেয়। ফলে মেশিন স্থাপনের কিছুদিন পর থেকেই তা বিকল হয়ে পড়েছে। ইসিজি মেশিন, অপারেশন থিয়েটার, রোগী কল্যাণ সমিতিসহ রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য বেশ কিছু সরঞ্জামের একই অবস্থা।


সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহিলা ওয়ার্ডে মাত্র ৪ জন ও পুরুষ ওয়ার্ডে মাত্র ৫ জন রোগী চিকিৎসা নেয়ার জন্য কাতরাচ্ছেন।


হাসপাতালের রোগীদের অভিযোগ ২৪ ঘণ্টায় ডাক্তার আসে মাত্র ১ বার । এমনকি কখনো দুইদিন পর এক বার ডাক্তার আসে। আর প্যারাসিটামল ছাড়া বাহির হতে সব ধরনের ঔষধ কিনতে হয়। তাছাড়া আর কোনো ঔষধ সহজে মিলছে না হাসপাতালে।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভর্তিকৃত একাধিক রোগী জানান, দুর্ঘটনায় কবলিত রোগী, মাথা ফাটা, পেট ব্যথা, তিন দিনের বেশী জ্বর, ডেলিভারি, অর্শ্ব, পাইলস্, নাক কান ও চোখের সমস্যাসহ অপারেশন করতে হয় এমন রোগী এলেই সঙ্গে সঙ্গে পাঠিয়ে দেয় কুড়িগ্রাম ও রংপুর হাসপাতালে।


প্রতিদিন সকাল ৯ থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের চিকিৎসকের অফিসের সামনে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটিভদের অত্যাচারে রোগীরা বিপাকে পড়ে যায়। ডাক্তারের চেম্বার থেকে রোগীরা বের হলেই প্রায় এক ডজন রিপ্রেজেনটিভ তাকে ঘিরে ধরে মোবাইল দিয়ে প্রেসক্রিপশন (ব্যবস্থাপত্র) ছবি তোলা শুরু করেন।


হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা বলেন, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল সংকটে সেবা দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।


মেডিকেল অফিসার ডা. আতিকুর রহমান বলেন, প্রতিদিন আসলে তিন জন মেডিকেল অফিসারের পক্ষে সেবা দেয়া খুবই কষ্টকর।


এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ.এইচ.এম. বোরহান-উল-ইসলাম বলেন, হাসপাতালটিতে ১৫ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও বর্তমান রয়েছে মাত্র সাত জন। হাসপাতালটিতে বহির্বিভাগে প্রতিদিন আউটডোরে ৩০০/৪০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। পাশাপাশি ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন ৪০/৫০ জন রোগী। তাই সেবা দিতে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হয়।


কুড়িগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. এস এম আমিনুল ইসলাম বলেন, রাজারহাট হাসপাতালটির সমস্যা নিরসনকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। অতি শিগগিরই সমস্যাগুলোর সমাধান হবে বলে জানান তিনি।


বিবার্তা/সৌরভ/তাওহীদ/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com