শিরোনাম
জনবল সংকটে রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভোগান্তির শিকার রোগীরা
প্রকাশ : ১৯ মে ২০১৯, ০৯:১৬
জনবল সংকটে রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভোগান্তির শিকার রোগীরা
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নানা সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির চিকিৎসা কার্যক্রম। কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়িত।


হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সসহ জনবল সংকটে রয়েছে। ফলে সেবা নিতে আসা রোগীরা কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে জেলা সদর ও বিভাগীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায়।


রাজারহাট উপজেলা হাসপাতালটি ২০০৫ সালে জনসাধারণকে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার অত্যাধুনিক মানের একটি এক্সরে মেশিন বরাদ্দ দেন। মেশিনটি আসার পর থেকে কয়েকদিনের মধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। কর্তৃপক্ষ একাধিকবার মেশিনটি মেরামত করেও তা কাজে লাগেনি। ফলে মেশিন স্থাপনের পর থেকেই তা বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে।


ইসিজি মেশিনটির একই অবস্থা। এক মাস চালু থাকলেও বন্ধ থাকে ছয় মাস।


সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানায়, প্রায় ৩ লাখ জনসংখ্যার অধ্যুষিত রাজারহাট উপজেলাবাসীর চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসার স্থল ৫০শয্যা বিশিষ্ট এই সরকারি হাসপাতালটি। সরকারি সহায়তায় স্বল্প খরচে এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন উপজেলার ৭ ইউনিয়নের নানা বয়সী মানুষজন। কিন্তু মিলছে না কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা। চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকটে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।


৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ১৫ জন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের বিপরীতে বর্তমান আছেন মাত্র তিনজন এবং ১৭ জন সাধারণ চিকিৎসকের বিপরীতে বর্তমান আছেন চারজন। হাসপাতালে অভিজ্ঞ ও সাধারণ মিলে ২৭ জন চিকিৎসকের স্থলে বর্তমান মাত্র সাতজন চিকিৎসক রয়েছে।


শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহিলা ওয়ার্ডে মাত্র সাতজন ও পুরুষ ওয়ার্ডে মাত্র ১০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য কাতরাচ্ছেন।


চিকিৎসারত রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, ২৪ ঘন্টায় ডাক্তার মাত্র একবার ঘুরে যায়। এমনকি কখনো দুইদিন পর একবার ডাক্তার আসে। আর বাইরে থেকে সব ধরনের ওষুধ কিনতে হয়। এখানে সব ধরনের রোগের জন্য একটাই ওষুধ ফ্রি মিলে সেটি হল প্যারাসিটামল ট্যাবলেট। তাছাড়া আর কোনো ওষুধ সহজে মিলছে না এই হাসপাতালে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভর্তিকৃত একাধিক রোগী জানান, ছোট-খাটো একটু সমস্যা দেখা দিলেই কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সঙ্গে সঙ্গেই ওই রোগীকে স্থানান্তর করে দেন অন্য হাসপাতালে।


অপরদিকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের চিকিৎসকের অফিসের সামনে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটিভদের অত্যাচারে রোগী ও রোগীর সঙ্গে আসা আপনজনরা বিরক্তিকর অবস্থায় পড়ে যান।


হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকরা জানান, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল সংকটে সেবা দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।


হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আতিকুর রহমান বলেন, প্রতিদিন আসলে তিনজন মেডিকেল অফিসারের পক্ষে সেবা দেয়া খুবই কষ্টকর।


এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. এ.এইচ.এম. বোরহান-উল-ইসলাম বলেন, হাসপাতালটিতে ১৫ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও সেখানে বর্তমান রয়েছে মাত্র সাতজন। হাসপাতালটিতে বর্হিবিভাগে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০০/৪০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। পাশাপাশি ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন ৪০/৫০ জন রোগী। তাই সেবা দিতে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হয়।


কুড়িগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. এস.এম .আমিনুল ইসলাম বলেন, রাজারহাট হাসপাতালটির সমস্যা নিরসনকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আশা করছি অতি শিগগিরই সমস্যাগুলোর সমাধান হবে।


বিবার্তা/লিমন/তাওহীদ/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com