টাঙ্গাইলের জুড়ে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধানের ছত্রাকজনিত রোগ ব্লাস্টের সংক্রমণ, শ্রমিক সংকট ও ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় ৪ মে ঘুর্ণিঝড় ফণিরিআঘাতে মাঠের ধান সব মাটিতে শুয়ে পড়েছে। আবার নিচু জমিতে পানি থাকায় ধানের আরো বেশি ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে মৌসুমের শুরুতেই ধানের বাজারে ধস নামায় হতাশ চাষীরা। চরা দামে বীজ, সার, কীটনাশক ও মজুর দিয়ে ধান চাষ করে কাটার পর কৃষক তাদের ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। ফলনে খুশি হলেও বিক্রি করতে গিয়ে চাষীদের মাথায় যেন হাত পড়েছে।
বর্তমানে বাজারে ধানের দাম প্রকার ভেদে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যদিকে একজন ধানকাটা শ্রমিককে মজুরি দিতে হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা। বাজারে পাইকার না থাকায় ধান কেনাবেচা তেমন হচ্ছে না। ফলে উৎপাদন খরচ উঠছে না বলে কৃষকদের অভিযোগ।
সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের পলাশ হোসেন, আয়েন উদ্দীন, সিরাজুল ইসলাম, নলুয়া গ্রামের জাফর, সানোয়ার হোসেন, জিয়ার রহমান, রমজান আলীসহ অনেক কৃষক বলেন, বাজারে ধানের দাম নেই, অন্য দিকে শ্রমিক না পাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছি আমরা। এক বিঘা জমিতে পানি, সার, আরো অন্যান্য খরচ দিয়ে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়।
তারা বলেন, সরকার যদি ধানের দাম না বাড়ায় তাহলে কৃষকদের লোকসান গুনতে হবে।
কয়েকজন শ্রমিকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, ধান কাটা-মারার সিজনে আমাদের কামায় রোজগার করার সময়। তাছাড়া যে জমিতে ধান গাছ ঝড়ে পরে গেছে এগুলা কাটাও সমস্যা।
সখীপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। রোপণের কিছুদিন পরেই কিছু ক্ষেতে ব্লাস্টের সংক্রমণ দেখা দেয়। এ পর্যন্ত উপজেলা তিনটি ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক একর জমি ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে।
কৃষি অফিস এ রোগে আক্রান্ত এলাকায় ব্যাপক প্রচারসহ কৃষকদের নানা পরামর্শ দিয়েছে। কৃষক পাঁকা ধান কেটে ঘরে তুলবে ঠিক তার আগ মুহুর্তে এসে ওই ফসলে ব্লাস্টের আক্রমণে কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।
ধানের শীষ বের হওয়ার তিন-চারদিন পরই শীষগুলো মরে গেছে। ধানের পেটে কোনো চাল নেই। দেখলে মনে হয় ধানগুলো পেকে গেছে। কাছে গিয়ে দেখা যায় শীষের সবক’টি ধানই চিটে। এতে কোনো চাল নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, বোরো মৌসুমে একযোগে ধান কাটা শুরু হওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দেয়। ধানে ব্লাস্টের সংক্রমণ, ধানের বাজার কম ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় কৃষকদের এবার লাভ তো দূরের কথা লোকসানের কবলে পড়তে হবে।
বিবার্তা/তোফাজ্জল/মেহেদী/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]