শিরোনাম
কুয়াকাটায় শুঁটকি উৎপাদনের ধুম
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬, ২১:২১
কুয়াকাটায় শুঁটকি উৎপাদনের ধুম
কলাপাড়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

শীতের শুরু মানেই সুস্বাদু শুঁটকি উৎপাদনের মৌসুম শুরু। আর মৌসুমের শুরুতেই পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলাসহ কুয়াকাটার জেলেদের মধ্যে শুঁটকি উৎপাদনের ধুম লেগেছে।


আর তাই নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ শুঁটকি প্রক্রিয়ার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। এখানাকার জেলে ও শুঁটকি ব্যবসায়ীরা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে এ শুঁটকি বিদেশে রফতানি করে প্রচুর রাজস্ব অর্জন করেন।


সরেজমিন দেখা গেছে, কুয়াকাটার সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন খাজুরা, লেম্বুচর, গোড়াখাল, কোমড়পুর, নিজামপুর, গঙ্গামতি, কাউয়ারচর, ধোলাই মার্কেট, চর ধুরাসার বাবলাতলা ডোসসহ অর্ধশতাধিক স্থানে এখন চলছে পুরোদমে শুঁটকি উৎপাদনের কাজ। সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছ প্রাকৃতিক উপায় শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ কাজে শত শত জেলেরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী ও ভোলা জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা শুঁটকি ক্রয় করার জন্য সাগর পাড়ের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট টঙঘর তুলে আড়ৎ খুলে বসেছে। এ দিকে জেলেরা সাগরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাটাই বিছিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে শুঁটকি করছেন।



বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী ও ভোলা জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে প্রথমে শুঁটকি তৈরির কাজ শুরু করেন। ব্যবসায়ীরা ভরা মওসুমে এ মাছ বড় সাম্পানযোগে চট্টগ্রাম বন্দরে চালান করত। পাশাপাশি স্থানীয়রাও শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ হাতেকলমে শিখতে থাকেন। সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত এবং সুষ্ঠুমান নিশ্চিত থাকায় অল্প সময়ের মধ্যে দেশ-বিদেশে এ অঞ্চলের শুঁটকির কদর বেড়ে যায়। কুয়াকাটা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক স্পটে প্রতি শুষ্ক মওসুমে সামুদ্রিক নানা প্রজাতির মাছ রোদে শুকিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহের পাশাপাশি এশিয়া ও ইউরোপের কয়েকটি দেশে রফতানি করে কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন ব্যবসায়ীরা। কুয়াকাটায় নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত শুঁটকি ব্যবসা জমজমাট থাকে। এ ব্যবসার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সহস্রাধিক ব্যবসায়ীসহ পাঁচ সহস্রাধিক নারী-পুরুষ শ্রমিক শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণে নিয়োজিত রয়েছেন।


শুঁটকির মধ্যে কয়েক প্রজাতির হাঙ্গর, ভোল, মেদ, পোয়া, সোনাপাতা, মধুফাইস্যা, রূপচাঁদা, পোটকা, শাপলাপাতা এবং ছোট মাছের মধ্যে চাপিলা, ফাইস্যা, লইট্টা, চিংড়ি ও ছুড়ি উল্লেখযোগ্য। বড় মাছ রোদে শুকাতে ১০-১২ দিন সময় লাগে। শুঁটকি পণ্য দেশ ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয়ভাবে এ অঞ্চলে এখনো শুঁটকি শিল্প গড়ে ওঠেনি। ফলে অপরিকল্পিতভাবে মাচন আর সনাতন পদ্ধতিতে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ করছেন ব্যবসায়ীরা।


শুঁটকি ব্যবসায়ী মো. ইউসুফ মিয়া বলেন, দফায় দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার ও উচ্ছেদ হওয়া এ ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করা অত্যন্ত জরুরি।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকতা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, সম্ভাবনাময় এ শুঁটকি শিল্পকে সঠিক ব্যবস্থাপনায় আনতে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। মানসম্পন্ন শুঁটকি উৎপাদনের জন্য জেলায় ইতিমধ্যে ২৮০ জন জেলেকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।


বিবার্তা/উত্তম/নাজিম

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com