ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে পুড়িয়ে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার ঘটনায় করা মামলার এজাহারভুক্ত আট আসামিকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলার এজাহারভুক্ত সাত নম্বর আসামি হাফেজ আবদুল কাদেরকে ঢাকার মিরপুর থেকে বুধবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ আলম বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য জানিছেন।
কাদের সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার অনুগত হিসেবে মাদ্রাসার হোস্টেলে থাকতো আবদুল কাদের।
৫ এপ্রিল আবদুল কাদেরের কক্ষে বসে হত্যাকারীরা নুসরাত হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যাকাণ্ডের দিন, অর্থাৎ ৬ এপ্রিল কাদেরের দায়িত্ব ছিল অন্যদের সঙ্গে মাদ্রাসার গেট পাহারা দেয়া। এ বিষয়টি মামলার অন্যতম প্রধান দুই আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদত হোসেন ওরফে শামীমের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানা গেছে।
পিবিআই তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, কাদেরকে নিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত আট আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পিবিআই। এছাড়া এই ঘটনার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আরো ১০ জন গ্রেফতার রয়েছে। তারা ফেনী কারাগারে রয়েছে। তাদের মধ্যে শামীম ও নুর উদ্দিন দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৮ জন গ্রেফতার হয়েছে। তারা হলো- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মোহাম্মদ শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ ও হাফেজ আবদুল কাদের।
নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করে সে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেয়া হচ্ছিল।
৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন দেয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যায়।
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]