শিরোনাম
এতিমখানায় ফেরত এসেছে সেই তিন কিশোরী
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০১৯, ১২:১৫
এতিমখানায় ফেরত এসেছে সেই তিন কিশোরী
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বিষাক্ত ফিনাইল পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করার আলোচিত সেই তিন কিশোরী স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসের দিন সকালে আবার আল-নাহিয়ান শিশু পরিবারে (এতিমখানার) ফিরে এসেছে। তারা ১৩ দিন ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ছিল।


তিন কিশোরী ছাত্রীর আল-নাহিয়ান শিশু পরিবারে ফিরে আসার বিষয়টি সোমবার গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ।


গত ৫ মার্চ সকালে ওই তিন কিশোরী শিশু পরিবারের ভেতরে শৌচাগার পরিষ্কারের কাজে ব্যবহৃত বিষাক্ত ফিনাইল পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাদের উদ্ধার করে শিশু পরিবার কর্তৃপক্ষ প্রথমে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সে সময় শিশু পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনার জন্য তাদের নিজেদের মধ্যকার ঝগড়ার কথা বলা হয়েছিল।


এ ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল-মাহমুদ ফায়জুল কবীর (জেলা ও দায়রা জজ) লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর ২০ মার্চ ‘লালমনিরহাটে ৩ কিশোরীর আত্মহত্যার চেষ্টা’ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর অনুরোধ করেন।


জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ ২৫ মার্চ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বরাবর এ-সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।


ওই ঘটনার পর জেলা প্রশাসক ঘটনার কারণ ও প্রতিকার নির্ণয়ের জন্য লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়শ্রী রানী রায়কে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তিন কিশোরী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে আল-নাহিয়ান শিশু পরিবারে ১২ মার্চ ফেরে। ওই দিন ঘটনা তদন্ত কর্মকর্তা ইউএনও’র নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যরা তিন কিশোরীসহ অন্যান্যদের লিখিত সাক্ষ্য ও বক্তব্য গ্রহণ করেন। এরপর ওই তিন কিশোরী ১৪ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত ছুটিতে তাদের বাড়িতে অবস্থান করে।


শফিউল আরিফ তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেন, ওই তিন কিশোরী শিশু পরিবারে অবস্থানকালে বাইরের লোকজনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলা ছাড়াও পড়াশোনা বাদ দিয়ে খেলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এ সময় তারা বহিরাগত ছেলেদের সঙ্গে প্রেমঘটিত সম্পর্কে জড়ায়। বিষয়টি শিশু পরিবারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নজরে এলে তাদেরকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়। সাবধান না হলে তাদের নাম কেটে বের করে দেয়ার ভয় দেখানো হয়। এ কারণে তারা একে অন্যকে দায়ী করে ফিনাইল পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।


অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি তাদের সুপারিশে ১০টি দিক নির্দেশনা প্রদান করেছে। এর মধ্যে সার্বিক নিরাপত্তা, সুরক্ষা নিশ্চিত করা, নিয়মিত সবকিছু মনিটরিং করা, বহিরাগত ও মোবাইল ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশে তিন কিশোরীকে শিশু পরিবার থেকে অব্যাহতি দেয়ার কথা বলা হলেও মানবিক কারণে তা করা হয়নি। এরা আগের মতোই এখানে থেকে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারবে।


ওই তিন কিশোরীর একজন স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। তারা বলেছে, আমরা ভুল করেছিলাম, আমাদের সংশোধনের সুযোগ দিয়ে এখানে আবারো থাকার সুবিধা বহাল রাখা হয়েছে।


বিবার্তা/জিন্না/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com