শিরোনাম
‘কুমুদিনী ট্রাস্টের জন্য আমার দরজা সব সময় খোলা’
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০১৯, ১৪:৪১
‘কুমুদিনী ট্রাস্টের জন্য আমার দরজা সব সময় খোলা’
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কুমুদিনী ট্রাস্টের জন্য আমার দরজা সব সময় খোলা। কারণ কুমুদিনী ট্রাস্ট্রের মাধ্যমে অনেক কাজ করা হচ্ছে। জনগণের সেবায় সবসময় আমাদের সহযোগিতা থাকবে।


তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, বাবা বলেছিলেন আমাকে এই স্কুলে ভর্তি করে দেবেন। তবে হোস্টেলে রেখে পড়ানো আমার মায়ের খুব একটা মনোপুত ছিল না।


টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় কুমুদিনী কমপ্লেক্সে কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অব বেঙ্গল (বিডি) আয়োজিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বৃহস্পতিবার দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এছাড়া কুমুদিনী হাসপাতাল ও ভারতেশ্বরী হোমস পরিদর্শন করেন তিনি।


বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে মির্জাপুরের কুমুদিনী কমপ্লেক্সে পৌঁছান শেখ হাসিনা। ছোট বোন শেখ রেহানাও তার সঙ্গে রয়েছেন। কুমুদিনী কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে পৌঁছেই প্রধানমন্ত্রী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের আনুষ্ঠানিকতা সারেন।


অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে একবার এসেছিলাম, সেটা ৫৬ বা ৫৭ সালে। আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাসহ সবাই এসেছিলেন। দীর্ঘ সময় এখানে ছিলেন। এই স্কুলটা, হাসপাতাল সব ঘুরে ঘুরে দেখেছেন তারা। খুব ছায়ার মতো আমার এইটুকু স্মৃতি মনে আছে। তবে মনে আছে এই জায়গা এতো সুন্দর দেখে বাবা বলেছিলেন আমাকে এই স্কুলে ভর্তি করে দেবেন। তবে হোস্টেলে রেখে পড়ানো আমার মায়ের খুব একটা মনোপুত ছিল না।



তিনি বলেন, তাছাড়া এরপর ৫৮ সালে মার্শাল ল হয়। আমার বাবাকে জেলে নিয়ে যায়। আমাদের পড়াশোনা এমনিতেই বন্ধ। পরে আর আসা হয়নি। তবে ৮১ সালে দেশে ফেরার পর আমি অনেকবারই এসেছি। আর এখানে আসতে পেরে আজ সত্যি নিজেকে ধন্য মনে করছি।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল, মা বোনদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছিল, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছিল, সেই একাত্তর সালেই ৭ মে হানাদাররা নারায়ণগঞ্জের কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট থেকে দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ও তার একমাত্র পুত্র ভবানী প্রসাদ সাহাকে ধরে নিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলে। তাদের পরিবার আর কখনোই তাদের ফিরে পায়নি। স্বজন হারানোর বেদনা যে কত কঠিন, এই বেদনা যে কত যন্ত্রণাদায়ক সেটা আমরা বুঝতে পারি।


দারবীর রণদা প্রসাদ সাহা সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি এক হাতে অর্থ উপার্জন করেতেন, আরেক হাতে বিলিয়ে দিতেন। মেয়েদের শিক্ষায়, চিকিৎসায় তিনি অর্থদান করেছেন। মানুষকে মানুষের মতো বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন।


শেখ হাসিনা বলেন, স্বজন হারানোর বেদনা নিয়েই আমার যাত্রা শুরু। একটাই আলো ছিল, জনগণের ভালোবাসা। সেটা নিয়েই কাজ করেছি। মনে রেখেছি বাবা কী করতে চেয়েছিলেন। মনে রেখেছি তার কাজের একটুকুও যদি আমি করতে পারি সেটাই হবে আমার বড় সাফল্য।


কুমুদিনী ট্রাস্টের পরিচালক ভাষা সৈনিক প্রতিভা মুৎসুদ্দি, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ জলিল, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম, ভারতেশ্বরী হোমসের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।


এ বছর যে চার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা স্বর্ণ পদক দেয়া হলো তারা হলেন- পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (মরণোত্তর), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), নজরুল গবেষক প্রফেসর রফিকুল ইসলাম ও বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী শাহবুদ্দীন আহমেদ। সোহরাওয়ার্দীর পক্ষে বঙ্গবন্দু কন্যা শেখ রেহেনা এবং জাতীয় কবির পক্ষে কবির নাতনি খিলখিল কাজী প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন।


প্রধানমন্ত্রী জানান, হোসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ছেলে রাশেদ সোহরাওয়াদী পুরস্কার নিতে লন্ডন থেকে বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। তবে তিনি কিছুদিন আগে মৃত্যুবরণ করেন। তাই শেখ রেহানা তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন।


কুমুদিনী পরিবার ২০১৫ সালে রণদা প্রসাদ স্বর্ণপদক প্রবর্তন করে। প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যে ভারতেশ্বরী হোমসের শিক্ষার্থীরা ডিসপ্লে ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রদর্শন করে।


বিকেলে একই স্থানে তিনি জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। সফর শেষে বিকাল ৩টার দিকে প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর উদ্দেশে রওনা হবেন।


বিবার্তা/জাকিয়া


>>প্রধানমন্ত্রীর আপ্যায়ন হবে কাঁসার প্লেটে ৩৩ রকমের খাবার দিয়ে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com