শিরোনাম
সুন্দরবনে গত সপ্তাহে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৭
বনদস্যুরা তৎপর
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০১৯, ২০:৩৭
সুন্দরবনে গত সপ্তাহে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৭
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

সুন্দরবনে আবারো বনদস্যুরা সংগঠিত হচ্ছে। মুক্তিপণ আদায়ে জেলেদের ওপর বেড়েছে অত্যাচার-নির্যাতন। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সাতজন বনদস্যু নিহত ও একজন গ্রেফতার হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।


জেলেরা জানান, সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার পর বনজীবীরা কিছুদিন নির্ভয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পেরেছেন। তবে এখন সুন্দরবনের সাতক্ষীরা, খুলনা ও চাঁদপাই রেঞ্জের কিছু এলাকায় ছোট ছোট কয়েকটি দস্যু বাহিনীর আবির্ভাব হয়েছে। ফের শুরু হয়েছে বনজীবীদের জিম্মি ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা। নতুন দস্যু বাহিনীগুলোর সন্ধানে সুন্দরবনে অভিযান পরিচালনা করছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) ও কোস্টগার্ড। এরই অংশ হিসেবে গত এক সপ্তাহে পৃথক অভিযানে সাত বনদস্যু নিহত হয়েছেন।


বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিয়া খালে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বনদস্যু সাহেব আলী বাহিনীর প্রধান সাহেব আলী গাজী (৩৫) ও তার সহযোগী হাবিবুর রহমান ঢালী (২৮) নিহত হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুটি একনলা বন্দুক, একটি পাইপগান, ৩২ রাউন্ড গুলি ও সাতটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।


গত ২৫ ফেব্রুয়ারি চাঁদপাই রেঞ্জে র‌্যাব-৮ এর সাথে ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ বনদস্যু আরিফ বাহিনীর প্রধানসহ চারজন নিহত হন। জোংড়া খালের এ ঘটনায় নিহতরা হলো আব্দুল আউয়ালের ছেলে মো. আলিম ওরফে আরিফ, আফজাল হাওলাদারের ছেলে রাজু, আলতাফ হাওলাদারের ছেলে সোহেল ও রুবেল।


এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগের দাকোপ অঞ্চলে কোস্টগার্ডের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আছাবুর বাহিনীর এক সদস্য নিহত হন। ঘটনাস্থল থেকে চারটি একনলা বন্দুক ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। একই দিনে র‌্যাব-৬ কয়রার বাড়ইখালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে কামরুল ইসলাম মোড়ল নামে এক বনদস্যুকে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে একটি পাইপগান ও সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।


সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালরা জানান, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ছোট কয়েকটি দস্যু বাহিনী সংগঠিত হয়েছে। তারা জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। কয়রা উপজেলার ৫নং কয়রার বাসিন্দা নূর আলী গাজীর ছেলে হাবিবুল্লাহ গাজী নানা ভাই বাহিনীর হয়ে জেলেদের মাঝে টোকেন বিতরণ করছেন। প্রতি গোণের (অমাবস্যা ও পূর্ণিমার সময়) জন্য তার কাছ থেকে জেলেদের টোকেন নেয়া লাগে বলে একাধিক জেলে জানিয়েছেন। তাদের দাবি, হাবিবুল্লাহর টোকেন না নিয়ে সুন্দরবনে গেলে কেউ মাছ শিকার করতে পারেন না।


উল্লেখ্য, সুন্দরবনসহ বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকার বনদস্যু ও জলদস্যুদের দমনে র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি ও বন বিভাগের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স রয়েছে। তাদের তৎপরতায় ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত ৩২টি বাহিনীর ৩২৮ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করে। এ সময় তারা ৪৬২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদ জমা দেয়।


বিবার্তা/সেলিম/আকবর

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com