চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া গাজী মাঈনুদ্দিনের বাবা গিয়াস উদ্দিন গাজীর বিরুদ্ধে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ, মাঈনুদ্দিনের বাবা সরাসরি মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
মাঈনুদ্দিন হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এখন প্রশ্ন উঠেছে, রাজাকারের সন্তান হয়েও কীভাবে সে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর রাজাকারদের নামের তালিকা জমা দেয় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল। তালিকায় গিয়াস উদ্দিন গাজীর নাম নয় নম্বরে রয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মো. মজিবুর রহমান মজুমদারকে জিম্মি করে জোরপূর্বক সাদা কাগজে সই নিয়েছিলেন গিয়াস উদ্দিন গাজীর ছেলে গাজী মো. মাঈনুদ্দিন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাজীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন মজিবুর রহমান মজুমদার।
পরে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধকালীন কমান্ডার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার।
সংবাদ সম্মেলনে দেয়া তথ্য ও থানার অভিযোগপত্রে লিখিত বক্তব্যে মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী মাঈনুদ্দিনের বাবা গাজী গিয়াস উদ্দিন রাজাকার ছিলেন বলে কে বা কারা বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারণা চালায়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য গাজী মাঈনুদ্দিন আমাকে মোবাইল দিয়ে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ গাউছিয়া হোটেলে যেতে বলেন। আমি তখন হাজীগঞ্জ স্টেশন রোডের দক্ষিণ মাথায় মেন্দু মিয়ার চায়ের দোকানে বসে ছিলাম।
তিনি বলেন, গাজী মাঈনুদ্দিনের ফোন পেয়ে আমি সেখানে যাই। পরে গাজী মাঈনুদ্দিন ও তার দলের ২০/২৫ জন নেতাকর্মী একটি লিখিত কাগজে আমায় সই দিতে বলেন। আমি রাজি না হওয়ায় আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। তিন ঘণ্টা আটকে রেখে তারা আমার সই নেয়। পরে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশকে জানাই এবং একটি সাধারণ ডায়েরি করি।
মজিবুর রহমান মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তারা জোরপূর্বক ধরে নিয়ে আমাকে নির্যাতন করেছে এবং সাদা কাগজে সই নিয়েছে। তাই সাধারণ ডায়েরি করেছি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাঈনুদ্দিন বলেন, বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি পক্ষ। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই এ কাজ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপির সুদক্ষ কর্মী হিসেবে রাজনীতি করছি। আর এখান থেকে আমাকে বিচলিত করতে একটি মহল আমার পেছনে লেগেছে। আমাকে কিভাবে হেয় করা যায় এসব পরিকল্পনা মাথায় রেখে এখন কিছু কুচক্রী মহল মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, অভিযোগটি খুবই মারাত্মক। এটা যদি সত্যি হয় তাহলে ভোটের মাঠে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছি।
মনোনয়নের ব্যাপারে জানতে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র নাসির উদ্দিন ভূঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিবার্তা/মাইকেল/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]