শিরোনাম
ইয়াবাকারবারিদের আত্মসমর্পণ: সাড়ে তিন লাখ ইয়াবা ও ৩০ অস্ত্র জমা
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৩:৫২
ইয়াবাকারবারিদের আত্মসমর্পণ: সাড়ে তিন লাখ ইয়াবা ও ৩০ অস্ত্র জমা
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

আত্মসমর্পণ করেছেন টেকনাফের ১০২ জন ইয়াবাকারবারি।


শনিবার দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের মঞ্চে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে তারা আত্মসমর্পণ করেন। তারা এসময় ৩ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা ও ৩০টি দেশীয় পিস্তল জমা দেন। এ সময় আত্মসমর্পকারীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।


এর আড়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘সেফহোম’ থেকে শীর্ষ ইয়াবাকারবারিদের কক্সবাজারের টেকনাফে আত্মসমর্পণ মঞ্চে আনা হয়। মঞ্চের কাছে একটি দোতলা ভবনে তাদের রাখা হয়। আত্মসমর্পণকারীদের দেখতে তাদের স্বজন ও এলাকার হাজারো মানুষ ভিড় জমান। তালিকাভুক্ত কয়েকজন ইয়াবা কারবারিকেও অনুষ্ঠানস্থলে দর্শক হিসেবে কাছে দেখা গেছে।


পৌনে ১১টায় আত্মসমর্পণ অনুষ্টানে উপস্থিত হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন ও টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ আইনৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জেলার তিন সংসদ সদস্যও ছিলেন সেখানে।


পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আত্মসমর্পণকারী ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর মধ্যে অন্তত ৩৫ জন গডফাদার রয়েছেন। আত্মসমর্পণকৃতদের বিরুদ্ধে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের মামলা হবে জানা গেছে।


আত্মসমর্পণের পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন দুই শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী। তারা হলেন- টেকনাফ সদরের ইউপি সদস্য বহুল আলোচিত এনামুল হক ও মো. সিরাজ।


প্রতিক্রিয়ায় তারা বলেন- ইয়াবা পুরো দেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এতে দেশের নতুন প্রজন্মর চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এই অপরাধে আমরা দায়ী। অন্যদিকে ইয়াবা ব্যবসার কারণে টেকনাফসহ পুরো কক্সবাজার জেলার মানুষ সারাদেশের মানুষের কাছে ছোট হয়ে আছে। যেখানে যাই টেকনাফের মানুষ পরিচয় দিলেও আমাদের ঘৃণা করা হয়। এমনকি কোথাও হোটেল ও বাসা ভাড়া নিতে গেলে আমাদের দেয়া হয় না। আমাদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করাতে গেলে ভর্তি করা হয় না। এটা বড়ই কষ্টের এবং লজ্জার। এসব কিছু বুঝতে পেরে আমরা দেশকে ইয়াবার আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছি। যারা এখনো আত্মসমর্পণ করেনি তাদেরও আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমাদেরকে ক্ষমা করে স্বাভাবিক জীবনের ফেরা সুযোগ দেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আকুতি জানাচ্ছি।


তারা আরও বলেন, বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব ও কোস্টগার্ড যৌথভাবে কাজ করলে ইয়াবার আগ্রাসন বন্ধ হয়ে যাবে। সীমান্তে যৌথভাবে টহল দেয়া হলে কোনোভাবেই ইয়াবা বাংলাদেশে ঢুকতে পারবে না।


কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পুলিশের চট্টগ্রাম রেন্ঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন অ্যান্ড ক্রাইম) মোহাম্মদ আবুল ফয়েজ, কক্সবাজার জেলার চারটি আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম, আলহাজ আশেকউল্লাহ রফিক, আলহাজ সাইমুম সরওয়ার কমল, শাহীন আক্তার চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/মানিক/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com